অনলাইন

প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে পরকিয়া, যুবকের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার

ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ১:৪১ পূর্বাহ্ন

প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে আরেক প্রবাসীর পরকিয়া প্রেম। শরীর ও অর্থের লেনাদেনা। প্রেমিকাকে কষ্টার্জিত টাকা পাঠাতেন তিনি। দেশেও আসেন। প্রেমিকার সঙ্গে সময়গুলো ভালোই কাটছিলো। এরমধ্যেই হঠাৎ করেই নিখোঁজ হয়ে যান প্রেমিক। দীর্ঘ দেড় মাস পর তার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে প্রেমিকা নাছিমা আক্তার ও ভাইয়ের স্ত্রী সোনিয়া আক্তারকে। গ্রেপ্তারের পর প্রেমিক হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন নাছিমা (৩৫)। পরিকল্পিতভাবে নাছিমা ও তার ভাই মুন্সি আক্তার মিলে হত্যা করে সৌদি প্রবাসী মোশারফ মিয়াকে। এ বিষয়ে গত ১৭ই আগস্ট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে নাছিমা। ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে।
স্বামী প্রবাসে। এরমধ্যেই প্রতিবেশী মোশারফের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। মোশারফও থাকতেন সৌদিতে। ফোনে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কথা হতো তাদের। দীর্ঘ সময় ভিডিও কলে কথা বলতেন তারা। প্রায়ই বিভিন্ন মাধ্যমে নাছিমাকে গিফট পাঠাতেন মোশারফ। তারপরও নানা অজুহাতে টাকা ধার চাইতেন নাছিমা। প্রেমিকার কথা রাখার চেষ্টা করতেন মোশারফ। বিভিন্ন সময়ে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়েছেন। প্রেমের সম্পর্কের বয়স বাড়ে। টান পড়ে খুব। বিদেশ থেকে ফিরেন দেশে। দেশে ফিরেও দুজনে চুটিয়ে প্রেম করছিলেন। বাড়িতে আসা-যাওয়ার আড়ালে তাদের এই সম্পর্কের বিষয়টি বাদ যায়নি আশপাশের লোকজনের নজর থেকে।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, এরমধ্যেই গত ৪ঠা আগস্ট রাত ৯টায় নিখোঁজ হন মোশারফ মিয়া। পরদিন ঘাটাইল থানায় পরিবারের পক্ষ থেকে একটি জিডি করা হয়। জিডি ও মোবাইলের কললিস্টের সূত্র ধরে তদন্তে নামে পুলিশ। তখনই তদন্তে প্রকাশ পায় মোশারফ-নাছিমার প্রেমের সম্পর্ক। ১৬ই আগস্ট রাতে নাছিমাকে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে মোশারফের সাথে পরকীয়ার কথা স্বীকার করে নাছিমা।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নাছিমা জানায়, প্রেমের সম্পর্ক ভালোই চলছিলো। কিন্তু পাওয়া টাকা ফেরত চাইলে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। তাই আপন ভাই মাদ্রাসা শিক্ষক মুন্সি আক্তারকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে মোশারফ মিয়াকে হত্যা করে নাছিমা। গত ৪ঠা আগষ্ট রাতে নিজের ঘরে মোশারফকে ডেকে নেয় এই নারী। তারপর হত্যা করা হয় তাকে। পরবর্তীতে লাশ বস্তায় ভরে কালিহাতীর গজারিয়া বিলে ফেলে দেয়া হয়।

এ বিষয়ে দায়েরকৃত মামলার বাদী নিহত মোশারফের ছোট ভাই সজিব মিয়া মানবজমিনকে বলেন, ২০১২ সাল থেকে আমার ভাই সৌদীতে ছিলেন। তিনি কষ্টার্জিত বেশিরভাগ টাকা-পয়সা নাছিমাকে পাঠিয়েছেন। এবার রমজান মাসে দেশে ফিরে টাকা ফেরত চাইলে নাছিমা ও তার ভাই মিলে আমার ভাইকে নির্মমভাবে খুন করেছে। তিনি এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।

নিহত মোশারফ ঘাটাইল উপজেলার দিগড় ইউনিয়নের মাইধারচালা নয়াবাড়ি গ্রামের সেকান্দর আলীর ছেলে।

এ ব্যাপারে কালিহাতী থানার ওসি হাসান আল মামুন বলেন, মোশারফকে হত্যা করে লাশটি ছালার বস্তায় ভরে ইট দিয়ে বেঁধে বিলের মধ্যে ডুবিয়ে দেওয়া হয়। খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার  অভিযোগে একই গ্রামের সৌদী প্রবাসী ইসমাঈল হোসেনের স্ত্রী নাছিমা ও তার ভাবী সোনিয়াকে গ্রেপ্তাার করা হয়েছে। মামলার অন্যতম আসামি নাছিমার ভাই কালিহাতী উপজেলার বীরবাসিন্দা গ্রামের মৃত মেছের আলী মন্ডলের ছেলে ভিয়াইল মাদ্রাসার শিক্ষক আকতার হোসেন এখনও পলাতক রয়েছেন বলে জানান তিনি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status