শেষের পাতা
নারায়ণগঞ্জে নব্য জেএমবি’র দুই সদস্যসহ গ্রেপ্তার ৩
স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ থেকে
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, মঙ্গলবার, ৯:১০ পূর্বাহ্ন
নারায়ণগঞ্জে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এক কর্মকর্তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তার ছেলে নব্য জেএমবি’র এক সদস্য ও তার পুত্রবধূকে আটক করেছে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা। এর আগে ঢাকা থেকে আটক করা হয় মিজান নামে এক জেএমবি সদস্যকে। তার তথ্যমতে, রোববার দিনগত রাত ১২টায় ফতুল্লার দাপা ইদ্রাকপুর ব্যাংক কলোনিতে ব্যাংক কর্মকর্তার বাড়ি থেকে তার ছেলে ফরিদ উদ্দিন রুমি (২৭) ও তার স্ত্রী জান্নাতুল ফোয়ারা অনু (২২)কে আটক করে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের এডিসি তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি টিম। তবে কাউন্টার টেরোরিজমের সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে ব্যাংক কর্মকর্তার ছোট ছেলে জামাল উদ্দিন রফিক (২৫) পালিয়ে যায়। এরপর তাদের তথ্যমতে রাতেই ফতুল্লার তক্কার মাঠ এলাকায় ব্যাংক কর্মকর্তার পরিত্যক্ত টিনশেড বাড়ি ঘেরাও করে সেখানে নব্য জেএমবি’র ল্যাবরেটরি আবিষ্কার করে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা।
আটক রুমির বাবা জয়নাল আবেদীন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডিজিএম ছিলেন। গত শুক্রবার তিনি স্ত্রীকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ীতে যান। দুই ছেলে ও দুই মেয়ে সন্তানের জনক জয়নাল আবেদীন। তার এক মেয়ে পেশায় চিকিৎসক। পুরো পরিবারটিকে মেধাবী ও ধার্মিক পরিবার বলে স্থানীয়রা জানেন এবং চিনেন।
আটককৃত রুমি ঢাকার আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে ওই বিশ্ববিদ্যালয়েই মেকানিক্যাল বিভাগের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। সে ফতুল্লা পাইলট হাইস্কুল থেকে এসএসসি ও নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে অনার্সে ভর্তি হয় বুয়েটে। সেখান থেকে বুয়েটে ইঞ্জিনিয়ারিং ও টেকনোলজিতে অনার্স শেষ করে। তার ছোট ভাই রফিক খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অনার্সের শিক্ষার্থী। তবে সে অনার্স ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। গত ৬-৭ মাস ধরে হঠাৎ করেই তার মধ্যে পরিবর্তন লক্ষ্য করেছে স্থানীয়রা। রুমির স্ত্রী অনু নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। তার বাবা জাকির হোসেন অগ্রণী ব্যাংকের কর্মকর্তা।
বাড়িটি যেন ছোট একটি ল্যাবরেটরি
এদিকে নব্য জেএমবি’র আস্তানা থেকে ৪টি শক্তিশালী তাজা বোমা, দু’টি খেলনা বন্দুক, বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও কেমিক্যাল, বিস্ফোরক বিহীন সুইসাইডাল ভেস্টসহ বেশকিছু আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার ভোররাতে অভিযান শুরু হলেও দুপুর ১২টায় বোমা নিষ্ক্রিয়করণ কাজ শুরু করে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী টিম। এ কাজে তারা ক্যামেরাবাহী রিমোট কন্ট্রোল রোবট ব্যবহার করেন। দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে প্রথম বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এরপর দুপুর ১টা ১০ মিনিটে, ১টা ২৪ মিনিট এবং সর্বশেষ দুপুর ২টা ১০ মিনিটে সর্বশেষ বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। সর্বশেষ বোমার বিস্ফোরণে টিনশেড বাড়ির চালা উড়ে যায় এবং বাড়িটিতে আগুন ধরে যায়। ওই সময় আগে থেকে ঘটনাস্থলে প্রস্তুত থাকা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দ্রুত আগুন নিভিয়ে ফেলেন।
