শেষের পাতা
মিটফোর্ড হাসপাতাল
নেই ফ্লোরিং করার মতো জায়গাও
রাশিম মোল্লা
১৭ আগস্ট ২০১৯, শনিবার, ৮:৪৪ পূর্বাহ্ন
ছবিঃনাসির উদ্দিন
মিটফোর্ড হাসপাতালের তিনটি ভবনে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে ডেঙ্গু রোগের। এসব ভবনের কোনো ওয়ার্ডের কোনো ইউনিটেই সিট খালি নেই। নেই ফ্লোরিং করার মতো কোনো জায়গা। তবু ভর্তি করতে হচ্ছে ডেঙ্গু রোগীদের। গতকাল দুপুর ১২টা। মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর ভবনের সামনে স্বজনদের ভিড়। গেট দিয়ে ঢুকতেই দেখা গেল দুই সারিতে বিছানায় শুয়ে আছে অনেক ডেঙ্গু রোগী। মূলত এই ভবনের নিচতলা ও দ্বিতীয় তলার মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসা হয় ডেঙ্গু রোগীদের। কর্তব্যরত নার্সরা জানান, তাদের এই ভবনের পুরুষ ওয়ার্ডে রয়েছে ৯৭ জন ডেঙ্গু রোগী। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার নতুন করে ভর্তি হয়েছে ৪০ জন। ডিসচার্জ হয়েছে মাত্র ৪ জন। অপরদিকে একই ভবনের মহিলা ওয়ার্ডে রয়েছে ৩৭ জন ডেঙ্গু রোগী। এখানে ডিসচার্জ হয়েছে ২ জন রোগী। কথা হয় গেটের দুই সারিতে ভর্তি হওয়া বেশ কয়েকজন ডেঙ্গু রোগীর স্বজনদের সঙ্গে। তারা বলেন, ওয়ার্ডের ভিতরে ফ্লোরিং করার জায়গা না পেয়ে গেটের সামনে চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা।
এরা হলেন জুরাইনের ইসমাইল, নয়াবাজারের সুমির, জিনজিরার টুটুল, কেরাণীগঞ্জের সুমন। সুমন ও টুটুলের স্বজনরা জানান, বৃহষ্পতিবার তারা ভর্তি হয়েছেন। জ্বর হওয়ার সাথে সাথে হাসপাতালে টেস্ট করা হলেও তখন ধরা পড়েনি ডেঙ্গু। তাই বাসায় ফিরে যান তারা। কিন্তু জ্বর না কমায় গতকাল আবার এসেছেন হাসপাতালে। এবার টেস্টে ধরা পড়েছে তার ডেঙ্গু। ক্ষোভের সঙ্গে টুটুলের মা বলেন, সরকার ঢাকার শহরকে ডেঙ্গু মুক্ত করতে সচেষ্ট হলেও ঢাকার পাশের উপজেলা কেরানীগঞ্জে নেই কোনো উদ্যোগ। এই উপজেলাতে অনেক ডেঙ্গুর প্রজনন স্থল থাকলেও মশার ওষুধ ছিটানো হয় না।
হাসপাতালের ২নং ভবনের ৬ষ্ঠ ও ৭ম তলার মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে ডেঙ্গু রোগীদের। স্থান সংকুল না হওয়ায় ভবনের ৫ম তলায় খোলা হয়েছে ১০০ শষ্যা বিশিষ্ট নতুন ডেঙ্গু ইউনিট। তবে নতুন চিকিৎসক নিয়োগ না দিয়ে আগের চিকিৎসক দিয়েই চিকিৎসা চলছে এই ইউনিটের ডেঙ্গু রোগীদের। এতে রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। সুমন মল্লিক নামে এক ডেঙ্গু রোগীর স্বজন জানান, গতকাল ছোট ভাইকে ভর্তি করেছি। এখনো বড় ডাক্তারের দেখা মিলেনি। কথা হয় ওই ওয়ার্ডের কর্তব্যরত ২ জন ইন্টার্নী চিকিৎসকদের সঙ্গে। তারা হলেন ডা. জান্নাতুল মিতা। অপরজন হলেন ডা. আহসান হাবীব। জান্নাতুল মিতা বলেন, রোগীদের এতটাই চাপ যে হাসপাতালেই এবারের ঈদ কেটেছে তার। ঈদের ৫ম দিন চলছে। বাড়ি থেকে প্রতিদিনই মা বাবা ফোন করছেন গ্রামে যাওয়ার জন্য। কবে যেতে পারব সেটাও এখনো বলতে পারিনি পরিবারকে। তিনি আরো বলেন, পাঁচ দিন টানা ১৬-১৮ ঘন্টা করে ডিউটি করেছি। ঈদের দিন ভোর থেকে মধ্যে রাত পর্যন্ত ডিউটি করেছি। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার। অপরদিকে ডা. আহসান হাবীব বলেন, ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা করতে গিয়ে আমাদেরকে সবসময় পেরেশানের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগীদের সিবিসি টেস্ট করার জন্য স্লিপ লিখতে হয়। রিপোর্ট দেখতে হয়। এতে করে বহু সময় ব্যায় হয়। এজন্য ইচ্ছা থাকা ম্বত্বেও রোগীর কাছে বার বার যেতে পারি না।
