বাংলারজমিন
মির্জাগঞ্জে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কামাররা
মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
১১ আগস্ট ২০১৯, রবিবার, ৮:২৯ পূর্বাহ্ন
মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে মির্জাগঞ্জ উপজেলা সদরস্থ সুবিদখালী বন্দরসহ ৬টি ইউনিয়নের হাট-বাজারগুলোর কামাররা এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। কোরবানির পশু জবাই ও মাংস টুকরা করতে ধারালো অস্ত্রই একমাত্র ভরসা। এ জন্য দা, বঁটি, ছুরি, চাপাতি ইত্যাদি তৈরি এবং পুরনোগুলোতে শান দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কামাররা। তাই ইতিমধ্যেই সরগরম হয়ে উঠেছে মির্জাগঞ্জ উপজেলার কামার সমপ্রদায়ের প্রতিটি দোকান। দিনরাত পরিশ্রম করছেন কামারদের সঙ্গে থাকা সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরা। অথচ বছরের অধিকাংশ সময়ই এ শিল্পের লোকজন বলতে গেলে প্রায় বেকার সময় কাটান। মির্জাগঞ্জের কামার শিল্প অনেক পুরনো। উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি ও সময়ের বিবর্তনে কাজের চাহিদা না থাকায় এ পেশা ত্যাগ করছেন অনেক পরিবার। এ শিল্পের প্রধান উপকরণ লোহা, ইস্পাত ও কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় কামাররা দারুণ অর্থ সংকটে ভুগছেন। প্রতি বছর কোরবানির ঈদের মৌসুমে তাদের ব্যবসা হয়। মির্জাগঞ্জ উপজেলার সুবিদখালী বন্দরের কামার শিল্পী নেপাল কর্মকার জানান, আগে ৪০-৫০ টাকায় এক বস্তা কয়লা পাওয়া যেত। বর্তমানে তার দাম বেড়ে হয়েছে ১৬০ থেকে ১৮৫ টাকা। ১৫ থেকে ২০ টাকার লোহার দাম এখন বেড়ে হয়েছে ১২০ টাকা। চামড়ার তৈরি ‘ভাতি’ দিয়ে কয়লার আগুন জ্বালানোর সময় বাতাস দিতে হয়।
ভাতির দাম ৩ হাজার থেকে বেড়ে হয়েছে ৮ হাজার টাকা। শ্রমিকদের মজুরি দিতে হচ্ছে দৈনিক ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা। বছরজুড়ে এ শিল্পে মন্দা ভাব থাকলেও প্রতি বছর কোরবানির ঈদের আগে এদের কদর বাড়ে। একই বন্দরের প্রবীণ খোকন চন্দ্র কর্মকার জানান, কোরবানির ঈদে কাজের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। এ ছাড়া ধান কাটার মৌসুমেও কাঁচি তৈরিতে কিছুটা ব্যস্ততা বাড়ে। তারা আরো বলেন একসময় লোহার তৈরি দা, বঁটি, চাকু, ছুরিসহ বিভিন্ন জিনিস গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার হতো। বর্তমানে কামারের তৈরি লোহার জিনিসের পরিবর্তে স্টিলের যন্ত্রপাতির ব্যবহার বেড়ে গেছে। অথচ মানুষ সে হারে কামারের তৈরি জিনিস কিনতে চায় না। উপজেলার মহিষকাটা বাজারের গৌরঙ্গ কর্মকার জানান, আমাদের তৈরি জিনিসের উপকরণের দাম আগের চেয়ে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। অথচ জিনিসের চাহিদাও আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। সুবিদখালী বন্দরের প্রবীণ খোকন চন্দ্র কর্মকারসহ আরো অনেকে জানান, তাদের ঋণের সহায়তা করা হলে কামাররা তাদের প্রাচীন ঐতিহ্য ও পেশাকে আঁকড়ে ধরে রাখতে পারতেন।