বাংলারজমিন

ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে বন্যা, দুর্ভোগে লাখো মানুষ

বাংলারজমিন ডেস্ক

১৫ জুলাই ২০১৯, সোমবার, ৯:০২ পূর্বাহ্ন

ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে দেশের প্রায় ২২ জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। বন্যাদুর্গত এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অঘোষিত ছুটি চলছে। বানভাসি মানুষ গবাদিপশু নিয়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্টরা বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতির আশঙ্কা করছেন। বিস্তারিত আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্টে-

ওসমানীনগরে অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত
ওসমানীনগর (সিলেট) প্রতিনিধি: সিলেটের ওসমানীনগরে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত কয়েক দিন ধরে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় কুশিয়ারা ডাইকের সাদীপুর ইউপির শেষ সীমানা ও নবীগঞ্জের প্রবেশদ্বার ইসলামপুরে ডাইকের প্রায় ৩০/৪০ ফুট অংশ ভেঙ্গে গিয়ে সাদীপুর ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী গ্রামসহ ডাইকের ভেতরে প্রায় ১৫টি গ্রামসহ উপজেলার গোয়ালাবাজার, উমরপুর, পশ্চিম পৈলনপুর ও তাজপুরসহ বন্যার পানিতে অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে অর্ধশত গ্রামের শহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট বাজার ডুবে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এসব গ্রামের মানুষ। এ ছাড়াও কুশিয়ারা ডাইকের ইসলামপুরের তিন স্থানসহ আরো একাধিক স্থানে ফাটলসহ নদী থেকে পানি উপচে পড়ে ডাইকের ভেতরে থাকা সাদিপরু, উমরপুর, বুরুঙ্গা, পশ্চিম পৈলনপুর ও গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ইতিমধ্যে ডাইক ভেঙ্গে ও নদীর পানি উপচে পড়ে সাদীপুর ইউনিয়নের লামা তাজপুর, পূর্ব তাজপুর, সৈয়দপুর, দক্ষিণ তাজপুর, টুকরাগাঁও, ইসলামপুর, সুরিকোনা, গালিমপুরের বাজার, দক্ষিণ কালনীচর, সম্মানপুর, গালিমপুর, মাধবপুর, নোয়াগাঁও, ভেড়ারচর, আন্দাইরকোনা, লামা গাভুরটিকি, সুন্ধিখলা, ভেরারাই, খসরুপুর গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের মোবারকপুর জহিরপুর, জায়ফরপুর, উমরপুর ইউপির মজলিশপুর, শিবপুর, সৈয়দপুর, ভরাউট, আবদুল্লাপুর, তাজপুর ইউপির কাদিপুর, সাইরদা, খালপাড়, চরইসবপুর, আইলাকান্দি, কমরপুরসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে পানি প্রবেশ করায় হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিসের হিসাব অনুযায়ী শুধু সাদীপুর ইউপিতে ১৫শ’ পরিবার পানিবন্দি রয়েছে।

শাল্লার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
শাল্লা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: শাল্লা উপজেলাসহ সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিনের ন্যায় রোববার সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। তবে স্থির রয়েছে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি। ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে ভাটির উপজেলা শাল্লার নদ-নদীসহ হাওরের পানি। এতে করে উপজেলার ৪ ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি নতুন নতুনপাড়া, স্কুল কলেজ বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, উজানে ঢল এবং অবিরাম বৃষ্টির কারণে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে বিভিন্ন গ্রাম। পানির নিচে তলিয়ে গেছে বিভিন্ন কাঁচা-পাকা সড়ক।

চিলমারীতে ৬৬ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ
চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: শীত, খরা, ভাঙন এবার দুর্ভোগ নিয়ে এলো বন্যা। বন্যার এই পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্রতিদিন প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। তলিয়ে যাচ্ছে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, সড়ক বাদ যাচ্ছে না শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। টানা বর্ষণ, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কুড়িগ্রামের চিলমারীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে ফলে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় উপজেলা প্রায় ৬৬ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জানা গেছে, গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ সঙ্গে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বৃদ্ধি পায় ব্রহ্মপুত্রের পানি আর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় একে একে তলিয়ে যাচ্ছে চিলমারীর বিভিন্ন এলাকা। ডুবে গেছে বিভিন্ন রাস্তাঘাট। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ২০ হাজার পরিবারসহ প্রায় ৭০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পানিবন্দি হওয়ায় মাধ্যমিক পর্যায়ে ১০টি ও প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫৬টির মতো প্রতিষ্ঠান পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

কসবা রেলস্টেশন কার্যালয় পানির নিচে
কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি: কয়েকদিনের টানা ভারি বর্ষণে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা রেলস্টেশনের কার্যালয় পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে করে মাস্টারের কার্যালয়ে রাখা ব্যবহারবিহীন টিকিট, জেনারেটর, ব্যাটারিসহ আসবাবপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কার্যালয়ের ভিতরে পানি থাকায় দৈনন্দিন কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে।

