দেশ বিদেশ
মুক্তির ফি ৬শ টাকা!
সরাইলে জামিনের আসামি গ্রেপ্তার
সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
১০ আগস্ট ২০১৯, শনিবার, ৮:৩১ পূর্বাহ্ন
সরাইলের চুন্টা পালপাড়ার মৃত আরব আলীর ছেলে মুগল মিয়া (৪০)। গতকাল সকালে জামিনে থাকা মুগলকে মামলার ওয়ারেন্টের কথা বলে চুন্টা বাজার থেকে গ্রেপ্তার করেন সরাইল থানার এএসআই মাইনুল ইসলাম। গ্রেপ্তারের পর রিকল আছে বলার পরও মুগলকে জনসম্মুখে একাধিক থাপ্পড় মেরে হাতে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে টেনে গাড়িতে ওঠান ওই এএসআই। স্থানীয় লোকজন জানায়, মুগল এক সময় প্রবাসে থাকতেন। পরে পারিবারিক বড়ধরনের ধাক্কায় অর্থাভাবে পড়েন মুগল। ফলে বকেয়া পড়ে যায় মুগলের বিদ্যুৎ বিল। ২০১০, ২০১১ ও ২০১২ সালের মোট ৮৬ হাজার টাকা বকেয়ার জন্য পিডিবি মুগলের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা করে। স্ত্রী ও ৪ সন্তানকে নিয়ে মাছ বিক্রি করে কোনোরকমে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে মুগলের। বছর দুই আগে সরাইল পিডিবির তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলীর শরণাপন্ন হন মুগলের বড় ভাই আবদুল কাদির। তিনি আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে ৮৬ হাজার টাকাকে কিস্তিকে পরিশোধের ব্যবস্থা করে দেন। মুগল প্রথম কিস্তি-৪৬ হাজার, দ্বিতীয়-৫ হাজার, তৃতীয়-৫ হাজার, চতুর্থ-১৫ হাজার ও এক বছর আগে পঞ্চম ও শেষ কিস্তি ১৫ হাজার টাকা দিয়ে বকেয়া শেষ করেন। গত মঙ্গলবার সরাইল পিডিবি অফিস মোট ২৭শ টাকার জরিমানার ভাউছার কেটে দেন। মুগল ওইদিনই সরাইল জনতা ব্যাংকে জরিমানার টাকাও জমা দেন। গত বৃহস্পতিবার সকল কাগজ নিয়ে মুগল চলে যান কুমিল্লার জাঙ্গালিয়ায়। সেখান থেকে সকল মামলা নিষ্পত্তির কাগজ ও রিকল নিয়ে রাত ৯টার দিকে মুঠোফোনে সরাইল থানার দারোগা মো. মজিবুর রহমানকে জানিয়েছেন। তিনি শুক্রবার সকালে কাগজ নিয়ে থানা যেতে বলেছেন মুগলকে। মুগল সকাল ১১টার দিকে চুন্টা বাজারে গিয়ে রিকলসহ সকল কাগজ ফটোকপি করে একটি দোকানে রেখে আরেক দোকানে যান। এ সময় পেছন থেকে মুগলকে ঝাপটে ধরেন এএসআই মাইনুল। মামলা নিষ্পত্তির সকল কাগজ আছে জানালেও মাইনুল শোনেননি। গণ্যমান্য লোকজন রিকল আছে বলে জানালেও মন গলেনি দারোগা মাইনুলের। মুগলকে নিয়ে গাড়ি টান দেয়ার পরও চুন্টা ইউপি যুবলীগের আহ্বায়ক মো. মনিরুল ইসলাম মুঠোফোনে দারোগা মাইনুলকে রিকলের কথা বলেন। তাতেও কোনো কাজ হয়নি। মুগলকে থানার হাজতখানায় রাখেন দারোগা মাইনুল। মিনিট ১৫ পরই রিকল নিয়ে থানায় হাজির হন মুগলের বড় ভাই আবদুল কাদির। রিকল পেয়ে আবদুল কাদিরের কাছে টাকা চান দারোগা মাইনুল। তারা ৬শ টাকা দিলে থানা থেকে মুক্তি মিলে মুগলের।
সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নূরুল হক বলেন, রিকল আছে বললে সংশ্লিষ্ট দারোগার উচিত সেটা দেখে ব্যবস্থা নেয়া। রিকলের আসামিকে কাস্টডিতে নেয়া যাবে না। রিকল দেখাতে পারলে দ্রুত ছেড়ে দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। কেন ৬শ টাকা? একটি টাকাও নেয়ার কোনো বিধান নেই।
সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নূরুল হক বলেন, রিকল আছে বললে সংশ্লিষ্ট দারোগার উচিত সেটা দেখে ব্যবস্থা নেয়া। রিকলের আসামিকে কাস্টডিতে নেয়া যাবে না। রিকল দেখাতে পারলে দ্রুত ছেড়ে দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। কেন ৬শ টাকা? একটি টাকাও নেয়ার কোনো বিধান নেই।