এক্সক্লুসিভ

নুসরাত হত্যা মামলার রায় ২৪শে অক্টোবর

ফেনী প্রতিনিধি

১ অক্টোবর ২০১৯, মঙ্গলবার, ৮:০৪ পূর্বাহ্ন

ফেনীর আলোচিত মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার রায় আগামী ২৪শে অক্টোবর প্রদান করা হবে। গতকাল বিকালে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিখণ্ডন শেষে রায় ঘোষণার সময় নির্ধারণ করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশীদ।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) হাফেজ আহমেদ জানান, নুসরাত হত্যা মামলার সকল ধাপ শেষ হয়েছে। দীর্ঘ ৪৭ দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষে গত ১১ই সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় যুক্তিতর্ক। শুরুতে রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তি উপস্থাপন করে। পরে আসামি পক্ষ যুক্তি উপস্থাপন করলে গতকাল রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিখণ্ডনের তারিখ নির্ধারণ করে। গতকাল আদালতে ১৬ জন আসামির মধ্যে ১৫ জন আসামিকে হাজির করা হয়। অপর আসামি কামরুন নাহার মনি বন্দি থাকা অবস্থায় কন্যা সন্তানের মা হওয়ায় তাকে আদালতে হাজির করা হয়নি।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) হাফেজ আহমেদ আরো জানান, সকল সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে নুসরাতকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ আশা করছে সকল আসামির সর্বোচ্চ সাজা পাবে।
একাধিক আসামির আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন নান্নু জানান, নুসরাত আত্মহত্যা করেছে। পিবিআই এটিকে হত্যা মামলায় রূপ দিয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ হত্যার প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। আসামিপক্ষ প্রমাণ করেছে নুসরাতের ঘটনাটি আত্মহত্যা।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী শাহ জাহান সাজু বলেন, গত ২৭শে জুন মামলার বাদী ও প্রথম সাক্ষী নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। নুসরাতের মা শিরিন আখতার ও বাবা মাওলানা একেএম মুসা ও নুসরাতের ছোট ভাই রাশেদুল হাসান রায়হানসহ ৯২ জনের মধ্যে ৮৭ জনের সাক্ষ্য ও জেরা শেষ হয়।
চলতি বছরের ২৭শে মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী 

নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ৬ই এপ্রিল ওই মাদ্রাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ১০ই এপ্রিল মারা যান নুসরাত জাহান রাফি। গত ৮ই এপ্রিল নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে। মামলাটি পিবিআইতে স্থানান্তরের পর ৩৩ কার্যদিবসের মধ্যে মামলার তদন্ত শেষ করে পিবিআই।
এ মামলায় ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে গত ২৯শে মে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহ আলম। ১৬ জন আসামির মধ্যে ১২ জন আসামি আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিল।
অভিযুক্ত আসামিরা হলো- সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসা অধ্যক্ষ (বহিষ্কৃত) সিরাজ উদ-দৌলা, নূর উদ্দীন (২৩), শাহাদাৎ হোসেন শামীম (২১), সাইফুর রহমান মো. জোবায়ের (২১), জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ (১৯), কামরুন নাহার মণি (১৯), উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে শম্পা ওরফে চম্পা (১৯), হাফেজ আবদুল কাদের (২৫), মাদ্রাসার প্রভাষক আবছারউদ্দিন (৩৩), আবদুর রহিম শরীফ (২০), ইফতেখার উদ্দিন রানা (২২), ইমরান হোসেন ওরফে মামুন (২২), মো. শামীম (২০), ইমরান হোসেন ওরফে মামুন (২২), মহিউদ্দীন শাকিল (২২), পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলম ওরফে মাকসুদ আলী (৪৫) ও সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন (৫০)।


 
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status