অপরদিকে কসবা উপজেলার ব্রাহ্মণগ্রাম রেলসেতু এলাকায় রেললাইন থেকে মাটি সড়ে যাওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে ট্রেন চলাচল করছে। রেলওয়ে স্টেশন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আখাউড়া-লাকসাম রেলওয়ের ডাবল লাইনের কাজ চলছে। গত কয়েকদিন ধরে টানা বর্ষণ হচ্ছে। বৃষ্টির পানি সড়নোর কোন লাইন নেই। প্লাটর্ফমসহ আশেপাশের পানি কসবা রেলস্টেশনের মাস্টারের কার্যালয়ে প্রবেশ করছে। গত চারদিন ধরে মাস্টারের কার্যালয়ে হাঁটুপানি রয়েছে।

গঙ্গাচড়ায় পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ
গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি: রংপুরের গঙ্গাচড়ায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত অবস্থায় আছে। কয়েক ধরে অব্যাহত বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গত কয়েকদিন তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ছিল। গতকালও ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে তিস্তার পানি প্রবাহিত হয়। ফলে পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ কাটেনি। তারা অতিকষ্ঠে জীবনযাপন করছে। উপজেলার তিস্তা কবলিত ৭টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলসহ চর এলাকা তলিয়ে বন্যার সৃষ্টি হলে ১০ হাজারেও অধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। কয়েকদিন ধরে পানিবন্দি হয়ে থাকা মানুষজন কোনোরকম খেয়ে না খেয়ে দিন অতিবাহিত করছে। টানা পানিতে তলিয়ে থাকা বিভিন্ন আবাদি ফসল নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।  

রৌমারীতে বন্যা ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে
রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: গত কয়েক দিনের ভারি বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে রৌমারীতে বন্যা ভয়াবহ রূপ নিতে শুরু করেছে। ব্রহ্মপুত্রসহ উপজেলার ৬টি নদ-নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বলদমারা, খঞ্জনমারা, পালেরচর এলাকার বেড়িবাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। এর আগে ওই এলাকার পাকা সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এ মুহূর্তে ডিগ্রিরচর এলাকার ভারতের কালিহাতি বিএসএফ ক্যাম্প সংলগ্ন সীমান্তের বেড়িবাঁধ রাত জেগে পাহারা দেয়া হচ্ছে। এ বাঁধ ভেঙে গেলে তলিয়ে যাবে গোটা রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলা। বেশ কিছু এলাকায় কাঁচা রাস্তা ভেঙে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন মানুষ। ডুবে যাওয়া এলাকাগুলোতে খাবার পানির সমস্যা দেখা দিয়েছে।

গাইবান্ধায় ধসে গেছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ
সিদ্দিক আলম দয়াল, উত্তরাঞ্চল থেকে: গাইবান্ধা, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের নদী সংলগ্ন এলাকা ও চার জেলার চরাঞ্চলসহ অন্তত ৯০টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানির কারণে ওইসব এলাকায় গবাদিপশু ও মানুষ এক সঙ্গে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ত্রাণ সহযোগিতার কথা শোনা গেলেও নদীর চরাঞ্চল ও দুর্গত এলাকার লোকজন ত্রাণ পায়নি বলে অভিযোগ করেন। তারা জানান, সরকারি সহযোগিতা পেলে তারা নতুন আশ্রয় ও উঁচু স্থানে যাওয়ার সুযোগ পেতেন। গাইবান্ধায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবহেলার কারণে গতকাল দুপুরে গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র নদীর পানির তোড়ে বাগুড়িয়া নামক স্থানে বাঁধের ১শ’ ফিট অংশ ধসে গেছে। ফলে এলাকার প্রায় ৭ শতাধিক বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। বুক পানিতে তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি ও ফসলাদি। লোকজন কোনো মতো তাদের গবাদি পশু ও কাঁথা বালিশ নিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয়ের জন্য মালামাল স্তূপ করে রেখেছে। কোথায় যাবে তার কোনো ঠিকানা নেই। এই হতাশায় এলাকার লোকজন ডুবে ডুবে তাদের ডুবন্ত ঘর থেকে যতটুকু পারেন মালামাল সরিয়ে নিয়ে আসছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুযায়ী যমুনা ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি ৭৮ এবং ঘাঘট নদীর পানি বিপদসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে গাইবান্ধার ফুলছড়ি, সাঘাটা, সুন্দরগঞ্জ ও গাইবান্ধা সদর উপজেলার চরাঞ্চলসহ নদী তীরবর্তী অন্তত ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি। তিস্তা যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে আরো নতুন নতুন এলাকা ডুবে যাচ্ছে।

