বাংলারজমিন

পূর্ণিমার জোতে চট্টগ্রামে ধরা পড়ছে প্রচুর ইলিশ

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে

১৮ আগস্ট ২০১৯, রবিবার, ৮:৪৬ পূর্বাহ্ন

শুক্রবার ছিল পূর্ণিমার জো (তিথি)। ফলে সাগরে জাল ফেললেই ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। তাই হাসিমুখে ইলিশ নিয়ে উপকূলে আসছেন জেলেরা।
শনিবার চট্টগ্রাম মহানগরীর ফিশারিঘাট, কাট্টলী, সীতাকুণ্ড ও পতেঙ্গা উপকূলীয় এলাকায় দেখা গেছে, জেলেদের হাসিমাখা দৃশ্য। ইলিশ ক্রেতাদের মুখেও ছিল সেই হাসি। কারণ ইলিশের দামও ছিল সহনীয় পর্যায়ে। বিশেষ করে নগরীর কাট্টলী রানী রাসমনী ঘাটে ২৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে ইলিশ।
মিঠু দত্ত নামে এক ক্রেতা জানান, শনিবার সকালে এক কেজি আকারের ইলিশের দাম পড়েছিল কেজি ৪৭৫ থেকে ৫০০ টাকায়। এই দামে ইলিশ কিনতে পেরে তিনি খুশি। নুরুল কবির নামে আরেক ক্রেতা জানান, ছোট-বড় সাত কেজি ইলিশ মাছ কিনেছেন তিনি ১ হাজার ৯০০ টাকায়। এত কম দামে গত দুই দশকেও তিনি ইলিশ মাছ কিনেননি বলে জানান। ফিশারীঘাটের মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, সাগরে ইলিশ ধরা পড়ায় খুশি তারাও। গত বছরের তুলনায় এবার অনেক বেশি ইলিশ ধরা পড়ায় তারা আরো লাভবান হবে। জালে প্রচুর সংখ্যক ইলিশ ধরা পড়ায় সামনে ইলিশের দাম আরো কমবে বলে মনে করছেন আড়তদাররাও।
ফিশারীঘাটের আড়তদার মা মৎস্য ভাণ্ডারের ব্যবস্থাপক অনিল দাশ জানান, ইলিশের ভরা মৌসুম এটি। শুক্রবার পূর্ণিমার জো থাকায় বঙ্গোপসাগরে চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপকূলে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ইলিশ। ফিশারীঘাটে প্রতিদিন চার শতাধিক মাছ ধরার ট্রলার ইলিশ নিয়ে ঘাটে ভিড়ছে। তিনি বলেন, যেসব ইলিশ ধরা পড়ছে সেগুলো ফিশারীঘাট থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হচ্ছে। এ ছাড়া ক্রেতারা নিজে গিয়েই নৌকা থেকে মাছ কিনে নিচ্ছেন। তাতে জেলেরা মাছ বিক্রি করে নগদ টাকা পাচ্ছেন। ক্রেতারাও বাজারের চেয়ে কম দামে ইলিশ কিনতে পেরে অনেক খুশি। তিনি জানান, মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর গত ২৪শে জুলাই থেকে জেলেদের জালে রুপালি ইলিশ ধরা পড়ছে। এতে জেলে, ফিশিং ট্রলার মালিক ও মৎস্য আড়তদারদের মুখে হাসি ফুটেছে। চট্টগ্রামের জেলেপল্লীগুলোতেও চলছে এখন আনন্দের বন্যা। নগরীর ফিশারীঘাটে দেখা যায়, ইলিশভর্তি নৌকা নিয়ে সাগর থেকে ফিরছেন জেলেরা। ছোট-বড় সব আকারের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে ঘাটে। সেখানে তুলনামূলক সস্তায় ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। তবে বাজারে খুচরা পর্যায়ে এখনো এক কেজি ওজনের প্রতিটি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকায়। এ নিয়ে সাধারণ ক্রেতাদের মাঝে হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কার্যালয়ের সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, সাগরে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞার ফল পাচ্ছেন জেলেরা। যেভাবে এখন ইলিশ ধরা পড়ছে তাতে নিষেধাজ্ঞার সময়ের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে সময় লাগবে না। বিষয়টি জেলেরাও বুঝতে পারবেন। তিনি বলেন, বৃষ্টির ওপর নির্ভর করে ইলিশের গতিপথ। পুরো মৌসুমজুড়ে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকায় এবার ইলিশের সরবরাহ থাকবে বেশি। তবে জলবায়ু পরিবর্তন, নদীতে সৃষ্ট বহু চর ও ডুবোচর এবং পদ্মা ও মেঘনার নাব্যতা হ্রাস পাওয়ার কারণে সমুদ্র থেকে ইলিশ মিঠা পানিতে আসতে বাধা পাচ্ছে। তবুও পূর্ণিমার জোয়ারে নদীর মিঠা পানিতেও ইলিশ ধরা পড়বে। এতে বাজারে অনেক কমমূল্যে ইলিশ পাওয়া যাবে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status