বাংলারজমিন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসিফ-মুসলিমের পাল্টাপাল্টি মামলা

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে

২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, মঙ্গলবার, ৮:০১ পূর্বাহ্ন

ব্যবসায়িক লেনদেনের টাকা নিয়ে বিরোধ দেখা দিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুই উপজেলা বিএনপি’র সভাপতির মধ্যে। আশুগঞ্জ এবং আখাউড়া উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি আবু আসিফ আহমেদ এবং ইঞ্জিনিয়ার মুসলিম উদ্দিন এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি মামলাও করেছেন একে অপরের বিরুদ্ধে। ৭০ লাখ টাকার চেক ডিজঅনারের মামলা করেছেন আসিফ। আর মুসলিম মূলধন ও লাভের ৮৯ লাখ ৪৭ হাজার ৪৪৬ টাকা পেতে মামলা করেছেন। ব্যবসার পাশাপাশি দু’জনেই একই দলের রাজনীতিতে জড়িত থাকায় আলোচিত হয়ে উঠেছে বিষয়টি। তারা দু’জনেই গত মেয়াদে উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। মুসলিম উদ্দিন একাদশ সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনে দলের মনোনয়নও পেয়েছিলেন। আবু আসিফ আহমেদও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে দলের মনোনয়ন প্রার্থী ছিলেন। আসিফের মামলা সূত্রে জানা যায়- মুসলিম উদ্দিন ভূইয়া স্বদেশ ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে পাথর ও বালুর ব্যবসা করেন। অন্যদিকে আবু আসিফ আহমেদ আরিয়ান বিল্ডার্স ইকুইপমেন্ট সাপ্লাইয়ার্স এন্ড কেরিং কন্ট্রাক্টের মাধ্যমে পাথর ও বালুর ব্যবসা করেন। মুসলিম ওই প্রতিষ্ঠান থেকে নগদ ও বাকিতে বালু ও পাথর ক্রয় করতেন। ব্যবসায়িক লেনদেনে এ বছরের ১৫ই জুন পর্যন্ত আসিফ মুসলিমের কাছে ৭০ লাখ টাকা পাওনা হন। টাকা পরিশোধ না করে ঘুরাতে থাকলে দু’পক্ষের মধ্যে সালিশ সভা হয়। সেখানে এই টাকা পরিশোধে মুসলিম উদ্দিন ৭০ লাখ টাকার চেক দেন আসিফকে। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ঢাকার নবাবপুর শাখার হিসেব নম্বর ২০৫০১১৮০১০০৬১৬০১০ এর  আইবিভি-৪৯৪০৬ নম্বরের চেকটি দেয়া হয় ১৪ই জুলাই। আসিফ এই চেকটি ১৮ই জুলাই তার নামীয় আশুগঞ্জ প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেডের হিসেবে নগদায়নের জন্যে উপস্থাপন করেন। এরপর ১৮ই জুলাই ‘ইনসাফিসিয়ান্ট ফান্ড’-মন্তব্যসহ চেকটি ডিজঅনার করে ইসলামী ব্যাংক। এরপর আসিফ তার আইনজীবী জসিম উদ্দিনের মাধ্যমে কারণ দর্শাও নোটিশ দেন মুসলিম উদ্দিনকে। পরে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন তিনি। আসিফ তার মামলার এজাহারে মুসলিমকে প্রতারক, বিশ্বাসভঙ্গকারী এবং পরসম্পদ আত্মসাৎকারী হিসেবে চিহ্নিত করেন।
অন্যদিকে ১৮ই সেপ্টেম্বর মুসলিম উদ্দিন ভূইয়া জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে আবু আসিফ আহমেদকে বিবাদী করে পাল্টা মামলা করেন। যাতে তিনি বলেন ১৫ শতাংশ বিনিয়োগ ও লভ্যাংশের সিদ্ধান্ত আসিফের সঙ্গে যৌথভাবে ব্যবসায় সম্মত হয়ে তারা ভারতের গুজরাটের এক্সপোর্ট প্রতিষ্ঠান রয়েল মিনারেল থেকে ৩১ হাজার টন পাথর ক্রয় করেন। বাংলাদেশী টাকায় যার মূল্য ৩ কোটি ২২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এতে ১৫ পার্সেন্ট হারে ১ কোটি ৪৫ লাখ ৪৫ হাজার ৫৫৫ টাকা বিনিয়োগ করার কথা মুসলিম উদ্দিনের। যার মধ্যে আসিফের ব্যাংক হিসেবে ও নগদে ৪২ লাখ টাকা পরিশোধ করেন তিনি। এছাড়া এটলাস শিপিং কপিং লাইন্স লিমিটেডের  অপরিশোধিত টাকা পরিশোধের জন্যে ৭০ লাখ টাকার চেক দেন। তার এজাহারে বলা হয় পাথর বিক্রি করে লাভ হয়  ৩ কোটি ১৬ লাখ ৪৯ হাজার ৬৪৪ টাকা। সে থেকে ১৫ পার্সেন্ট হারে ৪৭ লাখ ৪৭ হাজার ৪৪৬ টাকা লভ্যাংশের হকদার তিনি। আর মূলধন হিসেবে তার পাওনা ৪২ লাখ টাকা। এই টাকা দিতে অস্বীকার করায় মামলা করেন তিনি। এ ব্যাপারে আবু আসিফ আহমেদ বলেন, তার অভিযোগ মিথ্যা। চেক ডিজঅনার মামলা থেকে বাঁচার জন্যে সে আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এই টাকা ছাড়াও আমি তার কাছে আরো টাকা পাবো। যার ব্যাংক ডকুমেন্ট রয়েছে। আর সে আমার কোন ব্যবসায়িক পার্টনারও নয়। মুসলিম উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি পরে কথা বলবেন বলেন জানান।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status