জামালপুরে ১৯ ইউনিয়ন প্লাবিত
জামালপুর প্রতিনিধি: উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও  অতি বৃষ্টির কারণে জামালপুরে চারটি উপজেলায় মোট ১৯টি ইউনিয়ন বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়াও জামালপুর সদর, মেলান্দহ ও বকশীগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ সকল অঞ্চলের প্রায় ৬৭ হাজার মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। বন্যার পানি প্রবেশ করায় তিন উপজেলায় মোট ৬৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় একটি মাদরাসা ও ৫টি উচ্চ বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

গোলাপগঞ্জে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি
গোলাপগঞ্জ (সিলেট) প্রতিনিধি: গোলাপগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। অবিরাম বৃষ্টির ফলে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত করেছে। সুরমা, কুশিয়ারার ডাইক ভেঙ্গে সবক’টি পয়েন্টে বানের পানি বিপদ সীমার ২ থেকে আড়াই ফুট ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উত্তর বাদেপাশা ইউনিয়নের আছিরগঞ্জ, বাগলা, রাকুয়ার বাজার, ডেপুটি বাজারের পাশে কুশিয়ারার পানি বিপদ সীমার ৩ ফুট ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সেই সঙ্গে তলিয়ে গেছে কৃষকের বীজতলা এবং গোচারণ ভূমি, ফলে গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে সবক’টি আক্রান্ত। বন্যার কবলে কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। সুরমা কুশিয়ারার ভাঙনে প্রায় শতাধিক ঘর বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

রূপগঞ্জে ১৬ গ্রাম প্লাবিত
স্টাফ রিপোর্টার, রূপগঞ্জ থেকে: কয়েক দিনের টানা বর্ষণের ফলে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে কমপক্ষে ১৬ গ্রামের জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের খাল, শীতলক্ষ্যা থেকে আসা খালের বিভিন্ন স্থানে মিলকারখানার বর্জ্যে ও খালের আশেপাশে বসবাসকারী মানুষেরা ময়লা আবর্জনা ফেলে পানি যাতায়াতে বাধা সৃষ্টি করার ফলে বৃষ্টির পানি জমে কৃত্রিম বন্যায় রূপ নিয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের। গ্রামগুলো প্লাবিত হওয়ার কারণে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছে না। বাড়িঘরে পানি উঠে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। বহু কষ্টে পানি দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে এলাকাবাসীর। রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সূত্র থেকে জানা যায়, রূপগঞ্জে ছোট বড় সব মিলিয়ে প্রায় ৮ শতাধিক মিল-কারখানা রয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লোকজন এখানে জমি ক্রয় করে গড়ে তুলেছেন বহু ঘরবাড়ি। মিল-কারখানার বর্জ্য সরাসরি পানি উন্নয়ন বোর্ডের খাল ও শীতলক্ষ্যা নদী থেকে আসা খালে ফেলা হচ্ছে। অনেক স্থানে খাল ভরাট করে পাকা আধা পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেছে প্রভাবশালীরা। এতে খাল দিয়ে পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হচ্ছে।

পানিবন্দি মেঘনা পাড়ের মানুষ
লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি: ভোলার লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের কামারের খাল এলাকার স্লুইচ গেইটটি দীর্ঘ ২ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। যার ফলে গত এক সপ্তাহের মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ার কারেণ ওই এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এতে এলাকার পথঘাট, বীজতলা, পুকুরসহ সব কিছু বর্তমানে পানির নীচে তলিয়ে রয়েছে। এ ছাড়াও মাছ চাষের পুকুরে পানি অধিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় লাখ লাখ টাকার মাছ চলে যাচ্ছে অন্যত্র।

লামায় ভয়াবহ বন্যা, নিহত ১
লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি: টানা বর্ষণে ২য় বারের মতো বড় ধরনের বন্যায় প্লাবিত হয়েছে বান্দরবানের লামা উপজেলা। রোববার ভোররাত থেকে অস্বাভাবিক গতিতে বাড়তে থাকে সকল নদ-নদী, খাল ও ঝিরির পানি। উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল জানান, মুহূর্তে উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজারের অধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। লামা বাজারসহ আশপাশের সকল এলাকায় পানিতে ডুবে যায়। এ ছাড়া ২ সহস্রাধিক বসতবাড়ি পাহাড় ধসে সম্পূর্ণ ও আংশিক ক্ষতি হয়েছে। রোববার (১৪ই জুলাই) রাত ২টায় লামা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড পশ্চিম মধুঝিরি এলাকায় পাহাড় ধসে বসতবাড়িতে মাটি চাপা পড়লে নুরজাহান বেগম (৫৫) নামে এক নারী মারা যান ও একই পরিবারের ৬ জন আহত হয়েছেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status