দেশ বিদেশ
ঈদযাত্রায় দুর্ভোগ, ট্রেন আসছে দেরিতে
স্টাফ রিপোর্টার
৯ আগস্ট ২০১৯, শুক্রবার, ১০:১২ পূর্বাহ্ন
ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ভোগান্তি মাথায় নিয়ে ঘুরমুখো মানুষ ঢাকা ছাড়ছেন। বাস, লঞ্চ ও ট্রেনে ছিল মানুষের প্রচণ্ড ভিড়। ট্রেনে ছিল ব্যাপক শিডিউল বিপর্যয়। কোনো কোনো ট্রেন তিন ঘণ্টা পর্যন্ত দেরি করেছে। এদিকে বাসে যারা আগাম টিকিট নেননি তাদের আবার গুনতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। এতসব ভোগান্তি মেনেও প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে রাজধানী ছাড়ছে ঘরমুখো মানুষ। গতকাল সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি ছিল রাজধানীতে। ফলে যারা আগাম টিকিট নিয়েছিলেন তাদের বৃষ্টির মধ্যেই নির্ধারিত সময়ে কাউন্টারে হাজির হতে হয়েছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত যশোর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, পাবনা নাটোর, সিরাজগঞ্জসহ উত্তরবঙ্গের বাসগুলো যথা সময়ে ঢাকা ছেড়ে গেলেও বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পেছাতে থাকে সময় সূচি। ঢাকা সংলগ্ন বাইপাইল মহাসড়কে যানজটের কারণে দুপুরের পর বাসগুলো ছাড়তে বিলম্ব হয় বলে বিভিন্ন পরিবহনের কাউন্টারকর্মীরা জানিয়েছেন। নাটোরের যাত্রী কামাল হোসের জানান, দুপুরে কাউন্টারে এসেই ৬৫০ টাকায় একটি টিকিট পেয়েছেন। নাটোরের ভাড়া সাধারণত ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। এদিকে প্রতিবারের মতো এবার কোরবানির ঈদেও সময়সূচি ঠিক রাখতে পারছে না উত্তরাঞ্চলের ট্রেনগুলো; যাত্রীদের তাড়ার কারণে মশার ওষুধ ছিটানোর সুযোগ হচ্ছে না বলে রেল কর্মকর্তারা দাবি করেছেন। এবার ঈদযাত্রার মধ্যে ডেঙ্গু নতুন উপসর্গ হয়ে দেখা দেয়ায় ট্রেনগুলোতে মশা মারার ওষুধ ছিটানোর নির্দেশনা ছিল সরকারের। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে কমলাপুরের স্টেশন ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আমিনুল হক বলেন, স্টেশনে যাত্রীদের নামিয়ে ‘ওয়াশ ফিড’ থেকে ট্রেনগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার পর মশার ওষুধ ‘স্প্রে’ করে তবেই যাত্রী তোলা হচ্ছে। কিন্তু অধিকাংশ ট্রেনের যাত্রীরা ওষুধ না ছিটানোর অভিযোগ করেছেন জানানো হলে তিনি বলেন, যেসব ট্রেন আসতে বেশি দেরি করেছে, সেগুলো গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর পর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে মশন নিধন সেপ্র করা হবে। উত্তরাঞ্চলগামী একতা এক্সপ্রেসের এক কর্মী বলেন, ট্রেন ঢাকায় দেরিতে আসায় ভিড় এড়াতে কিছু যাত্রী এই ট্রেন ঢাকা ঢোকার সময় বিমানবন্দর স্টেশন থেকেই উঠে পড়ে। গতকাল রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের অধিকাংশ ট্রেন নির্ধারিত সময়ের পরে কমলাপুরে পৌঁছে। ফলে ছেড়েও যায় নির্ধারিত সময়ের কয়েক ঘণ্টা দেরিতে। এসব ট্রেন কমলাপুরের প্ল্যাটফর্মে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে দেখা যায়, দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় থাকা যাত্রীরা ট্রেনে থাকা যাত্রীদের নামার আগেই হুড়মুড়িয়ে উঠে পড়ছেন। খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস সকাল ৬টা ২০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও তা ছাড়ে সকাল সোয়া ৮টায়। রাজশাহীগামী ধূমকেতু সকাল ৬টার পরিবর্তে ছেড়ে যায় সকাল সোয়া ৯টায়। চিলাহাটীগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস সকাল ৮টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল, এটি তিন ঘণ্টার বেশি দেরি করে। রংপুর এক্সপ্রেস সকাল ৯টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও এটি দুপুর সোয়া ১২টার পর ছেড়ে যায়। দিনাজপুরগামী একতা এক্সপ্রেস নির্ধারিত সময় সকাল ১০টার বদলে ১২টা ৫০ মিনিটে কমলাপুর ছাড়ে। ট্রেনগুলোর দেরির কারণ জানতে চাইলে স্টেশন ব্যবস্থাপক আমিনুল বলেন, ঈদে যাত্রীদের চাপ বেশি, যে কারণে প্রতিটি স্টেশনে যাত্রী উঠা-নামায় অন্যান্য সময়ের চেয়ে ৫ থেকে ১০ মিনিট বেশি সময় লাগে। এ কারণে এসব ট্রেন স্টেশনে পৌঁছাচ্ছে দেরিতে, ফলে ছাড়তেও দেরি হচ্ছে। ঈদের আগের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ঘরমুখো মানুষের ভিড়। ট্রেন দেরিতে ছাড়ায় ভোগান্তির কথা জানানোর পাশাপাশি মশার ওষুধ সেপ্র না করার অভিযোগও করেন যাত্রীরা। এদিকে সদরঘাটে লঞ্চগুলোতে ছিল প্রচণ্ড ভিড়। সকাল থেকেই যাত্রীরা আসতে থাকে। দুপুরের পরে তা আরো বেড়ে যায়। কারণ গতকাল ঈদের আগে শেষ অফিস হওয়ায় অনেকে অফিস করেই গন্তব্য রওয়ানা দেন। এতে বিকালে ভিড় বেড়ে যায়।