ষোলো আনা

কোচ আসে, কোচ যায়

বিপ্রতীপ দাস

২৩ আগস্ট ২০১৯, শুক্রবার, ৮:৫৩ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচ হিসেবে যোগদান করেছেন রাসেল ডমিঙ্গ। বিগত আট বছরে (২০১১-১৯) তামিম-সাকিবদের গুরু হয়ে এসেছেন মোট ছয়জন। আর সর্বশেষ সংযোজন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক এই কোচ। পর্যাপ্ত সময় বলে একটা কথা রয়েছে যা হয়তো বা বিসিবি’র সংবিধানে আপাতত নেই বললেই চলে। কোচের সঙ্গে সম্পর্কের মেলবন্ধন ঘটানোর সময়টাও পাচ্ছে না ক্রিকেটাররা। ফলে খাপছাড়া সাফল্য এলেও মন ভরছে না।

পঞ্চপাণ্ডবের কারিগর জেমি সিডন্স চলে যাওয়ার পর বেশ কজন কোচ পায় টাইগাররা। সিডন্সের বিদায়ের পর বাংলাদেশ ক্রিকেটের হাল ধরেন সাবেক অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার স্টুয়ার্ট ল। যার হাত ধরে প্রথবারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ। পারিবারিক কারণ দেখিয়ে চুক্তি শেষের আগেই বাংলাদেশকে বিদায় বলেন ল।

এরপর এলেন রিচার্ড পাইবাস। কোনো প্রকার চুক্তিনামায় সই না করেই ছয় মাস শ্রম দিয়েছিলেন সাকিবদের। তবে ছুটি নিয়ে দেশে ফিরে বিসিবিকে নিজের ইস্তফা পাঠিয়ে দেন। বিসিবি’র প্রতি ক্ষোভ এবং অভিমানের শেষ ছিল না পাইবাসের।

ল এবং পাইবাসের উত্তরসূরি হিসেবে নিয়োগ পেলেন সহকারী শেন জার্গেনশন। প্রায় একবছর তিন মাস সময়কালে ৮ টেস্ট ম্যাচে মাত্র ১টিতে জয় এবং ১৬ ওয়ানডেতে ৫টি এবং ১৩টি টি-২০ ম্যাচে মাত্র ৩ ম্যাচে জয়ের দেখা পায় টাইগাররা।

অনেকটা নিজের উপরে অভিমান করেই বাংলাদেশ ছাড়েন সাবেক এই কোচ। এরপরেই শুরু হয় হাতুরু আমল। দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির মাধ্যমে থিতু করা হয় তাকে। প্রায় সাড়ে তিনবছর তার অধীনে কাজ করেন মুশফিকরা। তিনিই বড় বড় দলগুলোর বিপক্ষে চোখে চোখ রেখে লড়াই করার উদ্যম যোগান। ঘরের মাটিতে ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকাকে নাস্তানাবুদ করার পেছনে রয়েছে তার অসামান্য অবদান। তার হাত ধরেই অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট ম্যাচ জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ। তিনি বাংলাদেশের সফল কোচ ছিলেন সেটা তার পরিসংখ্যান দেখলেই বোঝা যায়। ২১ টেস্টে ৬ জয়, ৫২টি একদিনের ম্যাচে ২৫ জয় এবং ২৯টি টি-২০ ম্যাচে ১০ জয়। তার আমলেই একদিনের ক্রিকেটে শক্ত প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। তার সহকারী সাবেক রোডেশিয়ান হিথ স্ট্রিকের হাত ধরেই বেরিয়ে আসে কয়েকজন নামধারী পেসার। তৎকালীন কোচিং স্টাফ এবং ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাস্টিক মাশরাফির বদৌলতেই অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার-ফাইনাল খেলার গৌরব কুড়ায় টাইগাররা। ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ পর্যন্ত তার থাকার কথা থাকলেও ক্রিকেটারদের সঙ্গে অন্তর্বর্তী কোন্দল তাকে বাংলাদেশ ছাড়তে বাধ্য করে।

হাতুরুর তৈরি বাগানে নতুন করে নিয়োগ দেয়া হয় স্টিভ রোডসকে। স্বল্প সময়েই তার হাত ধরে  ৮ টেস্টে ৩ জয়, ৩০টি একদিনের ম্যাচে ১৭টি জয় এবং ৭টি টি-২০ ম্যাচে ৩টিতেই জয় পায় বাংলাদেশ। তাকে হুট করে ছাঁটাইয়ের রহস্য আজীবন অন্ধকারেই রয়ে যাবে।

অন্ধকারে আলোর দিশারী হিসেবে বাংলাদেশে এসেছেন আফ্রিকান ডমিঙ্গ। তার সঙ্গে বিসিবি’র চুক্তি হয়েছে আপাতত দুইবছরের জন্য। তবে বিসিবি’র আস্থা অর্জন করতে পারলে আগামী ২০২৩ বিশ্বকাপ পর্যন্ত টাইগারদের গুরু হিসেবে দেখা যেতে পারে তাকে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status