বাংলারজমিন

নোয়াখালীতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা

স্টাফ রিপোর্টার, নোয়াখালী থেকে

১০ আগস্ট ২০১৯, শনিবার, ৮:১১ পূর্বাহ্ন

নোয়াখালীতে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দেলোয়ার বাহিনীর হাতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। বেগমগঞ্জ থানাধীন ৩নং জিরতলী ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকায়। ভিকটিম পলাশ উদ্দিন জানান, জামায়াতে ইসলামীর পৃষ্ঠপোষক দোলোয়ার একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের জনৈক মুখচেনা ক্যাডারদের ভাড়া করে এ ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। এ সময় তারা হকিস্টিক, রামদা, চাইনিজ কুড়াল, টেঁটা, বল্লমসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মার মার ডাক দিয়ে বর্গীর হামলা চালায়। এতে ৮ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে এলাকাবাসী জানায়। ক্ষতিগ্রস্তরা স্থানীয় থানা পুলিশে অভিযোগ করে কোনো প্রতিকার না পেয়ে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নোয়াখালীর বাণিজ্যিক কেন্দ্র চৌমুহনী শহরের একটি পত্রিকা অফিসে সংবাদ সম্মেলন করে তাদের উপর অন্যায় অত্যাচার অবিচার হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়েছেন। এ বাংলাবাজারের দক্ষিণ অংশে গ্রামীণ ব্যাংকের সম্মুখে ইব্রাহিম পিতা গোলাপ রহমান বিগত ২০শে ফেব্রুয়ারি ২০০১ তারিখে ১৮৯৪নং দলিল ও ৯ই মে ২০০২ তারিখে ৪৬০৪নং দলিল মূলে বারইচতল মৌজার সিএস ৫০নং খতিয়ান ও এমআরআর ৪৮নং খতিয়ানের সাবেক ৬৪৬ দাগে নুর ইসলাম ৪ শতক জমি খরিদ করেন। উক্ত ভূমি ৮ই সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে হাজী মো. ইব্রাহিম পিতা মৃত ইদ্রিছ মিয়া ৭৫৮৭নং দলিল মূলে খরিদ করেন। হাজী মো. ইব্রাহিম জীবদ্দশায় এ ভূমিতে একটি বাসা নির্মাণ করে এবং সম্মুখ অংশে ৩৬ ফুটক্মবাড়ি ৪০ ফুট প্রস্থ ২ কক্ষের একটি দোকান নির্মাণ করেন। ১ কক্ষে হাজী মো. ইব্রাহিমের পুত্র মো. পলাশ উদ্দিন মুদি ও মনিহারি দোকান করে আসছেন। অপর কক্ষটি আহাম্মদ উল্যাহর পুত্র মেহেদী হাসানের নিকট ভাড়া দেন। ভুক্তভোগী মো. পলাশ উদ্দিন জানান, এলাকার দেলোয়ার হোসেন স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত-শিবির চক্রের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা তার পৈতৃক সম্পত্তির উপর থাকা দোকানঘর রাতের আঁধারে ভাঙচুর ও লুটপাট করে ৮ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। এ ঘটনায় তিনি বেগমগঞ্জ থানা পুুলিশকে জানালে অজ্ঞাত কারণে ঘটনার ৩ ঘণ্টা পর এসআই মাসুদকে ঘটনাস্থলে পাঠায়। ইতিপূর্বে লুটেরা বাহিনী তাদের দোকানে থাকা ভারী মালামালগুলো সরাতে পারেনি। তিনি বলেন, দারোগা সাহেবকে উক্ত মালামালের একটি সিজার লিস্ট করার অনুরোধ করেন। তিনি সিজার লিস্ট করলেও উক্ত সিজার লিস্টে স্থানীয়দের কোন স্বাক্ষর নেননি। তিনি আরো জানান, থানায় মামলা করতে গেলে থানায় মামলাটি গ্রহণ না করে আরজি পরিবর্তনের নির্দেশ দেন। আমি নিরুপায় হয়ে আর্জি পরিবর্তন করতে বাধ্য হই। এতে আমার লুট হওয়া ৮ লাখ টাকার মালামালের স্থলে ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে উল্লেখ করি। স্থানীয় এমপি মামুনুর রশিদ কিরণ সাহেব আমার এ ঘটনার সত্যতা যাচাই ও দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।

ক্ষতিগ্রস্ত মো. পলাশ উদ্দিন আরো জানান, তাদের এ সম্পত্তি জবর দখল করার জন্য দেলোয়ার হোসেন গং ভুয়া বানোয়াট ও সাজানো দলিল সৃজন করেন। এ বিষয়ে আইনগত ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য নোয়াখালীর বিজ্ঞ বেগমগঞ্জ সিনিয়র জজ আদালতে দেওয়ানী ২০৮/২০১৩নং মামলা দায়ের করি। বিজ্ঞ আদালত দেলোয়ার হোসেন গংদের বিরুদ্ধে মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন। সুচতুর দেলোয়ার হোসেন গং মূল তথ্য গোপন রেখে আমাদের অস্থায়ী স্থিতি আদেশের বিরুদ্ধে মহামান্য হাইকোর্টে ৩৩৬৬/২০১৫নং একটি সিভিল রিভিশন মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ হাইকোর্টের বিচারপতি সালিম বিগত ২২/৫/২০১৯ তারিখে ৪ মাসের মধ্যে নিম্ন আদালতে আমাদের দায়েরকৃত মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য নির্দেশ দেন। এ সুযোগে জামায়াত-শিবিরকে অর্থ প্রদানকারী দেলোয়ার হোসেন বিজ্ঞ হাইকোর্ট নোয়াখালী জেলা জজ কোর্টের আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে আমাদের দখলীয় দোকান পাঠ ভাঙচুর ও ৮ লাখ টাকার মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। আমাদের দায়েরকৃত লুটের মামলায় তদন্ত অফিসার সন্ত্রাসীদের পক্ষ নেওয়ায় আমরা ন্যায়বিচার হতে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। উক্ত সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে ও গোপনে আমাকে প্রাণনাশ ও নানামুখী হয়রানি করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ভিকটিম প্রধানমন্ত্রীর কাছে আর্তি জানিয়ে বলেন, তাকে ও তার পরিবারকে বাঁচাতে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status