বিশ্বজমিন

ইরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞার হুমকি ট্রামেপর, কার্যকারিতা প্রশ্নবিদ্ধ

মানবজমিন ডেস্ক

২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, শুক্রবার, ৮:১৫ পূর্বাহ্ন

ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বুধবার জানিয়েছেন, তিনি ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা বাড়াতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন। গত শনিবার সৌদি আরবের তেল স্থাপনায় ড্রোন হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব। হামলার পরপরই ট্রামপ জানিয়েছিলেন, পাল্টা জবাব দেয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ খবর দিয়েছে মার্কিন সাময়িকী ফরেন পলিসি।
খবরে বলা হয়, ট্রামপ নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা বললেও তার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা। ইরানের প্রায় সব খাতেই মার্কিন নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। তাই প্রশ্ন জাগে, কোন খাতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে? ইরানের জন্য নতুন করে কী চাপ সৃষ্টি হবে ওই নিষেধাজ্ঞায়? এই নিষেধাজ্ঞা কী ইরানের বিরুদ্ধে বা ইরানসমর্থিত দলগুলোর বিরুদ্ধে মার্কিন সামরিক পদক্ষেপ নেয়ার বিকল্প কিনা?
অতীতের সকল মার্কিন প্রশাসনের তুলনায় ট্রামপ প্রশাসন ইরানের বিরুদ্ধে সবচেয়ে কঠোর নীতিমালা অনুসরণ করছে। ইরানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর থেকেই নিজেদের সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগ করেছে ইরানের বিরুদ্ধে। এতে ইরানের তেল রপ্তানি প্রায় শূন্যের কোঠায় চলে এসেছে। চাপ সৃষ্টি হয়েছে অন্যান্য খাতেও।
ফ্যাঁকাসে পদক্ষেপ: ফরেন পলিসি বলছে, ট্রামপ প্রশাসনের বিশ্বাস ইরানের ওপর তাদের নিষেধাজ্ঞা কাজ করছে। সরকারি হিসাবে, ইরানের বর্তমান মুদ্রাস্ফীতি ৪০ শতাংশ। তবে একাধিক অর্থনীতিবিদের ধারণা এই হার আরো বেশি। চলতি বছর দেশটির অর্থনীতি আরো ৩ থেকে ৬ শতাংশ নিম্নমুখী হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। অর্থনীতির মূল উৎসে আঘাত পড়েছে ইরানের। ট্রামপ ইরানের সঙ্গে চুক্তি থেকে বের হওয়ার আগে প্রতিদিন গড়ে ২৫ লাখ ব্যারেল তেল রপ্তানি করতো ইরান। বর্তমানে সে সংখ্যা ২ লাখ ব্যারেলে এসে পৌঁছেছে। ট্রামপ গত জুলাইয়ে বলেছিলেন, ইরানের অর্থনীতি সংকুচিত হচ্ছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নতি স্বীকার করতে রাজি নয় ইরান। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করলে ট্রামেপর সঙ্গে কোনো আলোচনায় বসতে রাজি না বলে জানিয়েছে দেশটির নেতারা। এমতাবস্থায় ফের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চলেছে ট্রামপ। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বর্তমানে ইরানের নতুন কোন খাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যায় তা অনিশ্চিত। তেল, তেলজাতীয় পণ্য, মোটরগাড়ি সংক্রান্ত শিল্প ইরানের প্রধান সব অর্থনৈতিক খাত ইতিমধ্যেই নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ হিসেবে কর্মরত রিচার্ড নেফিউ বলেন, নিষেধাজ্ঞার আওতায় নেই এমন খাতের সংখ্যা খুবই কম। নিষেধাজ্ঞা হয়তো শক্তিশালী একটি ইরানবিরোধী হাতিয়ার। তবে সামপ্রতিক হামলা ও বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞার মধ্যে এই পদক্ষেপ একেবারেই ফ্যাঁকাসে দেখাবে।
তবে ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা ও ওকালতি সংস্থা নিউ ইরানের প্রধান নির্বাহী আলি রেজা নাদের জানান, অর্থনৈতিকভাবে এখনো কিছু পদক্ষেপ নিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। ইরাক ও লেবাননের মতো মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের বাণিজ্য টার্গেট করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। তিনি বলেন, খাদ্য ব্যবস্থাপনা, খাদ্য আমদানি ও মূল্য ধরে রাখা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে ইরান সরকার। ট্রামপ যদি নিষেধাজ্ঞার পরিমাণ দ্বিগুণ করে দেন তাহলে সেটা ইরানের জন্য বড় দুঃসংবাদ হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status