বিশ্বজমিন

অভিবাসী ছিলেন ট্রাম্পের দাদা, ঠাঁই পাননি নিজদেশে

মানবজমিন ডেস্ক

১৮ জুলাই ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ১১:০৮ পূর্বাহ্ন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই কট্টর অভিবাসন নীতিমালা প্রণয়ন করেছেন। মুসলিম দেশগুলোতে নিষেধাজ্ঞা, অভিবাসীদের ফিরিয়ে দেয়া, সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ করা, শরণার্থী শিশুদের বাবা-মা থেকে আলাদা করে আশ্রয়কেন্দ্রে আটকে রাখাসহ বহু বিতর্কিত পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি। সর্বশেষ বিদেশি বংশোদ্ভূত চার নারী কংগ্রেস সদস্যকে আমেরিকা ছেড়ে যেতে বলে তীব্র সমালোচনার শিকার হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু তিনি নিজেই একজন অভিবাসীরই বংশধর। তার স্ত্রী মেলানিয়াও অভিবাসী। আর ট্রাম্পের দাদা ফ্রেডরিক ছিলেন বর্তমান জার্মানির অংশ বাভারিয়ার নাগরিক। সেখানে ঠাঁই না পেয়ে নিউ ইয়র্কে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন। নিজ জন্মভূমি থেকে বিতাড়িত হওয়ার আগে সেখানে থাকার অনুমতি চেয়ে বাভারিয়ার তৎকালীন শাসক বরাবর একটি চিঠি লিখেছিলেন ফ্রেডরিক। সে চিঠির একটি অনুবাদ সম্প্রতি প্রকাশ করেছে হার্পাস পত্রিকা।

হার্পাস পত্রিকার প্রতিবেদন অনুসারে,  ষোলো বছর বয়সে ভাগ্যের সন্ধানে ছেড়ে আমেরিকায় যান ফ্রেডরিক। সেখানে নাপিত হিসেবে কাজ শুরু করেন। ধীরে ধীরে খুলে বসেন রেস্তোরা,  গণিকালয় সহ নানা ব্যবসা। কিন্তু আমেরিকায় আবহাওয়ায় খাপ খাওয়াতে পারছিলেন না তার স্ত্রী। স্ত্রীর জন্য ১৯০৫ সালে বাভারিয়ায় ফিরে যান ফ্রেডরিক। কিন্তু বাভারিয়ায় তার ঠাঁই হয়নি।
বাভারিয়ার তৎকালীন শাসনব্যবস্থা অনুসারে, দেশের সকল তরুণদের একটা নির্দিষ্ট সময় সামরিক বাহিনীতে কাজ করা বাধ্যতামূলক ছিল। ফ্রেডরিক ওই সেবা দেননি। আমেরিকা যাওয়ার বিষয়টিও নিজের দেশে সরকারিভাবে নথিভুক্ত করান নি। এসব কারণে ‘কিংডম অব বাভারিয়া’ ছেড়ে চলে যেতে বলা হয় তাকে। সে সময় দেশে থেকে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে ‘প্রিন্স রিজেন্ট অব বাভারিয়া’কে একটি চিঠি লিখেছিলেন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাদা।

ফ্রেডরিক তার চিঠিতে, নিজ জন্মভূমি থেকে বিতাড়িত হওয়ার যন্ত্রণার কথা লিখেছিলেন। বাভারিয়া ছাড়ার জন্য তাকে মাত্র আট সপ্তাহ সময় দেয়া হয়েছিল। এ নিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘বাভারিয়া ছাড়ার নির্দেশটা তার কাছে বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো। সৎ নাগরিকদের কাছে এটা অত্যন্ত দুঃখের।’ তবে ওই চিঠিতে কাজ হয়নি। বাভারিয়া ছাড়তেই হয় ফ্রেডরিককে। এরপর বাধ্য হয়ে নিউইয়র্কে অভিবাসন করে, সেখানেই স্থায়ীভাবে বাস করা শুরু করে তার পরিবার।

ফ্রেডরিক ট্রাম্পকে নিজদেশ থেকে বিতাড়িত হয়েছিল। আর বর্তমানে অনেক শরণার্থী বা অভিবাসন প্রত্যাশীও নিজদেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে বা সহিংসতা, দুর্দশা থেকে পালাতে আমেরিকায় অভিবাসন করার চেষ্টা করেন। কিন্তু ফ্রেডরিক যেমনভাবে আমেরিকায় ঠাঁই পেয়েছিলেন, তার নাতির আমলে অভিবাসীরা সে সুযোগ পাচ্ছেন না। যদিও জার্মানি এখন লাখ লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। তা সত্ত্বেও কোনোরকম অপরাধমূলক অভিযোগ ছাড়াই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে অসংখ্য অভিবাসীকে। সম্প্রতি অভিবাসীদের ওপর আরো চড়াও হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status