এক্সক্লুসিভ

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সম্মত দুই পক্ষ

প্রথম দফায় ফেরত যাবে ৩৫৪০ জন

মানবজমিন ডেস্ক

১৭ আগস্ট ২০১৯, শনিবার, ৮:০৫ পূর্বাহ্ন

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গার মধ্য থেকে সাড়ে তিন হাজারের বেশি রোহিঙ্গা মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে দুই দেশ। আগামী সপ্তাহ থেকে রাখাইন অঙ্গরাজ্যে এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নৃশংস অভিযান থেকে বাঁচতে ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইন ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা শুরু করে রোহিঙ্গারা। সব মিলিয়ে ৭ লাখ ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে আসে এদেশে। জাতিসংঘ মিয়ানমারের সামরিক নৃশংসতাকে জাতি নিধন বলে আখ্যায়িত করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশের কক্সবাজারে একাধিক অস্থায়ী শিবিরে বাস করছে তারা। রাখাইনে ফিরে গেলে ফের নির্যাতনের শিকার হতে পারে এমন আশঙ্কায় বেশিরভাগ শরণার্থীই ফেরত যেতে চাইছে না বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। বছর খানেক আগে কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করা হলে তা ব্যর্থ হয়। এবার নতুন করে তাদের প্রত্যাবাসনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রত্যাবাসনের জন্য ২২ হাজার শরণার্থীর নামের তালিকা পাঠানো হয় মিয়ানমারের কাছে। সেখান থেকে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ ৩৫৪০ জনকে ফেরত নেয়ার জন্য বাছাই করেছে। আগামী সপ্তাহেই প্রথম ধাপে প্রত্যাবাসন শুরু হবে, যদি শরণার্থীরা ফেরত যেতে চায়। মিয়ানমার থেকে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মিন্ত থু টেলিফোনে রয়টার্সকে বলেন, আমরা ২২শে আগস্ট ৩ হাজার ৫৪০ জনকে প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে একমত হয়েছি। নাম না প্রকাশের শর্তে বাংলাদেশের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর নতুন এই প্রচেষ্টা ‘ছোট আকারের’ প্রত্যাবাসন পরিকল্পনার অংশ। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, স্ব্বেচ্ছাকৃত, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসন ব্যতীত বাংলাদেশ কিছুই চায় না। কাউকেই জোর করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে না। ওই কর্মকর্তা জানান, গণমাধ্যমের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলার অনুমতি ছিল না তার। এদিকে, মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের কর্মী মোহাম্মদ ইলিয়াস জানান, নতুন এই প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কোনো পক্ষ থেকেই আলোচনা করা হয়নি। প্রত্যাবাসন শুরুর আগে মিয়ানমারের উচিত রোহিঙ্গাদের মূল দাবিগুলো মেনে নেয়া। তবে প্রত্যাবাসনের জন্য বাছাই করা শরণার্থীদের মতো যাচাই করতে আহ্বান জানানো হয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থাকে (ইউএনএইচসিআর)। এ বিষয়ক কিছু ই-মেইলের কপি বার্তা সংস্থা রয়টার্স দেখেছে। একটি ই-মেইলে বলা হয়েছে মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে রোহিঙ্গাদের যথাসম্ভব প্রাসঙ্গিক ও নির্ভরযোগ্য তথ্য সরবরাহ করবে ইউএনএইচসিআর। প্রসঙ্গত, আগে জাতিসংঘ জানিয়েছে, রাখাইন রাজ্যে বেশ কয়েক মাস ধরে বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াই করছে সরকারি বাহিনী। সেখানে রোহিঙ্গাদের ফেরার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। অঞ্চলটিতে প্রায় সবধরনের আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করে রেখেছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। এমনকি ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না জাতিসংঘ কর্মকর্তাদেরও। গত মাসে একটি অস্ট্রেলিয়ান থিংকট্যাংক জানিয়েছে, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ফেরার জন্য যৎসামান্য প্রস্তুতি নিয়েছে মিয়ানমার সরকার। স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা গেছে, সেখানে অবকাঠামো পুনঃনির্মাণের কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status