বিশ্বজমিন

ইরানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের ঘোষণা সৌদি আরবের

মানবজমিন ডেস্ক

২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, রবিবার, ৯:৫৮ পূর্বাহ্ন

ফাইল ফটো

তেল স্থাপনায় ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিশোধ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরব। দেশটি বলেছে, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে ওই হামলার জবাব দেয়া হবে। পাশাপাশি, হামলার জন্য ফের ইরানকে দায়ী করেছে দেশটি। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।

সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবেইর বলেন, হামলায় ব্যবহৃত সমরাস্ত্র ইরানে তৈরি। তিনি হামলার তদন্তের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। তবে ইরান ওই হামলায় কোনো ধরণের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছে।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবে নিজেদের সেনা পাঠানোর ঘোষণা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে একজন জ্যেষ্ঠ ইরানি সামরিক কর্মকর্তা বলেছেন, যেকোনো বহিঃশত্রুকে ধ্বংস করতে প্রস্তুত তার দেশ। ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা সৌদি আরবের তেল স্থাপনায় চালানো হামলার দায় স্বীকার করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব উভয়েই এই দাবি উড়িয়ে দিয়ে বলেছে, হামলার নেপথ্যে ছিল মূলত ইরান।

গত বছর ইরান পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এরপর তিনি ইরানের ওপর অবরোধ পুনরায় আরোপ করেন।  তখন থেকেই ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে।

রিয়াদে এক সংবাদ সম্মেলনে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুবেইর আরও বলেছেন যে, তদন্ত শেষ হলে প্রয়োজনীয় ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করবে সৌদি আরব। তবে কী ধরণের পদক্ষেপ নেয়া হতে পারে, সেই ব্যাপারে কোনো ইঙ্গিত দেননি তিনি।

তবে তিনি পুনরায় বলেছেন যে, আবকাইক তেল স্থাপনা ও খুরাইস তেল ক্ষেত্রে চালানো হামলা উত্তর দিক থেকে হয়েছে; ইয়েমেন থেকে নয়। তবে তিনি নির্দিষ্ট করে বলেননি, উত্তর দিকের ঠিক কোন দেশ বা স্থান হতে হামলা চালানো হয়েছে। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এ বিষয়ে শক্ত অবস্থান নেয়ারও আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, এই হামলার নেপথ্যে যারা রয়েছে, তাদেরকে নিন্দা জানানোর যেই দায়িত্ব রয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তা গ্রহণের আহ্বান জানাই আমরা। বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপর হুমকির সমতুল্য এই বেপরোয়া আচরণের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিতে হবে।

বুধবার সৌদি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় হামলায় ব্যবহৃত ড্রোন ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ প্রদর্শন করেছে। তারা বলছে, এ থেকে প্রমাণিত হয় হামলায় ইরানের সংশ্লিষ্টতা ছিল। যুক্তরাষ্ট্রও বলছে, হামলার নেপথ্যে রয়েছে ইরান। অজ্ঞাত মার্কিন কর্মকর্তারা সেই দেশের গণমাধ্যমকে বলেছেন যে, প্রাপ্ত প্রমাণ থেকে এই ইঙ্গিত মিলছে যে, ইরানের দক্ষিণাঞ্চল থেকে এই হামলা চালানো হয়েছে।

শুক্রবার মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার বলেছেন, সৌদি আরবের আকাশ ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা উন্নত করতে অজ্ঞাত সংখ্যক সেনা পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের ওপর নতুন অবরোধ আরোপ করেছেন। এই অবরোধের লক্ষ্যবস্তু ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও স্বার্বভৌম তহবিল। তবে তিনি এ-ও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, তিনি সামরিক সংঘাত এড়াতে চান।

এর আগে ইরানের বিপ্লবী রক্ষী বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল হোসেন সালামি সতর্ক করে বলেছেন, যেকোনো ধরণের আক্রমণ প্রতিরোধে ইরানের প্রস্তুতি নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তিনি বলেন, সতর্ক থাকুন। একটি সীমিত আক্রমণ সীমিত থাকবে না। আমরা যেকোনো হামলাকারীকেই তাড়া করবো। হামলাকারীর চূড়ান্ত ধ্বংস পর্যন্ত আমরা চালিয়ে যাবো। একই অনুষ্ঠানে ওই বাহিনীর মহাকাস শাখার প্রধান ব্রিগেডিয়ার আমিরালি হাজিজাদেহ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে তার পূর্বের ব্যার্থতা থেকে শিখতে হবে যে, ইরানে যেকোনো হামলার বিপরীতে জবাব হবে অত্যন্ত কঠোর।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status