এক্সক্লুসিভ

নারায়ণগঞ্জে পশুর হাটের শিডিউল নিয়ে হাতাহাতি, উত্তেজনা

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ থেকে

৫ আগস্ট ২০১৯, সোমবার, ৮:৪০ পূর্বাহ্ন

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদে পশুর হাটের শিডিউল কেনাকে কেন্দ্র করে দুই দফা হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। রোববার সকালে এবং দুপুরের দিকে ফতুল্লার আলীগঞ্জ পশুর হাটের শিডিউল কেনাকে কেন্দ্র করে ওই ঘটনা ঘটে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে শিডিউল বিক্রি করা হয়। তবে এ ঘটনায় সদর উপজেলার চেয়ারম্যান ফতুল্লা থানা বিএনপি’র সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা বারিকের কর্মকাণ্ড ছিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এদিকে আজ সোমবার শিডিউল জমার শেষ দিন। আজও এ নিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আলীগঞ্জ এলাকার আব্দুল মতিন শিডিউল কিনতে সদর উপজেলা চত্বরে আসামাত্রই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা মনির, নাসির উদ্দিন ও মনিরউদ্দিন এবং তাদের লোকজন। তাদের গ্রুপের আবু সুফিয়ানের ছেলে বাদল ওরফে ফেন্সি বাদল মতিনকে শিডিউল কিনতে বাধা দিলে মতিন জানায়, ‘শিডিউল কেনা আমার গণতান্ত্রিক অধিকার। তাই কিনতে এসেছি।’ এরপরই ফেন্সি বাদল মতিনকে উপর্যুপরি চড়-থাপ্পড় দিতে শুরু করে। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা বারিক মাইকে সবাইকে শান্ত থাকার নির্দেশ দেন এবং পুলিশ ও স্থানীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত করেন। কিন্তু শিডিউল বিক্রি শুরু করাতে পারেননি। শিডিউল নিতে আসা শাহাদাৎ হোসেন সেন্টু নামে একজন বলেন, আমরা আলীগঞ্জের পিডব্লিউডি’র খালি জায়গার জন্য যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে তার জন্য শিডিউল কিনতে আসি সকাল ৯টার দিকে। কিন্তু যথাসময় শিডিউল বিক্রি করেনি উপজেলা কর্মচারী মনির। কারণ জানতে চাইলে সে চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাসের নিষেধ রয়েছে বলে জানান। পরে ইউএনও’কে ব্যাপারটি জানালে তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, ‘আপনারা থাকেন, আমি দেখছি।’ এরপরও শিডিউল বিক্রি শুরু করেনি মনির। ঘটনাটি ডিসি জসিম উদ্দিনের নজরে আনলে তার হস্তক্ষেপে শিডিউল বিক্রি শুরু হয়। পরে আমরা তিনটি শিডিউল কিনে চলে আসি।

অপরদিকে দুপুরে তালতলা হাটের জন্য শিডিউল কিনতে যায় কাজী জিয়াউদ্দিন নামে এক ব্যক্তি। কিন্তু ইউএনও অফিসের কর্মচারী মনির আবারো শিডিউল বিক্রি করতে গড়িমসি শুরু করে। এ নিয়ে জিয়াউদ্দিনসহ অন্য যারা শিডিউল কিনতে এসেছিলেন তারা উত্তেজিত হয়ে উঠলে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা মনির লাঞ্চের বিরতির অজুহাত দেখিয়ে শিডিউল বিক্রি বন্ধ করতে বলে সবাইকে বের করে দেন। এরপর অন্যদের সঙ্গে কাজী জিয়াউদ্দিন নিচে চলে আসার পর প্রতিপক্ষ বোটকা শাহিনের নেতৃত্বে একদল লোক তার ওপর হামলা চালায়। এই হামলায় ফাতেমা মনির গ্রুপের মনিরউদ্দিন ও নাসিরউদ্দিন বাহিনীর লোকজনও অংশ নেয়।
জিয়াউদ্দিন জানান, লাঞ্চের বিরতির অজুহাত দেখিয়ে শিডিউল বিক্রি বন্ধ রাখলে আমি নিচে নেমে আসার পরপরই কিছু বুঝে ওঠার আগে আমার ওপর হামলা চালায় একদল লোক। তারা কার লোক তা আমি বলতে পারবো না। তবে, বোটকা শাহিন ছিল তাদের সঙ্গে।
এদিকে দুই দফা হাতাহাতির পর পুরো উপজেলা চত্বরে থমথমে ভাব বিরাজ করছে। কিছুক্ষণ পরপরই শিডিউল কিনতে আসা বিভিন্ন গ্রুপের মধ্য থেকে উত্তেজনাকর বাক্য বিনিময় চলতে থাকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন বলেন, শিডিউল নিয়ে উত্তেজনা বিরাজের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা বারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, শিডিউল নিয়ে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল এবং বিকাল ৫টা পর্যন্ত শিডিউল বিক্রি করা হয়েছে। যারা কিনতে চেয়েছেন তারা শিডিউল কিনতে পেরেছেন। দুই পক্ষের হাতাহাতির কারণে কিছু সময় শিডিউল বিক্রি বন্ধ ছিল।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status