রুমি ও রফিকদের যে বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক দ্রব্য এবং চারটি শক্তিশালী বোমা উদ্ধার করা হয়েছে সেগুলো পুলিশের ওপর হামলার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছিল বলে মনে করেন, কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম। গতকাল দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। ওই সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, ডিএমপি’র উপ- কমিশনার আসাদুজ্জামান।
মনিরুল ইসলাম বলেন, ঢাকায় ইতিপূর্বে পুলিশের উপর যে ৫টি হামলার ঘটনা ঘটেছিল ওইসব ঘটনায় উদ্ধার করা আলামতের সঙ্গে নারায়ণগঞ্জে উদ্ধার করা বোমার সাদৃশ্য রয়েছে এবং সেগুলো আরো বড় ও শক্তিশালী করে তৈরি করা হচ্ছিল। অতীতের ৫টি ঘটনায় নিরস্ত্র পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ ও পুলিশ বক্সে হামলাগুলো হয়েছিল। ভবিষ্যতে পুলিশের টহল টিম, পুলিশের স্থাপনায় হামলার জন্য নারায়ণগঞ্জে উদ্ধার করা বোমাগুলো প্রস্তুত হচ্ছিল। গ্রেপ্তার রুমির বাড়িতে যে পরিমাণ বিস্ফোরকের মজুত ছিল সেগুলো দিয়ে ১৫ থেকে ২০টি বোমা তৈরি সম্ভব। এ ছাড়া এ বাড়ি থেকে ৩টি বোমা প্রস্তুত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
পুলিশের ওপর হামলার কারণ সম্পর্কে মনিরুল ইসলাম বলেন, জেএমবি’র বিস্তার রোধে পুলিশ সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিল। তাই তারা পুলিশকে শত্রু মনে করে, মুরতাদ মনে করে। এজন্য তাদের টার্গেট ছিল পুলিশ। পুলিশের ওপর হামলা করে তারা পুলিশের মনোবল ভেঙে দেয়া এবং আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল। নতুন ভাবে পুলিশের ওপর হামলার জন্যই নারায়ণগঞ্জের আস্তানায় বোমা তৈরি করা হচ্ছিল।
এটি জেএমবি’র একটি নতুন সেল ছিল উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ৬-৭ মাস আগে এখানে এই সেলটি গড়ে তোলা হয়েছিল। এ অভিযানে গ্রেপ্তারকৃতদের কেউ কেউ অতীতে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় সরাসরি অংশ নিয়েছে অথবা পরিকল্পনা করেছে।
ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করা বোমাগুলো বাড়ির ভেতরেই দুপুর থেকে একে একে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। বোমার বিস্ফোরণে পুরো এলাকা কেঁপে উঠে।
যে বাড়ি থেকে বোমাগুলো উদ্ধার করা হয় সেটি মূলত রুমির বাবা জয়নাল আবেদীন ভাড়া দিতেন। কিছুদিন আগে ভাড়াটিয়া তুলে দিয়ে সেখানে গরুর খামার করেন। গত ৬-৭ মাস যাবৎ গরুর খামার বন্ধ ছিল। ফলে বাড়িটি অনেকটা পরিত্যক্ত।
আটক রুমির বাবা জয়নাল আবেদীন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডিজিএম ছিলেন। গত শুক্রবার তিনি স্ত্রীকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ীতে যান। দুই ছেলে ও দুই মেয়ে সন্তানের জনক জয়নাল আবেদীন। তার এক মেয়ে পেশায় চিকিৎসক। পুরো পরিবারটিকে মেধাবী ও ধার্মিক পরিবার বলে স্থানীয়রা জানেন এবং চিনেন।
আটককৃত রুমি ঢাকার আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে ওই বিশ্ববিদ্যালয়েই মেকানিক্যাল বিভাগের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। সে ফতুল্লা পাইলট হাইস্কুল থেকে এসএসসি ও নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে অনার্সে ভর্তি হয় বুয়েটে। সেখান থেকে বুয়েটে ইঞ্জিনিয়ারিং ও টেকনোলজিতে অনার্স শেষ করে। তার ছোট ভাই রফিক খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অনার্সের শিক্ষার্থী। তবে সে অনার্স ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। গত ৬-৭ মাস ধরে হঠাৎ করেই তার মধ্যে পরিবর্তন লক্ষ্য করেছে স্থানীয়রা। রুমির স্ত্রী অনু নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। তার বাবা জাকির হোসেন অগ্রণী ব্যাংকের কর্মকর্তা।
