প্রথম পাতা

আবরার হত্যা

সেই বড় ভাই কারা

স্টাফ রিপোর্টার

১৭ অক্টোবর ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৯:৪৪ পূর্বাহ্ন

বুয়েট ছাত্রলীগ নেতাদের সংঘবদ্ধ পিটুনিতে মৃত্যু হয় শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের। ৬ই অক্টোবর রাত  আটটার পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত শের ই বাংলা হলের ২০১১নম্বর কক্ষে চলে আবরারের ওপর নির্মম নির্যাতন। ঘটনার পর সিসি টিভি ফুটেজ দেখে জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ১৯ জনকে আসামি করা হলেও পরে প্রমাণ পেয়ে গ্রেপ্তার করা হয় শাখা ছাত্রলীগ নেতা অমিত সাহাকে। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক ও রিমান্ড জিজ্ঞাসাবাদে শিক্ষার্থীরা আবরারকে পিটিয়ে হত্যার বর্ণনা দিয়েছেন। নিজেরা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। একইসঙ্গে তারা বলেছেন ছাত্রলীগের বড় ভাইদের নির্দেশে তারা আবরারের ওপর নির্যাতন চালান। তারা বলেন, বুয়েটে এটা প্রথা হয়ে গেছে, বড় ভাইরা নির্দেশ দেন। জুনিয়ররা তা পালন করেন। আবরার হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের আশ্বাস দেয়া হয়েছে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং তদন্ত কাজ এগিয়ে নিচ্ছে। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যাদের নির্দেশে আবরারকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে সেই বড় ভাইদের কী তদন্তের আওতায় আনা হবে? সেই নির্দেশদাতা কারা এটিও প্রকাশ্যে আনার দাবি উঠেছে।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলার অন্যতম আসামি মনিরুজ্জামান মনির আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে নির্দেশদাতা বড় ভাইদের কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ১৫ ব্যাচের বড় ভাইদের নির্দেশে আবরারকে ডাকা হয়েছিল। ২০১১ নম্বর রুমে নেয়ার পর তাকে জেরা করা হয়। ওই সময়ে অনিক ও সকাল আবরারকে অনেক মারধর করে। মনির নিজেও আবরারকে চড় থাপ্পর দিয়েছেন বলে স্বীকার করেন। এদিকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত অমিত সাহা আদালতে উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, বুয়েটের ট্র্যাডিশনই হচ্ছে উপরের (সিনিয়রদের) অর্ডার আসলে তা মানা ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আরেক আসামি মেহেদী হাসান রবিন বলেন, বড় ভাইয়ের নির্দেশ মেনে আবরারকে সেই রাতে বেদম প্রহার করি। বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৫তম ব্যাচের ছাত্র রবিন বুয়েট ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তিনিই প্রথম আবরারকে আঘাত করেন। এদিকে গ্রেপ্তার আরেক শিক্ষার্থী এ এস এম নাজমুস সাদাতকে গতকাল আদালতের মাধ্যমে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

আদালতে নেয়া হলে সাদাত সাংবাদিকদের জানান, আবরারকে অনিক সরকার, সকাল, মোজাহিদ ও মনিরসহ ১৫ ও ১৬ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বেশি মারছে। আবরার পানি খাইতে চাইলে পানি দেয়া হয়নি। আমরা ভাইদের বলেছিলাম হাসপাতালে নিয়ে যেতে। তারা নিয়ে যেতে দেয়নি। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে নাজমুস সাদাতকে আদালতে হাজির করেন। বিচারক মোর্শেদ আল মামুন ভূইয়া শুনানি শেষে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মঙ্গলবার দিনাজপুর জেলার বিরামপুর থানার কাঠলাবাজার এলাকা থেকে রাত সাড়ে ৩টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের ১৭তম ব্যাচের এই শিক্ষার্থী জয়পুরহাটের কালাই থানার কালাই উত্তরপাড়ার হাফিজুর রহমানের ছেলে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status