দেশ বিদেশ
পুলিশ মিন্নিকে নির্যাতন করেছে: মিন্নির বাবা
স্টাফ রিপোর্টার
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, সোমবার, ৯:২৭ পূর্বাহ্ন
আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির পিতা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেছেন, রিমান্ডের নামে মিন্নিকে যে নির্যাতন করা হয়েছে তা বর্বরতার যুগের নিসংশতাকেও হার মানিয়েছে। সে এখন বিষণ্নতায় ভুগছে। ওকে পলিশ মারছে, জয়েন্টে জয়েন্টে পুলিশ আঘাত করেছে। টর্চার করেছে। এখনো ওর হাঁটুতে ব্যথা। তিনি বলেন, পুলিশ মিন্নিকে সারা দিন দাঁড় করিয়ে রেখেছে। নির্যাতন করেছে। ভয়ভীতি দেখিয়েছে। এরপর থেকেই সে বিষণ্নতায় ভুগছে। মিন্নির একান্ত চিকিৎসা ও আইনী পরামর্শ প্রয়োজন। এজন্যই মূলতা ঢাকায় আসা। গতকাল সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের সঙ্গে দেখা করার পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মিন্নির বাবা। মোজাম্মেল হোসেন বলেন, রিমান্ডে নেয়ার আগে পুলিশ লাইনে মিন্নিকে একদিন সকাল ৯ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত দাড় করিয়ে রেখেছে। একটু সময়ের জন্য বসতে দেয়নি। অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেছে। এছাড়া, কারাগারে মিন্নিকে পেন কিলার সেবন করতে দেয়া হয়েছিল। ওটা খেয়ে ওর আরো ক্ষতি হয়েছে। তাই এখন পেন কিলার বন্ধ রেখেছি। তিনি আরো প্রভাবশালী একটি কুচক্রী মহলের কাছ থেকে মিন্নি রেহাই পেল না। যে কারণে সে সাক্ষী থেকে আসামি। এখনো ভয়ভীতি আছে। অনেক সময় আকার-ইঙ্গিতে বুঝতে পারছি আমাকে ভয়ভীতি দেখানোর চেষ্টা করতে চায়। সবসময় আমাদের ফলো করে। আমি একধরনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এর আগে দুপুরে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি ও তার বাবা সুপ্রিম কোর্ট বারে তার আইনজীবী জেড আই খান পান্নার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতে মিন্নি আইনজীবীর পা ছুঁয়ে সালাম করেন। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শের বিষয় আছে। আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শের বিষয় আছে। চার্জশিটের কথাতো আগাগোড়াই বলেছি এটা একটা মনগড়া উপন্যাস। মূলত মূল আসামিদের এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার জন্য এ ধরনের কারবার করা হয়েছে। নাথিং নিউ। জজ মিয়া এবং জাহালমের আরেকটা সংস্করণ। আদালতে মিন্নির দেয়া জবানবন্দি প্রকাশের বিষয়ে কোর্টের এই আইনজীবী বলেন, দেখেছি। আমি তো কোর্টে বসেই দেখেছি। আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত যখন আমাদের দেখাতে বলেছিল তখন একনজর দেখেছি। সেটাও (১৬৪ ধারার জবানবন্দি) একটা উপন্যাস। সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি কোর্টকে বলেছেন, এত সুন্দর করে লেখা যা চিন্তার বাইরে। সুস্থ মাথায় এত সুন্দরভাবে লেখতে পারে না। এটা প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন? জবাবে জেড আই খান পান্না বলেন, আগেই করা হয়েছে। মিন্নি নিজে জেলখানা থেকে করেছে।
গত ২৬শে জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয় রিফাত শরীফকে। স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি হামলাকারীদের সঙ্গে লড়াই করেও সন্ত্রাসীদের ঠেকাতে পারেননি। গুরুতর অবস্থায় রিফাতকে ওইদিন বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিফাত শরিফের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও পাঁচ-ছয়জনকে অজ্ঞাত করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে ১৬ই জুলাই সকাল পৌনে ১০টায় মিন্নিকে তার বাবার বাড়ি বরগুনা পৌর শহরের নয়াকাটা-মাইঠা এলাকা থেকে পুলিশ লাইন্সে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯টায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরদিন ১৭ই জুলাই মিন্নিকে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করলে বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ২১শে সেপ্টেম্বর বিকেলে মিন্নি ও তার বাবা বরগুনার আমতলী থেকে লঞ্চে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। গত ২ সেপ্টেম্বর মিন্নিকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন আপিল বিভাগের চেম্বারজজ আদালত বহাল রাখায় কারাগার থেকে মুক্তি পান মিন্নি। আদালতে মিন্নির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দীন। গত ২৯শে আগস্ট মিন্নিকে স্থায়ী জামিন দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে মিন্নির জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। তবে ওই আবেদনে কোনো সাড়া না পেয়ে নিয়মিত আবেদনের সিদ্ধান্ত নেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।
গত ২৬শে জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয় রিফাত শরীফকে। স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি হামলাকারীদের সঙ্গে লড়াই করেও সন্ত্রাসীদের ঠেকাতে পারেননি। গুরুতর অবস্থায় রিফাতকে ওইদিন বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিফাত শরিফের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও পাঁচ-ছয়জনকে অজ্ঞাত করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে ১৬ই জুলাই সকাল পৌনে ১০টায় মিন্নিকে তার বাবার বাড়ি বরগুনা পৌর শহরের নয়াকাটা-মাইঠা এলাকা থেকে পুলিশ লাইন্সে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯টায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরদিন ১৭ই জুলাই মিন্নিকে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করলে বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ২১শে সেপ্টেম্বর বিকেলে মিন্নি ও তার বাবা বরগুনার আমতলী থেকে লঞ্চে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। গত ২ সেপ্টেম্বর মিন্নিকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন আপিল বিভাগের চেম্বারজজ আদালত বহাল রাখায় কারাগার থেকে মুক্তি পান মিন্নি। আদালতে মিন্নির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দীন। গত ২৯শে আগস্ট মিন্নিকে স্থায়ী জামিন দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে মিন্নির জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। তবে ওই আবেদনে কোনো সাড়া না পেয়ে নিয়মিত আবেদনের সিদ্ধান্ত নেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।