অনলাইন

এরশাদকে রংপুরে সমাহিত করতে না দিলে হরতাল

স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর থেকে

১৫ জুলাই ২০১৯, সোমবার, ৯:১১ পূর্বাহ্ন

এরশাদকে রংপুরে সমাহিত করতে না দিলে লাগাতার হরতালের ঘোষণা দিয়েছেন স্থানীয় জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা। এরশাদের সমাধি নিয়ে যেকোন ষড়যন্ত্র রুখে দিতে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের নেতাকর্মীরা প্রস্তুত রয়েছে বলে হুশিয়ার করেন তারা।
এরশাদের মৃত্যুতে রংপুর জুড়ে চলছে শোকের মাতম। নগর জুড়ে লাগানো হয়েছে কালো পতাকা। মোড়ে মোড়ে মাইকে বাজানো হচ্ছে কোরআন তেলাওয়াত। বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, পেশাজীবী সংগঠনের শোক ব্যানারে ছেয়ে গেছে রংপুরের রাস্তাঘাট, অলি-গলিসহ সর্বত্রই। মাইকে এরশাদের জানাজার সময়সূচি ঘোষণা করে জানাজায় শরীক হওয়ার আহ্বান জানাতে নগরজুড়ে চলছে সমানতালে প্রচারণা। সেন্ট্রাল রোডস্থ দলীয় কার্যালয় ছেয়ে গেছে নেতাকর্মীদের শোক ব্যানারে।

সোমবার সকালে দলীয় কার্যালয়ে রংপুর-রাজশাহী বিভাগ জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে জরুরী সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি ও সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, আমরা প্রিয়নেতার সমাধি করতে ঢাকায় দুটি স্থান পছন্দ করে ছিলাম, সেখানে তাকে জায়গা দেয়া হয়নি। তাকে বনানী সামরিক কবরস্থানে দাফন করে সাধারণ মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন করার একটি অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। শরীরের এক ফোঁটা রক্ত থাকতে সেখানে আমরা তাকে সমাহিত করতে দিব না। মঙ্গলবার যথাযোগ্য মর্যাদায় আমাদের প্রিয়নেতার লাশ ক্যান্টনমেন্ট থেকে নিয়ে কালেক্টর ঈদগাহ মাঠে নিয়ে আসা হবে। সেখানে বৃহৎ জানাজা হবে। যখন এরশাদের দুঃসময় ছিলো তখন লাখো জনতার ঢল নেমেছিলো, সেটি আমরা আগামীকাল দেখতে পাবো। যে পল্লী নিবাস থেকে তিনি রাজনীতি করেছেন, যে পল্লী নিবাসকে তিনি নতুনভাবে গড়েছেন, সেখানেই তাকে সমাহিত করা হবে।

মোস্তফা আরও বলেন, কেন্দ্রের গুটি কয়েক নেতাকর্মীদের দালালীপনা, স্বার্থান্বেষী সিদ্ধান্তের কারণে এরশাদের লাশ ঢাকায় ফেরত নেয়ার চেষ্টা চলছে। ঢাকায় দাফনের চেষ্টা চালালে রক্ত দিয়ে এর প্রতিবাদ করা হবে। এরশাদের সঙ্গে তার হাজার সৈনিককে দাফন করে তবেই লাশ ঢাকায় নিয়ে যেতে হবে। পর্দার আড়ালে যেসব মুখোশধারী নেতারা কলকব্জা নাড়ছে, তাদেরকে চিহ্নিত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
জাতীয় পার্টির মহানগর সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির বলেন, এরশাদের লাশ ঢাকা থেকে রংপুরে না আনার ষড়যন্ত্র চলছে। আবহাওয়া খারাপের অজুহাত দেখিয়ে লাশ না আনার পায়তারা চলছে। লাশ নিয়ে আসা নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হলে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে লাগাতার হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে।

এদিকে রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ ময়দানে ত্রিপলের নিচে সামিয়ানা ও তার নিচে আলাদা করে একটি মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে এরশাদের লাশ রাখার জন্য। তারপাশে সাদা কাপড় দিয়ে বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে।
এদিকে এরশাদের জন্মস্থান আদি পৈত্রিক বাড়ি দিনহাটা থেকে এরশাদকে শেষবারের মত দেখতে তার ভাতিজা আহসান হাবীব ছুটে এসেছেন রংপুরের পল্লী নিবাসে।

আহসান হাবীব বলেন, রোববার এরশাদের মৃত্যুর খবর দিনহাটায় পৌঁছালে সেখানে শোকের ছায়া নেমে আসে। তিনি যে স্কুলে লেখাপড়া করেছেন দিনহাটা উচ্চ বিদ্যালয় সঙ্গে সঙ্গে ছুটি ঘোষণা করা হয়। সোমবারও স্কুল বন্ধ রয়েছে। একজন সাবেক রাষ্ট্রপতির মৃত্যু হয়েছে, আমাদের দেশের সাবেক রাষ্ট্রপতির মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়। কিন্তু, এখানে তার কিছুই নেই। যেটি দেখে আমি খুবই মর্মাহত হয়েছি। বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবেও তার কবর জনসম্মুখে হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্ত কি হচ্ছে তা আমি বুঝতে পারছি না। এদিকে এরশাদের পল্লী নিবাস বাসভবনের পাশে এরশাদের বাবার নামে করা মকবুল হোসেন জেনারেল ও ডায়াবেটিক হাসপাতালের লিচু গাছের তলায় এরশাদেকে সমাহিত করতে কবর খোড়ার কাজ শুরু হয়েছে। বিকেলে সিটি কর্পোরেশনের মেয়রসহ স্থানীয় জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা সেখানে গিয়ে জায়গা নির্ধারণ করে দেন। এরশাদের নিজ হাতে লাগানো লিচুবাগানেই তাকে সমাহিত করার আয়োজন করা হয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status