বিশ্বজমিন

পর্নো জগতের ফাঁদ

মানবজমিন ডেস্ক

২৫ আগস্ট ২০১৯, রবিবার, ৭:১১ পূর্বাহ্ন

পর্নো দুনিয়া সম্পর্কে ভয়াবহ তথ্য দিলেন পর্নো জগতের বিখ্যাত সাবেক তারকা মিয়া খলিফা (২৬)। অভিযোগ করেছেন, যখন একজন যুবতী বিপন্ন অবস্থায় পড়েন, বিপদে পড়েন, তখন তার সঙ্গে চুক্তি করে পর্নো করপোরেশনগুলো। এসব চুক্তি বৈধভাবে করা হয়। এর মধ্য দিয়ে ফাঁদে ফেলা হয় ওইসব যুবতীকে। মিয়া খলিফা মাত্র তিন মাস পর্নো ছবিতে অভিনয় করেছেন। তারপর ২০১৫ সালে ওই জগতকে বিদায় জানিয়েছেন। তা সত্ত্বেও তিনি এখনও পর্নো বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে হাই র‌্যাংকড তারকা। এ নিয়ে তার সাক্ষাতকার নিয়েছেন তারই বন্ধু মেগান অ্যাবোট। তার ওপর ভিত্তি করে কয়েকদিন আগে অনলাইন বিবিসি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
বন্ধু মেগান অ্যাবোটের কাছে মিয়া খলিফা বলেছেন, এখনও পর্নো দুনিয়ায় কাটিয়ে আসা অতীতকে নিজে মেনে নিতে পারেন নি। এখানে উল্লেখ্য, লেবাননি এই যুবতী সাধারণত তার পর্নো ক্যারিয়ার নিয়ে বক্তব্য রাখা বা কথা বলা এড়িয়ে যান। কিন্তু তিনি এখন তার অতীতের প্রশ্নবিদ্ধ প্রতিটি বিষয়কে অন্ধকারে ফেলে দিতে চান। ভুলে যেতে চান ওই সময়ের সব। তিনি বলেন, ওইসব বিষয়ে আমি যদি থাকি, তাহলে তা এই আমি নই।

এ যাবতকাল যত পর্নো বিষয়ক তারকাকে বা তার অভিনীত নীল ছবি দেখা হয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা হয়েছে যাদেরকে বা যাদের ছবি, তার মধ্যে অন্যতম মিয়া খলিফা। কিন্তু মিয়া খলিফা বলেন, সেই তুলনায় মজুরি বা পারিশ্রমিক যে দেয়া হয় তা নয়। মিয়া খলিফা বলেছেন, মানুষ ভাবে আমি এসব ছবিতে অভিনয় করে কোটি কোটি টাকা আয় করেছি। কিন্তু তাদের এ ধারণা ভুল। অভিনয়ের ক্যারিয়ারে উপার্জন করেছি মাত্র ১২০০০ ডলার। এর পরে ওই খাত থেকে আর একটি পয়সাও পাই নি কখনো।

এখনও মিয়া খলিফার নামে একটি সচল ওয়েবসাইট আছে। কিন্তু এর মালিকানা বা এর লভ্যাংশ মিয়া খলিফার নয়। মিয়া খলিফা বলেছেন, গত বছর আমি চেয়েছি ওই সাইটটির নাম সরাসরি আমার নামানুসারে না রেখে তা পরিবর্তন করানোর অনুরোধ করেছি।

মিয়া খলিফা পর্নো দুনিয়া ছেড়ে দিয়ে এখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন। কিন্তু এক্ষেত্রে তাকে কঠিন সময় পাড় করতে হচ্ছে। এখন তিনি স্পোর্টস বিষয়ক ক্যারিয়ার গড়ার চেষ্টা করছেন। মিয়া খলিফা বলেন, আমার অতীত জীবনের জন্য অনেক কোম্পানি আমাকে কাজ দিতে চায় না। এতে আমি ভেঙে পড়ি। কিন্তু আমি মনে করি, আমি কখনো আমার প্রেমিকের মতো একজন মানুষ খুঁজে পাব না। উল্লেখ্য, এ বছরের শুরুর দিকে রবার্ট স্যান্ডবার্গের সঙ্গে এনগেজমেন্ট সম্পন্ন করেছেন মিয়া খলিফা। প্রেমিক সম্পর্কে তিনি বলেছেন, আমি যাই করি, তাতেই প্রশংসা করে আমার প্রেমিক।

মিয়া খলিফার পর্নো ক্যারিয়ার খুব স্বল্প সময়ের। কিন্তু বিতর্ক দীর্ঘদিনের। কারণ, পর্নো জগতে তার সবচেয়ে বিখ্যাত বা কুখ্যাত একটি দৃশ্য আছে। সেখানে তাকে হিজাব পরে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা অবস্থায় দেখা যায়। এই দৃশ্যটি নিয়ে ভীষণ বিতর্ক হয়েছে। কারণ, হিজাব হলো মুসলিম নারীর পোশাক। আর ইসলামে পতিতাবৃত্তি বা পর্নোছবিতে অভিনয় কড়াকড়িভাবে নিষিদ্ধ। সেই পোশাক পরে পর্নো ছবি করার কারণে উত্তেজনাও দেখা গিয়েছিল। এ সম্পর্কে মিয়া খলিফা বলেন, ওই ছবিটি পোস্ট করার সঙ্গে সঙ্গে যেন দাবানলের মতো আগুন ছড়িয়ে পড়লো। আইসিস আমাকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল। তারা আমার এপার্টমেন্টের গুগল ম্যাপের ছবি পাঠিয়েছিল। ফলে এর পরে আমার ভিতর ভীষণ ভয় দেখা দেয়। আমি পরের দু’সপ্তাহ হোটেলে গিয়ে অবস্থান করি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইন্সটাগ্রামে মিয়া খলিফার অনুসারী প্রায় এক কোটি ৭০ লাখ। তবে তার মধ্য থেকে মাঝে মাঝে তিনি আক্রমণাত্মক বার্তা পান। তার ভাষায়, এসব ছোটখাট বিষয়ে আমি তেমন মাথা ঘামাই না। মনে করি মানুষ আমাকে এমনটা বলছে, এতে আমার কষ্ট পাওয়ার কিছু নেই। কিন্তু আমি সব সময় ভাবি ‘ঠিক আছে, তুমি কি আইসিস? তুমি কি আমাকে হত্যা করতে যাচ্ছ? না, কোনো নড়াচড়া করি না।

২০১৪ সালে তার দেখা মেলে যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামিতে এক সড়কে। ওই বছরের অক্টোবরে তিনি প্রথম পর্নো ছবিতে অভিনয় করেন। কিন্তু তিনি এখন আর চান না, অন্য কোনো মেয়ে এই জগতে পা রাখুক। তিনি মেগান অ্যাবোটকে বলেন, তিনি যেন তার অতীতকে একটি ছোট্ট গোপনীয় নোংরা অধ্যায় হিসেবে দেখেন। ওই বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে মিয়া খলিফা একটি পর্নো বিষয়ক ওয়েবসাইটে এক নম্বর পারফরমার নির্বাচিত হন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status