ষোলো আনা

পাঠক গড়ার কারিগর ‘ওমর চাচা’

পিয়াস সরকার

২৬ জুলাই ২০১৯, শুক্রবার, ৯:০৯ পূর্বাহ্ন

বই পড়ার অভ্যাস তার ছোট বেলা থেকেই। যাকে বলে নেশা। তিনি চাকরি করতেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। বইয়ের নেশার কারণেই হারিয়েছেন চাকরি। তবে ছাড়েন নি বই পড়া। সামর্থ্য না থাকায় কিনতেন পুরাতন বই। আর তা সংগ্রহ করতেন। এভাবে বিশাল বইয়ের সংগ্রহ হয়ে যায় তার। তার নাম শরীফ ওমর। বয়স ৬৫। ‘ওমর চাচা’ বলেই সবাই ডাকেন তাকে।
 
বইকে পুঁজি করে নেন অন্য রকম এক উদ্যোগ। শুরু করেন বই ভাড়া দেয়া। ওমর শরীফের বাড়ি রংপুর শহরের মুলাটোলে। শহরের শহীদ জররেজ মার্কেট। এটি মূলত পুরাতন বইয়ের মার্কেট। ২০০১ সালে ছোট্ট একটু স্থান ভাড়া নেন। এরপর থেকেই ভাড়া দেয়া শুরু করেন বই। শুরুতে বই ভাড়া দিতেন ১-৩ টাকায়। আর এখন সেসব বইয়ের ভাড়া মাত্র ৫-১০ টাকা। তার সংগ্রহে রয়েছে প্রায় হাজার খানেক বই। এরমধ্যে রয়েছে ভ্রমণ কাহিনী, গল্প, ছোট গল্প, উপন্যাস, গবেষণাধর্মী, আত্মজীবনী, সায়েন্স ফিকশন, কবিতা, শিক্ষামূলক বইসহ প্রায় হাজার খানেক বই। প্রথমে যাত্রা ছিল মাত্র শ’ খানেক বই নিয়ে।

তার এই বইয়ের পাঠক মূলত বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা একটি বই নিয়ে ৫-৭ দিনের মধ্যে ফেরত দিয়ে নতুন বই নিয়ে যান। প্রতিদিন প্রায় ৫০টি বইয়ের আদান প্রদান হয়ে থাকে। ওমর শরীফ বলেন, আমার এই বই পড়ে ছেলে-মেয়েদের যদি একটু জ্ঞান বাড়ে সেটাই আমার সার্থকতা। আমি এই বই নিয়েই বেঁচে আছি। এই বইগুলোই আমাকে শ্বাস দেয়।

বইপ্রেমী ওমর শরীফের সঙ্গে কথা বলা অবস্থায় রংপুর জিলা স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইয়ামিন মওলা আসেন তার দোকানে। সঙ্গে থাকা বুদ্ধ দেব গুহ’র ‘বাতিঘর’ বইটি জমা দিয়ে নিয়ে যান আহমেদ সফা’র ‘পুষ্প বৃক্ষ এবং বিহঙ্গ পুরাণ’ বইটি। এই শিক্ষার্থী বলেন, আমি ওমর চাচার কাছ থেকে ৪ বছর ধরে বই নিয়ে পড়ছি। চাচার আগ্রহেই আমি বই পড়া শুরু করি। তিনি আমাকে বই বাছাই করে দিতেন। নিতেন না টাকা পর্যন্ত।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status