মিটফোর্ড হাসপাতালের ১ নম্বর ভবনের ৬ষ্ঠ তলায় চিকিৎসা দেয়া হয় ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুদের। এই ফ্লোরে শিশুদের জন্য তিনিটি ইউনিট রয়েছে। যেখানে গতকাল পর্যন্ত ৯৮ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। কোনো ইউনিটেই সিট খালি নেই। বারান্দায় ফো্লরিং করে চিকিৎসা নিচ্ছে অনেক রোগী। তবে কিছুটা কমেছে নতুন শিশু ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। গতকাল ১ নং ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে নতুন ডেঙ্গু রোগীদের। এই ইউনিটে গতকাল তিনজন শিশু ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। এরা হলো কেরানীগঞ্জের সমতল বর্মন (২), ফয়সাল (৮) ও সূত্রাপুরের সৃষ্টি (৯)।
সূত্র জানায়, প্রতিদিন নতুন ডেঙ্গু রোগীর আগমনে মিটফোর্ড হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তাদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। হাসপাতালটিতে গতকাল পর্যন্ত ৩৭৯ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে গতকাল ৮ টা পর্যন্ত ভর্তি হয়েছে ৭২ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী। এদের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন ৭ জন ডেঙ্গু রোগী। সরেজমিনে এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ঢাকা দক্ষিণ এলাকার ডেমরা, শ্যামপুর, কদমতলী, সুত্রাপুর, লালবাগ ও হাজারীবাগের ১৭ থানা ও কেরানীগঞ্জ, নবাবগঞ্জ, দোহার ও সিরাজদিখানের ৪ থানাসহ মোট ২১ থানা থেকে ১৫ই জুলাই থেকে ১৬ই আগস্ট পর্যন্ত ২০৩৮ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে ১৬৫৯ জন ডেঙ্গু রোগী সুস্থ্য হয়ে বাসায় ফিরোছেন। চিকিৎসারত অবস্থায় মারা গেছেন, মাদারীপুরের জুলহাস, সিরাজদিখানের আনোয়ার হোসেন, বঙ্গবাজারের কাফিয়া এবং কেরানীগঞ্জের তিনজন সৌরভ, কায়েব ও ফাহিম।
এরা হলেন জুরাইনের ইসমাইল, নয়াবাজারের সুমির, জিনজিরার টুটুল, কেরাণীগঞ্জের সুমন। সুমন ও টুটুলের স্বজনরা জানান, বৃহষ্পতিবার তারা ভর্তি হয়েছেন। জ্বর হওয়ার সাথে সাথে হাসপাতালে টেস্ট করা হলেও তখন ধরা পড়েনি ডেঙ্গু। তাই বাসায় ফিরে যান তারা। কিন্তু জ্বর না কমায় গতকাল আবার এসেছেন হাসপাতালে। এবার টেস্টে ধরা পড়েছে তার ডেঙ্গু। ক্ষোভের সঙ্গে টুটুলের মা বলেন, সরকার ঢাকার শহরকে ডেঙ্গু মুক্ত করতে সচেষ্ট হলেও ঢাকার পাশের উপজেলা কেরানীগঞ্জে নেই কোনো উদ্যোগ। এই উপজেলাতে অনেক ডেঙ্গুর প্রজনন স্থল থাকলেও মশার ওষুধ ছিটানো হয় না।
