বাংলারজমিন
তালতলীতে নির্মাণাধীন কাজ ফেলে ঠিকাদার উধাও
তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
২০ আগস্ট ২০১৯, মঙ্গলবার, ৮:৩১ পূর্বাহ্ন
তালতলীতে লাউপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের নির্মাণাধীন কাজ ফেলে উধাও হয়েছেন ঠিকাদার। ঠিকাদার গত একবছরের বেশি সময় ধরে নির্মাণ কাজ ফেলে চলে যান। এতে বিপাকে পড়েছে কমিউনিটি ক্লিনিকটির স্বাস্থ্য সেবা নেয়া প্রায় দুই হাজার মানুষ ও স্বাস্থ্যকর্মী। এলাকাবাসী চান দ্রুত এ ভবন নির্মাণ করে স্বাস্থ্যসেবা পেতে। এদিকে প্রায় ৪ বছর পর্যন্ত একটি স্কুলের কোণে বসে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছেন ক্লিনিকের কর্মীরা। আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, উপজেলার লাউপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিক এর ভবন নির্মাণে জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ২০১৮ সালে এপ্রিলে মাসে ২৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। দরপত্র অহ্বানের মাধ্যমে গোপালগঞ্জের আমিনুর রহমান পল্টু এন্টারপ্রাইজ কাজটি পায়। পরে ঠিকাদার নির্মাণ কাজ শুরু করেন। কিছুদিন পরে নির্মাণ কাজ ফেলে লাপাত্তা হন ঠিকাদার। এদিকে নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন করতে বলা হলেও তার হদিস পাওয়া যায়নি। ঠিকাদারকে দুইবার কাজ করার জন্য চিঠি দেয়া হলেও তার কোনো খোঁজখবর পাওয়া যায়নি বলে জানান এই সূত্র। এদিকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে কাজ সম্পন্ন করে ভবনটি হস্তান্তর করার কথা রয়েছে। সোমবার দুপুরে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের ভিত্তি ও কলাম তৈরি করে রাখা হয়েছে। নির্মাণাধীন ভবনের পাশে সামান্য কিছু ইট বালু রাখা হয়েছে। কলামের ওপরের অংশে রডে মরিচা পড়ে রয়েছে। জানা গেছে, কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবার আওতায় এই এলাকার প্রায় ২ হাজার মানুষ। কিন্তু ভবন না থাকায় তাদের সেই সেবাটি পাচ্ছে না ঠিকমতো। প্রাথমিক বিদ্যালয় এর বারান্দার এক কোণে বসে কোনোমতে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে স্বাস্থ্যসেবা। বৃষ্টি এলেই সবকিছু গুছিয়ে নিতে হয় স্বাস্থ্যকর্মীকে। ভবন না থাকায় প্রায় ৫ বছর পর্যন্ত এই স্কুলের রারান্দায় এইকোণে বসে চিকিৎসা সেবা নিতে হচ্ছে গর্ভবতী নারী, বৃদ্ধা ও শিশুদের। আর স্বাস্থ্যকর্মী একার পক্ষে এ চিকিৎসা সেবা দেয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে। এই কমিউনিটি ক্লিনিকটি নতুন ভবন টেন্ডার হলেও ঝুটেনি এখন পর্যন্ত নতুন ভবন। এলাকাবাসীর দাবি এই দুর্ভোগ থেকে তারা মুক্তি পায়। চিকিৎসা সেবা নিতে আসা কয়েক জন বলেন, এখানে ভবন থাকায় এই স্কুলের বারান্দায় বসে কোনোমতে একটু সেবা নিয়ে চলে যেতে হয়। এই ভবন প্রায় ৫ বছর পর্যন্ত নেই। একটি ভবন এসেছে তাও আবার নির্মাণাধীন অবস্থায় ফেলে চলে গেছে। এখন দুর্ভোগের কোনো সীমা নেই। আমাদের দাবি দ্রুত এ ভবন নির্মাণ যাতে করেন। লাউপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মী আফরোজা আক্তার রুমি বলেন, একটি স্কুলের বারান্দার কোণে বসে স্বাস্থসেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ওষুধ সেভ করা যাচ্ছে না। বৃষ্টি হলেই গুছিয়ে চলে যেতে হয়। এই ভবন নিমার্ণ না হলে ভোগান্তির সীমা থাকবে না। এ কমিউনিটি ক্লিনিকের সভাপতি আবুল খায়ের পনু বলেন, এই ক্লিনিকটি ১ বছরের বেশি সময় ধরে নির্র্মাণ কাজ ফেলে ঠিকাদার চলে যায়, এখনো কাজ শুরু করেনি। আমাদে দুর্ভোগের শেষ নেই। ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টাও করা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য অফিসে একটি অভিযোগ দিয়েছি। এ বিষয়ে ঠিকাদার আমিনুর রহমান পল্টু জানতে চাইলে তার মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শঙ্কর প্রসাদ অধিকারী বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কী কারণে কাজ করতে পারছেন না তা জানি না। তবে তাকে একাধিকবার চিঠি দেয়া হয়েছে। শেষবারের মতো ১৫ দিনের মধ্যে কাজ শুরু করার জন্য চিঠি দেয়া হবে। এর মধ্যে কাজ শুরু না করলে তার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে আবার দরপত্র আহ্বান করা হবে।