বাংলারজমিন

শ্রীপুর থানার গোলঘরে নির্ধারিত হয় জমির মালিকানা

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, সোমবার, ৮:৩৮ পূর্বাহ্ন

শ্রীপুরে প্রতিনিয়ত জমির দাম বাড়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে তৈরি হচ্ছে নানা ধরনের জটিলতা। এ নিয়ে প্রতিনিয়তই থানায় জমা হয় অভিযোগ। আর এ অভিযোগের শুনানি হয় থানার গোলঘর নামের বিশেষ স্থানে। এখান থেকেই সিদ্ধান্ত হয় জমির মালিকানা। যেখানে পুলিশ প্রশাসনের পছন্দের লোক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন চিশতি আলমগীর নামের এক  লোক। প্রশাসনের লোক না হয়েও চিশতি আলমগীর এখন শ্রীপুর থানার হর্তাকর্তা বলে পরিচিত। চিশতি আলমগীর শ্রীপুর পৌর শহরের আলমগীর মাইক সার্ভিসের মালিক। তার বাড়ি গাড়ারন গ্রামে। তবে গত কয়েক বছর ধরে নিজ ব্যবসার আড়ালে তার আনাগোনা শ্রীপুর থানা চত্বরেই বেশি। থানা প্রশাসন তার হাতে থাকায় বিভিন্ন অভিযোগের বাদী ও বিবাদীর ভিড় লেগেই থাকে তার সঙ্গে। কেননা তার কথামতো থানা থেকে অভিযোগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। আর এ সুযোগে তিনি কামিয়ে নেন টাকা-পয়সা। সরজমিন দেখা যায়, প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শ্রীপুর থানার গোলঘরে শুনানি হয় একেকটি অভিযোগের। আর এ অভিযোগের শুনানির বিচারক চিশতি আলমগীর। জমিসংক্রান্ত নানা বিষয়ে বাদী ও বিবাদীকে জেরা করেন তিনি। পরে সিদ্ধান্ত দেন। তার সিদ্ধান্তই যেন থানার গোলঘরের আইন। আর নিজেকে থানার হর্তাকর্তা হিসেবে উপস্থাপন করায় বাদী ও বিবাদীদের কাছে এখন তিনি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একজন। স্থানীয়রা জানান, চিশতি আলমগীরকে ম্যানেজ করতে পারলে থানা থেকে সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়। এজন্য তাকে দিতে হয় ৫-১০ হাজার টাকা। আর টাকা দিতে না পারলে জমির কাগজপত্র ঠিক থাকার পরও থানা থেকে সিদ্ধান্ত পাওয়া যায় না। একজন সিভিল লোকের কথামতো থানার সিদ্ধান্ত দেয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে বাড়ছে উদ্বেগ। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন গড়ে ১০-১৫টি অভিযোগের শুনানি হয় শ্রীপুর থানার গোলঘরে, যার বেশিরভাগই জমি সংক্রান্ত। থানার পুলিশ কর্মকর্তারাই বাদী বা বিবাদীকে পরামর্শ দেন চিশতি আলমগীরের সঙ্গে যোগাযোগের। এর বিনিময়ে তাকে দিতে হয় তার চাহিদামতো টাকা-পয়সা। অনেক সময় চিশতি আলমগীর পুলিশ কর্মকর্তাসহ অভিযোগ নিষ্পত্তির চুক্তি করেন। তবে, থানার গোলঘরের কর্তাদের চাহিদামতো টাকা পয়সা না দিলে তারা তৈরি করেন নানা ধরনের জটিলতা। এ ছাড়াও চিশতি আলমগীর সবসময় থানায় থাকার সুবাদে উপজেলাজুড়েই পুলিশের লোক হিসেবে নিজের পরিচয় সমৃদ্ধ করায় তাকে সমীহ করে সবাই। পুলিশকে ব্যবহার করে তিনি এখন গাড়ারন গ্রামের আতঙ্ক। তবে চিশতি আলমগীরের দাবি- তিনি জমির কাগজপত্র ভালো বুঝেন, তাই থানা থেকে তাকে ডাকা হয়। তবে তিনি কোনো ডিমান্ড করে কারো কাছ থেকে কোনো টাকা-পয়সা নেন না, সবাই খুশি হয়েই তাকে তার শ্রমের বিনিময় দেন। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লিয়াকত আলী জানান, চিশতি আলমগীর জমির কাগজপত্র ভালো বুঝে তাই অনেক সময় থানায় ডেকে আনা হয়। এ ছাড়াও বাদী ও বিবাদীরা তাকে অনেকসময় কাগজপত্র বুঝানোর জন্য থানায় নিয়ে আসেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status