বাংলারজমিন

মা-মেয়ের পর চলে গেল ছেলেও

স্টাফ রিপোর্টার, মানিকগঞ্জ থেকে

৯ নভেম্বর ২০১৯, শনিবার, ৬:৩৬ পূর্বাহ্ন

মা আসমা বেগম ও মেয়ে সুমাইয়ার পর এবার অজনা দেশে পাড়ি জমালো অগ্নিদগ্ধ ছেলে আরিফও। চোখের সামনে স্ত্রী, মেয়ে ও ছেলেসহ তিনটি তাজা প্রাণ অকালে ঝরে যাওয়ায় সারা জীবনের কান্না হয়ে রইলো মুন্নু ফেব্রিক্সের অফিসার (ইলেকট্রিক্যাল) ইব্রাহিম মিয়ার।  শোকে পাথর হয়ে গেছেন এই মানুষটি। তাকে সান্ত্বনা দেয়ার মতো ভাষা কারো জানা নেই। বুধবার ভোরে মা-মেয়ের মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই বৃহস্পতিবার রাতে অগ্নিদগ্ধ ছেলে আরিফ মিয়াও (১৫) চলে গেলেন মা ও বোনের ঠিকানায়। গতকাল সকাল ১০টার দিকে মা ও বোনের কবরের পাশে আরিফকে সমাহিত করা হয়েছে। মা, মেয়ে ও সর্বশেষ ছেলের এমন করুণ মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মুন্নু গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান আফরোজা খান রিতা।
জানা গেছে, মুন্নু ফেব্রিক্স লিমিটেডের অফিসার (ইলেকট্রিক্যাল) ইব্রাহিম মিয়া চাকরির সুবাদে দীর্ঘদিন ধরে মানিকগঞ্জের গিলন্ড এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। গত শনিবার রাতে স্ত্রী আসমা বেগম (৫০), ছেলে আরিফ (১৫) ও মেয়ে সুমাইয়া (৭) নিজের কক্ষে অগ্নিদগ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। ওই দিনই তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। মা ও মেয়ের শরীরের ৯০ ভাগ এবং ছেলের ৬০ ভাগ  আগুনে ঝলসে যায়। ঘটনার চারদিন পর বুধবার খুব ভোরে ঠিক আধা ঘণ্টার ব্যবধানে মারা যায় মা আসমা বেগম ও মেয়ে সুমাইয়া। ওই দিন বিকালে মা-মেয়ের মরদেহ মানিকগঞ্জের গিলন্ড এলাকায় জানাজা শেষে দাফন করা হয়।
তখন ছেলে আরিফ হাসপাতালের বেডে শুয়ে জীবন মৃত্যুর সঙ্গে সংগ্রাম করে যাচ্ছিল। কিন্তু খুব বেশি সময় টিকে থাকতে পারেনি। মা ও আদরের ছোট বোনের মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই আরিফ পারি জমায় মা ও বোনের ঠিকানায়। বুধবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে মারা যায়। এদিকে, গতকাল সকালে আরিফের মরদেহ আনা হয় মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গিলন্ড এলাকায়। মা ও মেয়েকে শেষবারের মতো দেখতে যেমন গিলন্ড মাঠে নারী-পুরুষের ঢল নেমেছিল ঠিক ছেলে আরিফকে দেখতে মানুষের স্রোত নামে সেখানেই। সকালে জানাজা শেষে মা ও ছোট বোনের কবরের পাশেই সমাহিত করা হয় আরিফকে। এ সময় বাকরুদ্ধ পিতা ইব্রাহিম মিয়াকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।

আরিফ মিয়া স্থানীয় জয় নগর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্র। এ ছাড়া নিহত সুমাইয়া তরা প্রভাতি কিন্ডার গার্টেনের ১ম শ্রেণিতে পড়তো।  আর মা আসমা বেগম ছিলেন গৃহিণী।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status