ষোলো আনা
বন্যার পানি কেন আমার ঘরে?
লিটন সাহা, বাদিয়াখালী গাইবান্ধা থেকে
২ আগস্ট ২০১৯, শুক্রবার, ৯:৪২ পূর্বাহ্ন
ছবি: শাহরিয়ার রোমিও
ঘরে কোমর পানি। তিলে তিলে গড়া সংসারের আসবাবপত্রে ধরলো পচন। চারপাশে এখন শুধুই পচা জিনিসের দুর্গন্ধ। আমার সার্টিফিকেট, ব্যাংকের কাগজ, দলিলসহ কোনো কাগজপত্রই আর অক্ষত নেই। ঘরে রাখা চালগুলোও পচে গেছে। খাব কী? পরনের কাপড়গুলোও নাই? ভিজে ব্যবহার অনুপযুক্ত। পরবো কী? আর বন্যার সময় কতটা লড়াই করে বাঁচতে হয়, তা কম বেশি সবার জানা। আর ত্রাণ, পাইনি বললে খুব একটা মিথ্যা বলা হবে না।
এখন বাড়ি থেকে পানি নেমে গেছে। নতুন করে শুরু হয়েছে লড়াই। সারা বছরজুড়ে কী খাব তার কোনো ঠিক নেই। আলমারিতে ছিল কিছু টাকা। তাও আর ব্যবহার উপযোগী না। কারো বাসায় চুরি হলে সবই থাকে। কিন্তু বন্যার পানি ঢুকলে অধিকাংশই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে যায়।
কিন্তু কথা হচ্ছে- আমরা কেন এই বন্যা মোকাবিলা করবো? শুষ্ক মৌসুমে মাটি ফেটে খাঁ-খাঁ। পানির জন্য হাহাকার। এমনকি নদীর মাঝের জমিতেও চাষের জন্য দিতে হয় সেচ। ভেবে দেখেন, কতটা খারাপ পরিস্থিতি হলে নদীর বুকে সেচ দেয়া লাগতে পারে?
আবার বর্ষা মৌসুমে আসছে হু হু করে পানি। ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে চারপাশ। নদী আর গ্রাম যেন সমুদ্র। আর পানি এসেছে স্রোত হয়ে। ধীরে ধীরে পানি আসলেও তো অনেক মূল্যবান জিনিস নিরাপদে নিয়ে যাওয়া যায়। যেখানে প্রাণ বাঁচানোই দায়। বৃষ্টির পানিতে তো এই বন্যা হচ্ছে না। এই বন্যা হচ্ছে উজান থেকে আসা পানিতে। আমরা শুষ্ক মৌসুমে পানির জন্য হাহাকার করবো আর বর্ষায় ভেসে যাবে আমাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই। তা তো মেনে নেয়া যায় না। সবার কাছে একটাই প্রশ্ন- বন্যার পানি কেন আমার ঘরে?