বাংলারজমিন
দুর্ভোগে অতিষ্ঠ লাখো মানুষ
খালিদ হাসান, শিবগঞ্জ (বগুড়া) থেকে
২০ জুলাই ২০১৯, শনিবার, ৮:১১ পূর্বাহ্ন
দুর্ভোগ, উৎকণ্ঠা আর আতঙ্কের নাম মোকামতলা-সোনাতলা সড়ক। রাস্তাটি নিয়ে কষ্টের সীমা নেই এ রাস্তায় চলাচলকারী লাখ লাখ মানুষের। দীর্ঘ সাত বছরেও সংস্কারের মুখ না দেখা এই রাস্তাটির বেহাল দশা জনমনে চরম অশান্তি আর ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। দিন যত যাচ্ছে ততোই গভীর খানাখন্দগুলো হচ্ছে আরো গভীরতর। আর একটু বৃষ্টিতেই রাস্তাটি পানির নিচে তলে যাওয়ায় রীতিমতো ছোটখাটো খালের রূপ ধারণ করছে। চলাচলের অযোগ্য এ রাস্তার উপর ক্ষোভে-দুঃখে ধানের চারা লাগিয়ে নীরব প্রতিবাদও জানিয়েছে এলাকাবাসী। রাস্তাটির বেহালদশায় জনগণের মুখে মুখে এখন সরকারের সমালোচনা। যদিও রাস্তাটির ১৮ কিলোমিটার মেজর মেরামতের জন্য বিগত বছরের মে মাসে প্রথমে ৩০ কোটি টাকা ও পরে ৪৫ কোটি টাকা নির্মাণ ব্যয় ধরে প্রকল্প অনুমোদন দেয় সরকার। কিন্তু এক বছরেও কাজ শুরুর কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি। এ ব্যাপারে গত ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত বিভিন্ন গণমাধ্যমে রাস্তাটির বেহাল দশার চিত্র তুলে ধরে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সে সময় সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামান জানিয়েছিলেন দুই সপ্তাহের মধ্যই কাজ শুরু হবে। কিন্তু এর পর যতবার তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে তিনি ততবারই বলেছেন দুই সপ্তাহের মধ্যই কাজ শুরু হবে। ইতিমধ্যই টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ করা হলেও অজানা কারণে বন্ধ রয়েছে কাজ। কিন্তু কাজ শুরুর অপেক্ষায় দিন-মাস-বছর কেটে গেলেও কাটেনি এ রাস্তায় চলাচল কারী মানুষের দুর্ভোগ। বুধবার সরজমিনে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মোকামতলা-সোনাতলা রোডের রাস্তাটি গভীর খানা-খন্দে ভরা। পানি নিষ্কাশনে নেই কোনো ব্যবস্থা। রাস্তার দু’পাশে গড়ে ওঠা অসংখ্য দোকান দখল করে নিয়েছে রাস্তার অনেকটা অংশ। বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকায় বাধ্য হয়েই রাস্তা নামের এই খাল দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষদের। বিশেষ বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে রোগীদের। রাস্তাটি দিয়ে শিবগঞ্জ, সোনাতলা ও সাঘাটা এই তিন উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ প্রতিনিয়ত যাতায়াত করে। সংস্কার না করায় বাস, ট্রাক, সিএনজিসহ সব রকমের হালকা ও ভারী যানবাহন চলা এ ব্যস্ততম সড়ক এখন চলাচলের উপযোগিতা হারিয়েছে। এ ব্যাপারে মোকামতলা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ফজলে এলাহী মিলন জানান, সড়কটি খুব অবহেলিত।আমাদের প্রতিনিয়ত এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয়। খানাখন্দে ভরা এই রাস্তা দিয়ে বর্ষামৌসুমে চলাচল করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। কাদাপানি দিয়ে জামাকাপড় নষ্ট হয়ে যায়। আমাদের ছাত্র ছাত্রীরাও খুব কষ্টে চলাচল করছে। এ ব্যাপারে কথা হয় সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামানের সাথে। তিনি দৈনিক মানবজমিনকে জানান, ৪৫ কোটি টাকা সংস্কার ব্যায় ধরে টেন্ডারের মাধ্যমে ইতিমধ্যে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। পুরো প্রকল্পটির কাজ শেষ করতে আগামী বছরের জুন মাস পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান, মোকামতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে ৫শ মিটার রাস্তার মেজর মেরামত (ঢালাই) করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।