দেশ বিদেশ

১২ বছর পর দেশে ফিরে ডেঙ্গু আক্রান্ত

স্টাফ রিপোর্টার

৮ আগস্ট ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৯:৪৭ পূর্বাহ্ন

পরনে সেন্ডো গেঞ্জি ও সাদা লুঙ্গি। স্যালাইন চলছে। পাশে রয়েছেন স্ত্রী ও দুই ছেলে। তিনি মশাবাহীত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে শয্যাশায়ী। নাম তার আব্দুল্লাহ আল মামুন। বয়স ৫৫। থাকেন সৌদি আরবে। ঢাকায় এসেছেন দীর্ঘ ১২ বছর পর। রাজধানীর মানিকনগর হাইস্কুলের পাশেই তাদের ৪ তলা বাড়ি। বড় ছেলে চাকরি করেন একটি বেসরকারি ব্যাংকে। নাম আব্দুল্লাহ আল রবিন। আর ছোট ছেলে আব্দুল্লাহ আল জিসান মাস্টার্স করছেন মালয়েশিয়ায়। তাদের বাবা দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে থাকেন সৌদি আরবে। সেখানে আছে তার রেস্তোরার ব্যবসা। প্রথমদিকে সেখানেই থাকতেন তার স্ত্রী।

প্রথম সন্তান পেটে আসার পর তিনি চলে আসেন দেশে। এরপর ২ বছর পর ফের জন্ম নেয় ছোট সন্তান। কিছুদিন থাকার পর চলে যান সৌদিতে। দুই ভাইয়ের শৈশব কেটেছে মরুভূমির দেশেই। ২০০৭ সালে মানিকনগরে কেনেন জায়গা। সেখানেই গড়ে তোলেন বাড়ি। ২০০৭ সালেই শেষ বাংলাদেশে এসেছিলেন তিনি। স্ত্রী ও দুই সন্তান মাঝে মধ্যেই যান সৌদিতে।

বড় ছেলে জিসানের বিয়ে ঠিক হয়েছে। ২৩শে আগস্ট শুক্রবার বিয়ে। তার ও স্ত্রীর গ্রামের বাড়ি শেরপুরে। সেখানেই ছেলের বিয়ের সম্বন্ধ করেছেন বাবা-মা। ভাইয়ের বিয়ের জন্য দেশে এসেছেন ছোট ভাইও। বিয়ে এবং ঈদ করবার উদ্দেশ্যে ১২ বছর পর দেশে ফেরেন তিনি। ১০ দিন আগে জ্বর অনুভব করেন। প্রথমে রক্ত পরীক্ষা করান। ধরা পরে ডেঙ্গু। এরপর মানিকনগরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানেই দুই দিন ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তার।

অবস্থার অবণতি হতে থাকলে চিকিৎসকরা নিতে বলেন ঢাকা মেডিকেলে। কিন্তু ঢাকা মেডিকেলে স্থান না থাকায় মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। গতকাল পর্যন্ত ৮দিন ধরে তারা এখানে। এখানে সেবা নিলেও রক্ত পরীক্ষা করান বাইরে থেকে। মেডিসিন ওয়ার্ডে রোগীদের ভিড়ে কোণঠাসা অবস্থা। ব্যবহার্য জিনিসপত্র ও পোশাক দেখে বোঝা যায় অধিকাংশই নিম্ন আয়ের মানুষ। এককোণের এই বেডে থাকা এই পরিবারটির ক্ষেত্রে ভিন্ন রূপ। তাদের ব্যবহার্য জিনিসপত্র উন্নত। চেষ্টা করেছিলেন ভালো কোনো বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানোর। কিন্তু একাধিক হাসপাতাল খুঁজেও ব্যবস্থা করতে পারেননি বেড। আর এখন অবস্থার অবনতি হওয়ায় অন্য কোথাও নেয়ার সাহস পাচ্ছেনা না তারা।

জিসান বলেন, রক্তচাপ প্রায়শই কমে যাচ্ছে। প্লাটিলেট নেমে গেছে। রক্ত দিতে হয়েছে ৪বার। ব্যাথায় কাতর। খেতে পারছে না কিছুই। প্রতিদিন স্যালাইন দিয়ে রাখতে হয়। সেই ওয়ার্ডের সেবিকা রাখি ইসলাম বলেন, অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। তার আগে থেকে হার্ট ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকায় উন্নতি হচ্ছে না।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status