বাংলারজমিন
শিকলমুক্ত সেই সুরভীর পাশে প্রশাসন
চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
১১ আগস্ট ২০১৯, রবিবার, ৮:২৮ পূর্বাহ্ন
ফুটফুটে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ছিল সুরভী আক্তার। আদরেরও কমতি ছিল না। কিন্তু হঠাৎই দেহে বাসা বাঁধে নাম না জানা রোগ। চিকিৎসকরাও তার রোগ নির্ণয় করতে পারেননি। ফলে এক সময় বয়সের তুলনায় ওজন অনেক বেড়ে যায় (৪ বছর বয়সে ২৫ কেজি)। সেই সময় প্রায় দেড় বছর আগে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ পায় ‘সুরভী (সৌরভী) বাঁচতে চায়’। অভাব থাকলেও পরিবার হাল ছেড়েনি কিন্তু এক পর্যায়ে অর্থের অভাবে চিকিৎসা থেকে পিছিয়ে আসেন তার পরিবার। এর মধ্যে সুরভীর ওজন কমলেও মানসিক অবস্থায় পরিবর্তন হয়। অভাবী সংসার দেখাশুনার অভাবে তাই বিভিন্ন সময় তাকে বেঁধে রাখতো পরিবারের লোকজন। অসুস্থ মেয়ের সাহায্যের জন্য সৌরভীর পিতা অনেক বার গিয়েছিল সমাজসেবা অফিসে কিন্তু পায়নি কোনো তাদের সহায়তা। এভাবে পেরিয়ে যায় মাসের পর মাস এরই মধ্যে গত মাসে বন্যার সময় তার পরিবার আশ্রয় নেন উপজেলা হেলিপ্যাডে। চারদিকে পানি থাকায় পরিবারের লোকজন তাকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখে এ সময় খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় চিলমারী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন অফিসার গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে তার টিম সুরভীকে উদ্ধার করে (১৮ই জুলাই) এবং বেঁধে না রাখার জন্য পরামর্শ দেয়। পরবর্তীতে আবারো তাকে বেঁধে রাখলে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার (এসপি)-এর নির্দেশে চিলমারী থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস টিম তাকে শিকল মুক্ত করে। পরে শুক্রবার বিকালে সুরভীর খোঁজ নিতে ছুটে যান জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ মো. শামসুজ্জোহা। এ সময় সুরভীকে ঈদ উপহার দেন কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার এবং সুরভীর সুরক্ষার জন্য পরিবারের হাতে নগদ অর্থ ও ত্রাণসামগ্রী তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। এছাড়াও তার পরিবারকে সরকারি ঘর, সোলার, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন সহযোগিতার আশ্বাস দেন চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার।