দেশ বিদেশ

মুক্তিযুদ্ধে কলকাতার সাংবাদিকদের ভূমিকার প্রশংসায় বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী

কলকাতা প্রতিনিধি

১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, সোমবার, ৯:০৩ পূর্বাহ্ন

 বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান ভুলবার নয়। কলকাতার সাংবাদিকরা এই আন্দোলনের খবর যেভাবে প্রচার করেছেন তার তুলনা হয় না। শনিবার কলকাতায় প্রেস ক্লাবে ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ: কলকাতার সাংবাদিকরা ও প্রেস ক্লাব’ শীর্ষক এক আলোচনায় অংশ নিয়ে একথা বলেছেন বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় কলকাতার সাংবাদিকরা যেভাবে সহযোগিতা করেছেন তা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে কলকাতা প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকরা ছিলেন কলমযোদ্ধা ও কলম সৈনিক। রণাঙ্গনে জীবন বাজি রেখে তারা খবর পরিবেশন করেছিলেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে এগিয়ে নিয়েছিলেন। তাই সেই কলমযোদ্ধারা আজও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সাক্ষী ও অংশ হয়ে আছেন। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, পশ্চিমবঙ্গ আর বাংলাদেশের ভাষা, সাহিত্য, কৃষ্টি, সংস্কৃতি এক। এখানকার মানুষ বাংলায় কথা বলে। আমরাও বাংলায় কথা বলি। তাই কলকাতায় এলে বাংলাদেশের বাইরে রয়েছি বলে মনে হয় না। সভায় প্রেস ক্লাব প্রকাশিত ‘সাংবাদিকদের চোখে মুক্তিযুদ্ধ’ বইটি নিয়েও বক্তারা আলোচনা করেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, কলকাতা প্রেস ক্লাব ৭৫ বছর পূর্তিতে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যে সংকলন প্রকাশ করেছে, তা এক ঐতিহাসিক দলিল। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ ও তৎকালীন কলকাতার সাংবাদিকদের অবদান নিয়ে স্মৃতিচারণা করেন কলকাতার প্রবীণ সাংবাদিক পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তরুণ গাঙ্গুলি, সুখরঞ্জন দাসগুপ্ত, দিলীপ চক্রবর্তী, মানস ঘোষ ও উপেন তরফদার।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান, প্রেস সচিব মোফাকখারুল ইকবাল, কলকাতা প্রেস ক্লাবের সভাপতি স্নেহাশীষ শূর, সম্পাদক কিংশুক প্রামাণিক ও প্রবীণ সাংবাদিকরা। এদিন তথ্যমন্ত্রী স্মিথ লেনের বেকার হোস্টেলে বঙ্গবন্ধু স্মৃতিকক্ষ পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য্যে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। তিনি কলকাতার আইসিসিআরের বেঙ্গল গ্যালারিতে ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী এই চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন। এদিকে, গত শুক্রবার কলকাতার নিউটাউনে ‘ইন্দো-বাংলা সামিট-২০১৯’ শীর্ষক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ভারত সরকার এবার সমগ্র ভারতে বাংলাদেশ টেলিভিশন দেখানো শুরু করেছে। এতে আমরা খুশি। তবে ভারতের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল অপারেটররা বাংলাদেশি চ্যানেল দেখাচ্ছেন না। একেকটি বাংলাদেশি চ্যানেল দেখানোর জন্য পাঁচ কোটি রুপি দাবি করছেন। এটা কি সম্ভব? ভারতে বাংলাদেশি চ্যানেল দেখানো না হলেও বাংলাদেশে ভারতের চ্যানেল দেখানো হচ্ছে। তিনি ভারতের বেসরকারি চ্যানেলের অপারেটরদের বিষয়টি নিয়ে ভাবা উচিত বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এখন বিশ্বের আকাশ অবারিত। মানুষকে তো আর আটকে রাখা যাচ্ছে না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম খুলে দিয়েছে আকাশ। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি বিশ্বের অন্যতম সেরা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, মেধার দিক থেকেও বাঙালিরা আজ বিশ্বজুড়ে মাথা তুলে আছে। শুধু বাঙালিদের জন্য বিশ্বে একটি দেশ হয়েছে, সেটি বাংলাদেশ। আর এই বাংলাদেশের বাংলা ভাষার আন্দোলনের জন্য আজ বিশ্বে ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবাহী একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা পেয়েছে। এই আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল ইন্দো-বাংলা কাউন্সিল ফর কমার্শিয়াল, কালচারাল, এডুকেশনাল কো-অপারেশন। অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রীকে সম্মাননা দেয়া হয়েছে। সভায় আরো বক্তব্য রেখেছেন বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান, বাংলাদেশের লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক কামরুজ্জামান চৌধুরী, পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের সভাপতি আবু তাহের কামরুদ্দিন প্রমুখ।


   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status