বাড়িটি যেন ছোট একটি ল্যাবরেটরি
এদিকে নব্য জেএমবি’র আস্তানা থেকে ৪টি শক্তিশালী তাজা বোমা, দু’টি খেলনা বন্দুক, বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও কেমিক্যাল, বিস্ফোরক বিহীন সুইসাইডাল ভেস্টসহ বেশকিছু আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার ভোররাতে অভিযান শুরু হলেও দুপুর ১২টায় বোমা নিষ্ক্রিয়করণ কাজ শুরু করে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী টিম। এ কাজে তারা ক্যামেরাবাহী রিমোট কন্ট্রোল রোবট ব্যবহার করেন। দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে প্রথম বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এরপর দুপুর ১টা ১০ মিনিটে, ১টা ২৪ মিনিট এবং সর্বশেষ দুপুর ২টা ১০ মিনিটে সর্বশেষ বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। সর্বশেষ বোমার বিস্ফোরণে টিনশেড বাড়ির চালা উড়ে যায় এবং বাড়িটিতে আগুন ধরে যায়। ওই সময় আগে থেকে ঘটনাস্থলে প্রস্তুত থাকা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দ্রুত আগুন নিভিয়ে ফেলেন।
রুমি ও রফিকদের যে বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক দ্রব্য এবং চারটি শক্তিশালী বোমা উদ্ধার করা হয়েছে সেগুলো পুলিশের ওপর হামলার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছিল বলে মনে করেন, কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম। গতকাল দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। ওই সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, ডিএমপি’র উপ- কমিশনার আসাদুজ্জামান।
মনিরুল ইসলাম বলেন, ঢাকায় ইতিপূর্বে পুলিশের উপর যে ৫টি হামলার ঘটনা ঘটেছিল ওইসব ঘটনায় উদ্ধার করা আলামতের সঙ্গে নারায়ণগঞ্জে উদ্ধার করা বোমার সাদৃশ্য রয়েছে এবং সেগুলো আরো বড় ও শক্তিশালী করে তৈরি করা হচ্ছিল। অতীতের ৫টি ঘটনায় নিরস্ত্র পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ ও পুলিশ বক্সে হামলাগুলো হয়েছিল। ভবিষ্যতে পুলিশের টহল টিম, পুলিশের স্থাপনায় হামলার জন্য নারায়ণগঞ্জে উদ্ধার করা বোমাগুলো প্রস্তুত হচ্ছিল। গ্রেপ্তার রুমির বাড়িতে যে পরিমাণ বিস্ফোরকের মজুত ছিল সেগুলো দিয়ে ১৫ থেকে ২০টি বোমা তৈরি সম্ভব। এ ছাড়া এ বাড়ি থেকে ৩টি বোমা প্রস্তুত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
পুলিশের ওপর হামলার কারণ সম্পর্কে মনিরুল ইসলাম বলেন, জেএমবি’র বিস্তার রোধে পুলিশ সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিল। তাই তারা পুলিশকে শত্রু মনে করে, মুরতাদ মনে করে। এজন্য তাদের টার্গেট ছিল পুলিশ। পুলিশের ওপর হামলা করে তারা পুলিশের মনোবল ভেঙে দেয়া এবং আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল। নতুন ভাবে পুলিশের ওপর হামলার জন্যই নারায়ণগঞ্জের আস্তানায় বোমা তৈরি করা হচ্ছিল।
এটি জেএমবি’র একটি নতুন সেল ছিল উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ৬-৭ মাস আগে এখানে এই সেলটি গড়ে তোলা হয়েছিল। এ অভিযানে গ্রেপ্তারকৃতদের কেউ কেউ অতীতে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় সরাসরি অংশ নিয়েছে অথবা পরিকল্পনা করেছে।
ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করা বোমাগুলো বাড়ির ভেতরেই দুপুর থেকে একে একে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। বোমার বিস্ফোরণে পুরো এলাকা কেঁপে উঠে।
যে বাড়ি থেকে বোমাগুলো উদ্ধার করা হয় সেটি মূলত রুমির বাবা জয়নাল আবেদীন ভাড়া দিতেন। কিছুদিন আগে ভাড়াটিয়া তুলে দিয়ে সেখানে গরুর খামার করেন। গত ৬-৭ মাস যাবৎ গরুর খামার বন্ধ ছিল। ফলে বাড়িটি অনেকটা পরিত্যক্ত।