শেষের পাতা

মিরপুরে ফ্ল্যাটে তিন লাশ

ঋণখেলাপি হয়ে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার পর ব্যবসায়ীর আত্মহত্যা

স্টাফ রিপোর্টার

১১ অক্টোবর ২০১৯, শুক্রবার, ৯:১৩ পূর্বাহ্ন

রাজধানীর মিরপুরে স্ত্রী ও সন্তানকে বিষ খাইয়ে হত্যার পর এক ব্যবসায়ী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। গতকাল বিকাল তিনটার পর কাফরুল থানা পুলিশ ১৩নং সেক্টরের ৫নং রোডের একটি ফ্ল্যাট থেকে তিনজনের লাশ উদ্ধার করে।
জানা যায়, ব্যাংক থেকে নেয়া ঋণ পরিশোধ না করতে পেরে দেউলিয়া হয়ে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা করে আত্মহত্যা করেন বায়েজিদ (৪৫) নামের ওই ব্যবসায়ী। তার স্ত্রীর নাম অঞ্জনা (৪০) ও কলেজ পড়ুয়া ছেলের নাম ফারহান (১৭)। বায়েজিদ গার্মেন্টের ব্যবসা করতেন। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে একাধিক ঋণ নিয়েছেন বলে জানা গেছে। এমনকি ঋণ খেলাপির দায়ে একটি মামলাও হয়েছে বায়েজিদের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মিরপুর জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোস্তাক আহমেদ মানবজমিনকে বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিক তদন্তে জেনেছি, বায়েজিদ বিভিন্ন ধরণের ব্যবসা করতেন। কিন্তু লাভের মুখ দেখেননি। বেশকিছু ঋণও ছিল তার। এসব কারণে হতাশা থেকে বায়েজিদ স্ত্রী-ছেলেকে আগে বিষ খাইয়ে নিজে আত্মহত্যা করেন বলে মনে করছি। তিনি আরো বলেন, বুধবার রাতে কোনো একসময় এ ঘটনা ঘটতে পারে। বাকিটা ময়না তদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে জানা যাবে।

এদিকে ঘটনাস্থলে বেশ কয়েকটি চিরকুট পাওয়া গেছে জানিয়ে মোস্তাক আহমেদ বলেন, ওই ফ্ল্যাটের ভেতর বেশি কিছু চিরকুট পাওয়া গেছে। তবে সেগুলো ছোট ছোট আকারে। ছেলের চশমার পাশে রাখা চিরকুটে লেখা, এটা আমার ছেলের খুব প্রিয় চশমা আবার কোনোটিতে লেখা রয়েছে, আমি আমার স্ত্রী সন্তানকে খুব ভালোবাসি। এরকম বেশ কয়েকটি টুকরো পাওয়া গেছে।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে মিরপুরের ১৩ নং সেক্টরের ৫নং রোডের ওই বাসায় থাকতেন বায়েজিদ। ব্যবসা করে কখনো লাভের মুখ দেখেননি। ঋণের পর ঋণ তার বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কাফরুল থানায় একটি মামলাও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এসব নিয়ে খুব হতাশায় ভুগতেন। সে কারণেই এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করছেন প্রতিবেশীরা।

কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিমুজ্জামান জানান, বায়েজিদের স্বজনরা ফোন দিয়ে তাদের না পেয়ে ওই বাসায় যায়। সেখানে গিয়ে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ওই বাসার তৃতীয় তলায় তিনজনের লাশ উদ্ধার করে। বায়েজিদকে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় পাওয়া যায়। অন্যদের লাশ বিছানায় পড়ে ছিল। পরে তাদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর বিষয়টি স্পষ্ট বলা যাবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status