হাসপাতালের ২নং ভবনের ৬ষ্ঠ ও ৭ম তলার মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে ডেঙ্গু রোগীদের। স্থান সংকুল না হওয়ায় ভবনের ৫ম তলায় খোলা হয়েছে ১০০ শষ্যা বিশিষ্ট নতুন ডেঙ্গু ইউনিট। তবে নতুন চিকিৎসক নিয়োগ না দিয়ে আগের চিকিৎসক দিয়েই চিকিৎসা চলছে এই ইউনিটের ডেঙ্গু রোগীদের। এতে রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। সুমন মল্লিক নামে এক ডেঙ্গু রোগীর স্বজন জানান, গতকাল ছোট ভাইকে ভর্তি করেছি। এখনো বড় ডাক্তারের দেখা মিলেনি। কথা হয় ওই ওয়ার্ডের কর্তব্যরত ২ জন ইন্টার্নী চিকিৎসকদের সঙ্গে। তারা হলেন ডা. জান্নাতুল মিতা। অপরজন হলেন ডা. আহসান হাবীব। জান্নাতুল মিতা বলেন, রোগীদের এতটাই চাপ যে হাসপাতালেই এবারের ঈদ কেটেছে তার। ঈদের ৫ম দিন চলছে। বাড়ি থেকে প্রতিদিনই মা বাবা ফোন করছেন গ্রামে যাওয়ার জন্য। কবে যেতে পারব সেটাও এখনো বলতে পারিনি পরিবারকে। তিনি আরো বলেন, পাঁচ দিন টানা ১৬-১৮ ঘন্টা করে ডিউটি করেছি। ঈদের দিন ভোর থেকে মধ্যে রাত পর্যন্ত ডিউটি করেছি। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার। অপরদিকে ডা. আহসান হাবীব বলেন, ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা করতে গিয়ে আমাদেরকে সবসময় পেরেশানের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগীদের সিবিসি টেস্ট করার জন্য স্লিপ লিখতে হয়। রিপোর্ট দেখতে হয়। এতে করে বহু সময় ব্যায় হয়। এজন্য ইচ্ছা থাকা ম্বত্বেও রোগীর কাছে বার বার যেতে পারি না।
মিটফোর্ড হাসপাতালের ১ নম্বর ভবনের ৬ষ্ঠ তলায় চিকিৎসা দেয়া হয় ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুদের। এই ফ্লোরে শিশুদের জন্য তিনিটি ইউনিট রয়েছে। যেখানে গতকাল পর্যন্ত ৯৮ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। কোনো ইউনিটেই সিট খালি নেই। বারান্দায় ফো্লরিং করে চিকিৎসা নিচ্ছে অনেক রোগী। তবে কিছুটা কমেছে নতুন শিশু ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। গতকাল ১ নং ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে নতুন ডেঙ্গু রোগীদের। এই ইউনিটে গতকাল তিনজন শিশু ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। এরা হলো কেরানীগঞ্জের সমতল বর্মন (২), ফয়সাল (৮) ও সূত্রাপুরের সৃষ্টি (৯)।
সূত্র জানায়, প্রতিদিন নতুন ডেঙ্গু রোগীর আগমনে মিটফোর্ড হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তাদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। হাসপাতালটিতে গতকাল পর্যন্ত ৩৭৯ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে গতকাল ৮ টা পর্যন্ত ভর্তি হয়েছে ৭২ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী। এদের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন ৭ জন ডেঙ্গু রোগী। সরেজমিনে এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ঢাকা দক্ষিণ এলাকার ডেমরা, শ্যামপুর, কদমতলী, সুত্রাপুর, লালবাগ ও হাজারীবাগের ১৭ থানা ও কেরানীগঞ্জ, নবাবগঞ্জ, দোহার ও সিরাজদিখানের ৪ থানাসহ মোট ২১ থানা থেকে ১৫ই জুলাই থেকে ১৬ই আগস্ট পর্যন্ত ২০৩৮ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে ১৬৫৯ জন ডেঙ্গু রোগী সুস্থ্য হয়ে বাসায় ফিরোছেন। চিকিৎসারত অবস্থায় মারা গেছেন, মাদারীপুরের জুলহাস, সিরাজদিখানের আনোয়ার হোসেন, বঙ্গবাজারের কাফিয়া এবং কেরানীগঞ্জের তিনজন সৌরভ, কায়েব ও ফাহিম।