বাংলারজমিন

হস্তান্তরের নব্বই দিনেই ভেঙে পড়লো সেতু

রবিউল ইসলাম বেলাল, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) থেকে

১৯ আগস্ট ২০১৯, সোমবার, ৮:৪১ পূর্বাহ্ন

কুড়িগ্রামের পুরাতন স্টেশন এলাকার এ,টি,এম দেলদার হোসেন টিটু নামের ঠিকাদার সেতুটি নির্মাণ করেন। গত জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে সেতুটি জনসাধারণের চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব ধনীরাম গ্রামের (বাঘমারার) চরে নব্বই দিনের মাথায় সেতু নির্মাণ কাজ শেষ করার পরে সেতুটি ভেঙে পড়েছে। অনিয়ম নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ও পরিমাণে কম রড ব্যবহার করে কাজ করায় অ্যাপার্টমেন্ট ওয়ালসহ সেতুটি ভেঙে পড়েছে। আবাসনগামী রাস্তার খালের ওপর ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণ করে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ। ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে ৩০ লাখ ৭৭ হাজার ৬৫৬ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে।
বাঘমারার পূর্বধনিরাম এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঠিকাদার ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) যোগসাজশে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সেতুটি নির্মাণ করেন। রড, সিমেন্ট, পাথর স্টিমেটের চেয়ে পরিমাণে অনেক কম ব্যবহার করেছে। এ ছাড়াও নকশা অনুযায়ী নির্মাণ ত্রুটি লক্ষণীয়। এলাকাবাসী মোছাঃ মরিয়ম বেগম (৪৫), মোছাঃ নাজমা বেগম (৪০), মো. ওবায়দুল হক (৪৮), মো. বজলে রহমান (৫০) সহ অনেকে জানান, ঢালাইয়ের সময় পাথর পরিষ্কার না করে কাদামাটিযুক্ত স্থানীয় বালু ব্যবহার করে ঢালাই করেছেন। বালু ও পাথরের তুলনায় সিমেন্ট কম দিয়েছে। নিম্নমানের কাজের প্রতিবাদে সে সময় এলাকাবাসী নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয়। প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার (পিআইও) সবুজ কুমার গুপ্ত এসে কাজ বন্ধ না করার জন্য তাদের হুমকি ধমকি দেন। এ সময় স্থানীয়দের সঙ্গে কর্মকর্তার বাকবিতণ্ডা হয়। সেদিনের মতো কাজ বন্ধ থাকলেও পরবর্তীতে আবারো নিম্নমানের সামগ্রীতে ঢালাইয়ের কাজ করা হয়। সেতুটির অ্যাপার্টমেন্ট ওয়াল, বিম ও ছাদসহ সব ধরনের ঢালাইয়ের সময় ভাইব্রেটর মেশিন ব্যবহার না করে শুধুমাত্র বাঁশ ব্যবহার করে কাজ শেষ করে ঠিকাদারের লোকজন। স্থানীয়রা আরো বলেন, ঈদুল আজহার ১০দিন আগে ভার্টিক্যাল ওয়ালে ফাটল ধরে। আগের দিন (১১ই আগস্ট) এটি ভেঙে পড়ে। যেকোনো সময় সম্পূর্ণভাবে সেতুটি ভেঙে পড়বে। এতে প্রাণহানিসহ মারাত্মক দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। পূর্ব ধনীরাম আবাসনের ৯০টি পবিারসহ (বাঘমারার) চরের এক হাজার পরিবারের যাতায়াতের একমাত্র পথ এই সেতুটি দিয়ে। সেতুটি ভেঙে পড়ায় স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরাও চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। দুর্ভোগ কমাতে স্থানীয়রা বাঁশের পাটাতনের সাঁকো দিয়ে কোনো রকম চলাচল উপযোগী করে তুলেছে।
এ ব্যাপারে নির্মাণাধীন কাজের ঠিকাদার এ,টি,এম দেলদার হোসেন টিটুর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি জানান, সেতুর কাজ ভালোভাবে শেষ করেছি। কিন্তু বন্যার কারণে সেতুটির পাটাতন ভেঙে গেছে। ফুলবাড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সবুজ কুমার গুপ্ত জানান, ঘটে যাওয়া বন্যায় সেতুটির নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় ক্ষতি হয়েছে।
এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমা আরেফিন জানান, সেতুটি বন্যা নাকি নিম্নমানের কাজের কারণে ভেঙে পড়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status