এক্সক্লুসিভ

রোহিঙ্গা নির্যাতনের আন্তর্জাতিক স্বাধীন তদন্তের দাবি

আমিমুল আহসান তানিম, লন্ডন থেকে

১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৭:৩৩ পূর্বাহ্ন

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের ঘটনার আন্তর্জাতিকভাবে স্বাধীন তদন্তের দাবি জানিয়ে লন্ডনে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাখাইন রাজ্যে মুসলিম রোহিঙ্গা এবং বৌদ্ধ সমপ্রদায়ের মানুষ কয়েক দশক ধরেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়ে আসছেন। মিয়ানমারের সুশীল সমাজের সংগঠনের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে প্রদত্ত বিবৃতিতে একটি আন্তর্জাতিক স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করার কথা বলা হয়েছে। যে কমিটি রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি পুরোপুরিভাবে তুলে আনবে এবং ভবিষ্যতের সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীর পদক্ষেপ নেয়ার ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুতে লন্ডনস্থ মুসলিম সেন্টারে জাস্টিস ফর রোহিঙ্গা ইউকের আয়োজনে উক্ত সভায় উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন রবিন মারস পরিচালক জাস্টিস ফর রোহিঙ্গা ইউকে, মার্ক ফারমানার পরিচালক বর্মা ক্যামপেইন ইউকে, আফজাল খান এমপি, কেইত বেস্ট সাবেক এমপি, সাওকাত আলি সভাপতি বৃটিশ ফ্রেন্ড অফ লেবার পার্টি। এ ছাড়া বক্তব্য রাখেন ডক্টর ফরিদ পানজাওনী, ডক্টর আহমদ আল ডুবান, ডক্টর আব্দুল বারী, ব্যারিস্টার কাউন্সিলর নজির আহমেদ, ব্যারিস্টার মিশেল পলক, শেখ রামজি, সাংবাদিক কে এম আবু তাহের চৌধুরী, অধ্যাপক আব্দুল কাদের সালেহ। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের আইনজীবী তুন খানের পরিচালনায় মঙ্গলবার বিকাল ৬টায় সভায় বক্তারা রাখাইন রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানান এবং গণহত্যা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান ও বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে মানবাধিকার রক্ষার দাবি জানান।

তারা বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতন বা নিপীড়ন বলতে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী এবং পুলিশ দ্বারা দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর চলমান সামরিক অভিযানকে বুঝানো হয়। এটি ২০১২ সালের অক্টোবরে অজ্ঞাত বিদ্রোহীর দ্বারা বার্মা সীমান্তে হামলার একটি প্রতিক্রিয়া ছিল। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গণধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও শিশুহত্যাসহ অত্যধিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত হয়েছে।

তারা বলেন, বাংলাদেশে অবস্থিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে প্রথম কিস্তির ১২০০ জন ফিরে যাবার কথা ছিল। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে যথাযথভাবে কাজটা করা সম্ভব হয়নি। শতাব্দীর সবচেয়ে ঘৃণ্য জাতিগত হামলার শিকার রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ফেরত পাঠানো নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি এখন পর্যন্ত।

২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে দুই দেশের মধ্যে সুরক্ষিত, স্বপ্রণোদিত প্রত্যাবাসন নিয়ে নানা প্রতিশ্রুতির কথাবার্তা চলে। নতুন নতুন তারিখ দেয়া হয়। একটির দেখাও মেলেনি। প্রথমে মিয়ানমার প্রত্যাবাসন কর্মসূচি শুরু করার জন্য একটি তারিখ দেয়। তবে স্বল্পসংখ্যক অংশের বরাতেই তা জোটে, যারা প্রত্যাবাসী হবার উপযুক্ত। মুসলিমপ্রধান রাষ্ট্র বাংলাদেশও মিয়ানমারের এই পন্থাকে সমর্থন জানায়। উক্ত অনুষ্ঠানে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তার লক্ষ্যে তহবিল সংগ্রহ করা হয়।

উল্লেখ্য, জাতিগত দ্বন্দ্বের জের ধরে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। এ সময় রোহিঙ্গাদের ঘর-বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। রাখাইন রাজ্যের সীমান্তে নয়জন রক্ষীর মৃত্যু হয়। এই ঘটনার পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ওই অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা করেছে বলে জানায় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status