বাংলারজমিন

সৌদি থেকে ফোন

কটিয়াদীর বিলকিসের লাশ মরুভূমিতে

কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

৯ জুলাই ২০১৯, মঙ্গলবার, ৯:০৪ পূর্বাহ্ন

রোববার সকাল অনুমান ৯টা। সৌদি থেকে একটি ফোন আসে বিলকিসের স্বামীর কাছে। হ্যালো বলতেই ওপাশ থেকে জানায় রিয়াদের নিকটবর্তী পাহাড়ি এলাকার মরুভূমিতে বিলকিসের (৩৩) লাশ পাওয়া যায়। এর পর থেকেই শোকের মাতম চলছে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরি ইউনিয়নের উত্তর লোহাজুরি গ্রামের বিলকিসদের বাড়িতে। ২০-২২ দিন আগে বিলকিস বেগম তার স্বামী নিয়াশা মিয়ার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় জানিয়েছিলেন, গৃহকর্তা তাকে নানাভাবে নির্যাতন করে। আর আমি যাতে এসব বিষয় কাউকে জানাতে না পারি সেজন্য ফোন নিয়ে যাওয়ারও হুমকি দিয়েছে। তার পরদিন থেকেই বিলকিসের ফোন বন্ধ পাওয়া যাওয়ায়। তার সঙ্গে আর স্বামী কিংবা পরিবারের কেউ যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। পরিবারের লোকজন চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে সময় কাটাচ্ছিলেন। এরপর গত রোববার মুঠোফোনে সংবাদ আসে বিলকিসের লাশ পড়ে আছে মরুভূমিতে। এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে বিলকিস বেগমের গ্রামের বাড়িতে। সংবাদ পেয়ে শোকার্ত এলাকাবাসীর ঢল নামে। বিলকিসের ছোট্ট দুটি মেয়ে ও দুটি ছেলে শিশুকে জড়িয়ে ধরে বিলাপ করছিল শাশুড়ি ও অন্য স্বজনরা। খবর পাওয়ার পর স্বামী নিয়াশা মিয়া বিলকিসের গৃহকর্তার ফোনে অসংখ্যবার ফোন করেন। কিন্তু রিং হলেও কেউ ধরেনি। এ পরিস্থিতিতে তিনি লোকাল দালাল আলম এবং রিক্রুটিং এজেন্সি ঢাকার সেগুনবাগিচার মেসার্স ঝুমুর ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারা রিয়াদে যোগাযোগ করে ঘটনাটি জেনে নিশ্চিত হয়ে জানানোর আশ্বাস দিলেও, তারা কোনো সংবাদ দিতে পারেনি। ঝুমুর ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজহারুল ইসলামের মোবাইল ফোনে কল দিলে হাবিবুর রহমান পরিচয় দিয়ে অফিসের এক ব্যক্তি জানান, বিলকিস মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিতের জন্য রিয়াদে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এ ছাড়া ঢাকায় অবস্থানরত এ কোম্পানির এজেন্ট এক সৌদি নাগরিককেও এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানাতে খবর দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, পরিবারের অভাব ঘুচাতে মাত্র চার মাস আগে স্থানীয় দালাল দক্ষিণ লোহাজুরি গ্রামের বড় বাড়ির হাছেন বেপারির ছেলে আলম মিয়াকে ধরে ওই রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে গৃহকর্মীর কাজ করতে সৌদি আরব পাড়ি জমিয়েছিলেন কৃষি শ্রমিক নিয়াশা মিয়ার স্ত্রী বিলকিস বেগম। ওই দালাল আলমের হাত ধরে একই রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কিছুদিনের ব্যবধানে এ গ্রামের বিভিন্ন বয়সের ১২ নারী কর্মী সোদি আরবে প্রেরণ করেন। কেউ আবার নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে দেড় মাসের মাথায় গুরুতর মরণব্যাধিতে আক্রান্ত থাকার কৌশল অবলম্বন করে দেশে ফিরে আসেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status