বাংলারজমিন

শায়েস্তাগঞ্জে ওষুধ বিক্রিতে অনিয়ম

শায়েস্তাগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি

২৪ আগস্ট ২০১৯, শনিবার, ৮:২৭ পূর্বাহ্ন

 শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার সর্বত্র ড্রাগ প্রশাসনের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই গ্রামগঞ্জের বিভিন্ন হাটেবাজারে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে শত শত লাইসেন্সবিহীন ফার্মেসি। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের বিধি অনুযায়ী প্রতিটি ফার্মেসিতে বাধ্যতামূলক একজন করে ফার্মাসিস্ট থাকার কথা থাকলেও তা মানছে না কেউ। শুধুমাত্র ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে বহাল তবিয়তে চালিয়ে যাচ্ছে জীবন রক্ষাকারী ওষুধের ব্যবসা। ফার্মেসিগুলোতে নিম্নমানের ওষুধসহ বিভিন্ন নিষিদ্ধ যৌন উত্তেজক ট্যাবলেটও বিক্রি করা হচ্ছে। শায়েস্তাগঞ্জ পৌর এলাকায় অবস্থিত কিছু কিছু ফার্মেসির ড্রাগ লাইসেন্স থাকলেও উপজেলার গ্রামেগঞ্জের বিভিন্ন হাটেবাজারে ফার্মেসি সঙ্গে সঙ্গে অধিকাংশ মুদি ও চায়ের দোকানে অহরহ বিক্রি হচ্ছে নানারকমের ওষুধ। সরকার দফায় দফায় বিভিন্ন কোম্পানির ওষুধ নিষিদ্ধ করলেও গ্রামেগঞ্জের ফার্মেসিগুলোতে বিক্রি হচ্ছে সে সমস্ত নিষিদ্ধ কোম্পানির ওষুধ। জানা গেছে, ওষুধ কোম্পানিগুলো থেকে ওষুধ বিক্রিতে সর্বোচ্চ ৫ থেকে ১০ শতাংশ কমিশন পায় ওষুধ বিক্রেতারা। কিন্তু ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধের ক্ষেত্রে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ কমিশন দেয়া হয়ে থাকে। এতে করে বেশি লাভের আশায় ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ বিক্রেতে বেশি আগ্রহী হচ্ছে ওষুধ বিক্রির দোকানগুলো। সাধারণ মানুষ কোনো ওষুধটি আসল কোনোটি ভেজাল তা চিহ্নিত করতে অপারগ। এর ফলে এ ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধের বাণিজ্য দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ।
ডাক্তার না হয়েও ফার্মেসি খুলে রমরমা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে একশ্রেণীর অসাধু লোকজন। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই এন্টিবায়োটিক, নিষিদ্ধ, মেয়াদ উত্তীর্ণ ও নিম্নমানের নানান ধরনের ওষুধ বিক্রি করে চলছে তারা। দু-একটি ফার্মেসি ছাড়া অধিকাংশ ফার্মেসিতে নেই কোনো প্রশিক্ষিত ফার্মাসিস্ট। ফলে রোগ নিরাময়ের পরিবর্তে জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে রোগীরা। এতে আর্থিক, শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি সম্মুখীন হয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে অনেক রোগী। অনেকে ডাক্তার না হয়েও গ্রামের সহজ সরল লোকদের কাছ থেকে চিকিৎসা সেবার নামে ব্যবস্থাপত্র লিখে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের অর্থ। ওইসব হাতুড়ে ডাক্তাররা আবার বিভিন্ন ক্লিনিকে রোগী পাঠিয়ে কমিশনের নামে নিচ্ছে মাসোহারা। এ ক্ষেত্রে নীরব ভূমিকা পালন করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কিছু ওষুধ দোকানদার জানান, দীর্ঘদিন ধরে লাইসেন্স না করেই এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। আজ পর্যন্ত কোনো সমস্যার সম্মুখীন হননি। কখনো কোনো সরকারি কর্মকর্তা এগুলোর খোঁজ নিতে আসেননি। তারা আরো জানান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে অবশ্যই সকলেই ড্রাগ লাইসেন্স নিয়ে নিয়মানুযায়ী ব্যবসা করতে বাধ্য হবে। তবে ড্রাগ লাইসেন্সবিহীন ওষুধ ব্যবসা চালানো অবৈধ তা অকপটে স্বীকার করেন তিনি। উপজেলার প্রায় সব ফার্মেসিতে ওষুধ বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ওষুধে অতিরিক্ত মূল্য আদায়সহ নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ক্রেতারাও। শায়েস্তাগঞ্জ পৌর এলাকার বিরামচর গ্রামের তৈয়ব ও হামিদ বলেন, ‘আমার অসুস্থ মায়ের জন্য যতবারই ওষুধ কিনতে গিয়েছি, ততবারই তারা বেশি মূল্য নিয়েছে। জনৈক গৃহবধূ জাহানারা জানান, আমি আলীগঞ্জ বাজারের একটি ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনেছি। পরে, তা বদলাতে গেলে তারা আমাকে নাজেহাল করে। এসবের বিরুদ্ধে জনরোষ তৈরি হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ইতিমধ্যে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছি।





   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status