বিশ্বজমিন

ওড়িশায় ৫০ হাজার বাংলাভাষীকে নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ার রিপোর্ট

মানবজমিন ডেস্ক

১৬ অক্টোবর ২০১৯, বুধবার, ১০:২৬ পূর্বাহ্ন

ভারতের জাতীয় গোয়েন্দা এজেন্সি এনআইএ’র মহাপরিচালক যোগেশ চন্দর মোদির জেএমবি বিষয়ক সতর্কতার পর ভারতে আবার আলোচনায় উঠে এসেছে তথাকথিত অবৈধ বাংলাদেশী ইস্যু। বিশেষ করে ওড়িশা রাজ্যে বসবাসকারী বাংলাভাষীদের দিকে দৃষ্টি পড়েছে। ওই রাজ্যের বালাসুর, কেন্দাপাড়া ও জগতসিংহপুরে বসবাস করে কমপক্ষে ৫০ হাজার বাংলাভাষী পরিবার। বলা হচ্ছে, এসব বাংলাভাষীর বেশির ভাগই অবৈধ বাংলাদেশী। এদের বেশির ভাগই হিন্দু সম্প্রদায়ের। তারা সেখানে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন।  এ নিয়ে অনলাইন নিউজ ১৮ একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।

আসাম, ঝাড়খন্ড ও ওড়িশা রাজ্যে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ বা জেএমবি তাদের উপস্থিতি বৃদ্ধি করেছে বলে সোমবার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেছেন এনআইএ মহাপরিচালক মোদি। এরপরই উপকূলীয় রাজ্য ওড়িশায় উদ্বেগ গুরুতর আকারে দেখা দিয়েছে। বলা হচ্ছে, বাংলাভাষীরা সেখানে কয়েক দশক ধরে বসবাস করছেন। ২০১৪ সালে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলায় ও বুদ্ধগয়ায় বিস্ফোরণে জড়িত থাকা জেএমবি ভারতেও নিষিদ্ধ হয়েছে । সোমবার এনআইএ মহাপরিচালক মোদি বলেছেন, সন্দেজভাজন ১২৫ জন জেএমবি সদস্যের তালিকা সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলোর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে ওড়িশার ডিজিপি বিকে শর্মা এনআইএ প্রধানের বিবৃতি সম্পর্কে বলেছে, এনআইএ অথবা অন্য কোনো উৎস থেকে সন্ত্রাসীদের বিষয়ে যেকোনো তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে ওড়িশা পুলিশ। প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে আমরা প্রস্তুত। ওদিকে ওড়িশার সাবেক ডিজিপি বিপিন বিহারি মিশ্র বলেছেন, এনআইএ প্রধানের বক্তব্যকে গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া উচিত। তালিকাভুক্ত ১২৫ সন্দেহভাজন ছন্দবেশ ধারণ করে বসবাস করছে। যেহেতু এটা গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য তাই আমাদের উচিত তাদেরকে ধরার বিষয়ে গোপনীয়তা বজায় রাখা। কিন্তু কেন কৌশলগত এ বিষয়ে মিডিয়ার কাছে কথা বলা হলো তা বুঝতে পারছি না।

ওড়িয়া ভাষীরা বলছেন, এখনই উচিত তাদের রাজ্যে বসবাস করা কথিত অবৈধ বাংলাদেশী বসতি স্থাপনকারীদের চিহ্নিত করে তাদেরকে বের করে দেয়া। তবে বাংলাভাষীরা বলছেন, তাদের ভিতরে অবৈধভাবে বসবাসকারী নেই বললেই চলে। ওদিকে বালাসুর ভিত্তিক আইনজীবী মনোজ নায়েক বলেছেন, যেহেতু বালাসুর হলো উপকূলীয় জেলা ও পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তে তাই গত কয়েক দশকে এটা অবৈধ অভিবাসীদের সহজ টার্গেট হয়েছে। তার ভাষায়, তারা আসছে এবং রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বসতি স্থাপন করছে। ক্রমবর্ধমান এই সমস্যার দিকে কখনোই গুরুত্ব দিয়ে দৃষ্টি দেয় নি সরকার।

বালাসুরের সমাজকর্মী প্রদীপ কুমার পাতিও একই রকম অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, জেলার বিভিন্ন স্থানে অবৈধ বাংলাদেশীর অবস্থান রয়েছে। তবে আদারবাজার ও সানহাটে তাদের সংখ্যা বেশি। কিন্তু জগতসিংহপুরের একজন বাসিন্দা জগন্নাথ হালদার (৩০) বলেছেন, জগতসিংহপুরে বসবাসকারী বাংলাভাষীদের বেশির ভাগই প্যারাদ্বীপ বন্দর নির্মাণের সময় এসেছেন পশ্চিমবঙ্গ থেকে। আমরা শুনেছি আমাদের পরিবারের সদস্যরা বলেছেন, কিভাবে তারা এই বন্দর নির্মাণের জন্য ইট ও পাথর বহন করেছেন। পরে তারা বন্দরের কাজ বাদ দিয়ে মাছ ধরাকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন। কারণ, বন্দরের কাজের চেয়ে এতে তাদের আয় বেশি হতো।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status