দেশ বিদেশ

কিছু রোহিঙ্গা নেতা এবং এনজিও প্রত্যাবাসনে বাধা দিচ্ছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

কূটনৈতিক রিপোর্টার

২১ আগস্ট ২০১৯, বুধবার, ৮:৫৫ পূর্বাহ্ন

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন অভিযোগ করেছেন, প্রত্যাবাসনে সব প্রস্তুতি থাকলেও কিছু রোহিঙ্গা নেতা ও এনজিও বাস্তুচ্যুতদের তাদের স্বভূমে (রাখাইনে) ফিরতে নিরুৎসাহিত করছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে নিজ দপ্তরে মন্ত্রী মোমেন বলেন, আমরা শুনেছি সেখানে কিছু রোহিঙ্গা নেতার উদয় হয়েছে। তারা কোনো রোহিঙ্গার (তাদের মাতৃভূমিতে) ফেরা চায় না। তারা ফিরতে চাওয়াদের বাধা দেয়ার চেষ্টা করছেন। কিছু আইএনজিও এবং এনজিও তাদের (রোহিঙ্গা) প্ররোচনা দিচ্ছে। বাংলাদেশ যত দ্রুত সম্ভব রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরাতে চায় জানিয়ে তিনি বলেন, দুই দেশ বৃহস্পতিবার থেকে স্বল্প মাত্রায় প্রত্যাবাসন পুনরায় শুরুর প্রস্তুতি রয়েছে। মন্ত্রী বলেন, আমরা রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সুরক্ষিত ফেরা এবং তাদের নিজেদের অঞ্চলে মুক্ত চলাচল দেখতে চাই। মিয়ানমার এ বিষয়ে একমত হয়েছে। ফলে অনেকে ফিরে যেতে রাজী। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গারা নাগরিকত্ব চায় এবং তাদের দাবি অনুযায়ী নাগরিকত্ব না পাওয়া পর্যন্ত তারা যাবে না। মিয়ানমার বলেছে এটা একটি প্রক্রিয়া। রোহিঙ্গারা ফেরার পর কার্ড পাবে এবং তারপর তারা নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রক্রিয়ায় আসবে। তিনি বলেন, এটা তাদের আইন। আমরা সেই আইন পরিবর্তনের সুপারিশ করতে পারি না। রাখাইন রাজ্যে প্রত্যাবাসনের আগে যাচাইয়ের জন্য ২৯শে জুলাই ছয় হাজার পরিবারের ২৫ হাজার রোহিঙ্গার নতুন একটি তালিকা মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর করে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৫ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা পেয়েছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে প্রায় আট হাজারের পরিচয় যাচাই করা হয়েছে। ড. মোমেন বলেন, মিয়ানমার প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য মাত্র ৩,৪৫০ জন রোহিঙ্গাকে ছাড়পত্র দিয়েছে। আমরা যত দ্রুত সম্ভব তাদের ফিরে যাওয়া চাই। বাংলাদেশে তাদের অবস্থান দীর্ঘস্থায়ী হলে এ অঞ্চলের শান্তি বিনষ্ট হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ অঞ্চলের শান্তি রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধানের ওপর নির্ভর করছে। এক প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, এ বিষয়ে চীন খুব ভালোভাবেই জড়িত এবং তারা মিয়ানমারকে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়ার জন্য বোঝাতে বাংলাদেশকে সাহায্য করছে। বাংলাদেশ চাইলে এবং প্রয়োজন হলে চীনের প্রতিনিধি মাঠ পর্যায়ে যেতেও প্রস্তুত বলে জানান মন্ত্রী। বাংলাদেশে বর্তমানে ১১ লাখের অধিক রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়ে আছেন। তাদের বেশির ভাগই মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর বর্বর অভিযান থেকে জীবন বাঁচাতে ২০১৭ সালের ২৫শে আগস্টের পর বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার ২০১৭ সালের ২৩শে নভেম্বর চুক্তি সই করে। পরে দুই দেশ ২০১৮ সালের ১৬ই জানুয়ারি মাঠপর্যায়ে কার্যক্রম এগিয়ে নিতে ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ নামে চুক্তি করে। ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ অনুযায়ী, প্রত্যাবাসন শুরুর দুই বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কয়েক দফা তারিখ পরিবর্তনের পর রোহিঙ্গাদের প্রথম দলের ফেরার তারিখ ঠিক হয়েছিল গত বছরের ১৫ই নভেম্বর। উভয় পক্ষে প্রস্তুতিও ছিল। কিন্তু রাখাইনে অনুকূল পরিবেশ না থাকায় রোহিঙ্গারা ফিরতে রাজি না হওয়ায় এ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status