বিশ্বজমিন

হংকংয়ে বিক্ষোভকারীদের ওপর মুখোশধারীদের হামলা

মানবজমিন ডেস্ক

২৩ জুলাই ২০১৯, মঙ্গলবার, ৯:১১ পূর্বাহ্ন

হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালিয়েছে মুখোশ ও সাদা-পোশাকধারীরা। হামলায় আহত হয়েছেন অন্তত ৪৫ জন। বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেছেন, তাদের ওপর হামলার সময় নীরব ভূমিকা পালন করেছে পুলিশ। হামলাকারীদের পরাহত করতে নেয়নি কোনো পদক্ষেপ। রোববার সন্ধ্যায় এই ঘটনা ঘটে। এ খবর দিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও উদ্ধৃত করে খবরে বলা হয়, রোববার সন্ধ্যায় সাদা পোশাক ও মুখোশ পরিহিত কয়েক ডজন মানুষ হংকংয়ের ইউয়েন লংয়ে রড নিয়ে বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালায়। এতে অনেকে গুরুতরভাবে আহত হয়। আহতদের মধ্যে সাধারণ মানুষ, সংবাদকর্মী, প্রসূতি নারী ও একটি নবজাতক শিশুর মা রয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
প্রসঙ্গত, রোববার সরকার-বিরোধী বিক্ষোভে নামে হংকংয়ের হাজারো মানুষ। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে দাঙ্গা পুলিশ। পরে বিশৃঙ্খল পরিবেশের মধ্যে বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালায় সাদা পোশাক পরিহিতরা। এক নারী বিক্ষোভকারী হামলা নিয়ে বলেন, তারা বাছবিচারহীনভাবে সবাইকে মেরেছে। এমনকি কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিল, এমন মানুষকেও পিটিয়েছে। কয়েকজন পুরুষ আমাদের রক্ষা করছিল। তারা হামলাকারীদের সঙ্গে লড়তে যায়নি। নয়তো আমরা আরো বেশি মার খেতাম। তারা নারী ও শিশুদেরও ছাড়েনি। ভিডিও থেকে দেখা যায়, এক নারী সাংবাদিককেও ভিডিও করার দায়ে মারা হচ্ছে।
কোথায় ছিল পুলিশ?
হামলা শুরুর বেশ কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। ততক্ষণে স্থানত্যাগ করে চলে যায় হামলাকারীরা। পরে পুলিশ চলে গেলে ফের হামলা চালায় মুখোশধারীরা। বিক্ষোভকারীদের দাবি, এই হামলা চালিয়েছে চীনা সন্ত্রাসীরা। স্থানীয় প্রশাসন তাদেরকে হামলা চালানোর জন্য চীন থেকে নিয়ে এসেছে। হংকংয়ের ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা লাম চিয়ুক-টিং হামলাটিকে সংগঠিত অপরাধ হিসেবে বর্ণনা করে সাংবাদিকদের উদ্দেশে প্রশ্ন ছোড়েন, হংকং কি এখন সন্ত্রাসীদের যা ইচ্ছা তাই করতে অনুমোদন দিচ্ছে? রাস্তার মাঝে মানুষজনের ওপর অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানোর অনুমতি দিচ্ছে? গণতন্ত্রপন্থি অপর এক আইনপ্রণেতা রে চান টুইটে বলেন, বিশ্বের মধ্যে জনসংখ্যার অনুপাতে সবচেয়ে বেশি পুলিশ সদস্য রয়েছে হংকংয়ের। হামলার সময় তারা কোথায় ছিল?
চীনা সন্ত্রাসীদের নিয়োগ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ?
অধিকারকর্মীরা দাবি করেন, ২০১৪ সালে একটি গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভে বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালাতে চীনা সন্ত্রাসীদের নিয়োগ দিয়েছিল হংকং কর্তৃপক্ষ। এবারও তেমনটি হয়েছে বলে মনে করছেন তারা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায় যে, সাদা পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাদের বুড়ো আঙুল দিয়ে ইতিবাচক ইঙ্গিত দিচ্ছেন স্থানীয় আইনপ্রণেতা জুনিয়াস হো। তিনি ইউয়েন লংয়ের বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে চীনা সন্ত্রাসীদের নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে।
তবে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে তিনি সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ওই হামলার সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই তার। পরে সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করেন, কেন তিনি তাৎক্ষণিকভাবে হামলার বিষয়ে পুলিশদের অবহিত করেননি? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার চোখে হামলাকারীদের দেখতে বিক্ষোভকারীদের মতো আমজনতাই লাগছিল।
সোমবার ইউয়েন লংয়ের নিকটবর্তী একটি গ্রামে সাদা পোশাকধারীদের একটি দলের খোঁজ পাওয়া যায়। কিন্তু সেখান থেকে কাউকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। তারা জানায়, কারা কারা হামলায় জড়িত ছিল সে বিষয়ে নিশ্চিত নয় তারা। তাই কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব নয়।


   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status