বাংলাদেশ কর্নার

‘বাংলাদেশ-ভারত’ ম্যাচে জাল টিকিট!

স্পোর্টস রিপোর্টার, বার্মিংহাম থেকে

৩০ জুন ২০১৯, রবিবার, ৯:১৬ পূর্বাহ্ন

সকাল থেকেই বাংলাদেশ টিম হোটেলের সামনে ভক্তদের ভিড়। সেই ভিড় বাড়তে লাগলো দ্রুতই। কারণ সেখানে যোগ দিয়েছে ভারতের দর্শকরাও। দুই দলের ভাক্তদের মধ্যে সে কি উন্মাদনা। কোনো ক্রিকেটারকে দেখলেই ছুটে যাচ্ছেন সেলফি তুলতে। কিন্তু ভারতের দর্শকদের রাগের শেষ নেই। তারা তাদের প্রিয় ক্রিকেটারদের কাছে ঘেষতেই পারছে না। তবে এক ভারতীয় সমর্থক বেশ খুশি বাংলাদেশ দলের উপর। বলেই ফেললেন, ‘আমাদের ক্রিকেটাররা যেন চাঁদ থেকে এসেছে। ওরা (বাংলাদেশ) কত ভালো । মাশরাফিওতো এখন সবচেয়ে দামি অধিনায়ক। ওর মতো অধিনায়ক এখানে কটা আছে?  সেতো কি সুন্দর ছবি তুললো। আজ আমার গোটা বাংলাদেশ দলের সঙ্গে ছবি তোলা হয়ে গেছে।’ সেই সঙ্গে চলছে কে কিভাবে মাঠে যাবে কিভাবে টিকিট পাবে সেই আলোচনাও। অন্যদিকে ভক্তদের এই উন্মাদনার আড়ালে ‘বাংলাদেশ-ভারত’ ম্যাচের টিকিটের দাম ফুলেফেপে উঠছে। সেই সুযোগে এখানেও প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে বেশ কয়েকটি অনলাইন। এখানেই শেষ নয় মাঠের বাইরে উচ্চমূল্যে ধরিয়ে দেয়া হয় জাল টিকিট। হোটেলের সামনে ভিড় করা বেশ কয়েকজন সমর্থককে দেখা গেলো এ বিষয়ে অন্যদের সতর্ক করতে। বলেন, ‘এই যেখানে সেখানে টিকিটি কিনোনা, জাল টিকিট কিন্তু এখন ছড়াছড়ি। এই দেখ আমি টিকিট আনতে পারলাম না, ঠিকই ১৫০ পাউন্ড নিয়ে গেছে আমার কাছ থেকে।’
টিকিট আসলে কিনতে হয় আইসিসির ওয়েবসাইট থেকে। সেখান থেকে অনলাইনে টিকিটের নিশ্চিতকরণ কাগজটি নিয়ে কাউন্টারে দিলেই মিলে আসল টিকিট। এছাড়াও সরাসরি বুথ থেকেও কেনা যায়। তাই জালিয়াতি হচ্ছে দুই রকমের। একটি অনলাইনের নিশ্চিতকরণ কাগজ বিক্রি হচ্ছে। আবার নকল করে ছাপানো টিকিটিও বিক্রি  হচ্ছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের এক ভুক্তভুগি ভক্ত বলেন, ‘আমি অনলাইনে নিশ্চিত করা একটি টিকিট কিনেছিলাম বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড ম্যাচের। ওদের পুরো টাকাও দিয়ে দেই। এরপর যখন মাঠে যাই ওরা আমাকে কাগজটি দেয়। আমিও টিকিট কাউন্টার থেকে সংগ্রহ করি। সেথানে ওদেরও কিছু টিকিট ছিল। মাঠে  ঢোকার আগে ওরা এসে বলে টিকিটগুলো দাও আমরা এক সঙ্গে যাব। আমিও ভাবলাম এই দেশে কিভাবে জালিয়াতি করবে? দিয়ে দিলাম। কিন্তু ওরা কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে আমাকে টিকিট দিল। আমিও খুশি মনে প্রবেশ করলাম। পুলিশ আটকে দিলো, বললো টিকিট জাল। তার মানে মূল টিকিট নিয়ে ওরা কালার ফটোকপি করে নিয়ে এসেছে।’
ভারতের এক সমর্থক জানালেন আফগানিস্তান-ভারত ম্যাচে একই অভিজ্ঞতার কথা। তিনি বলেন, ‘আসলে আমরা ক্রিকেটকে ভালবাসি বলে টাকা খরচ করতে দ্বিধা করিনা। কিন্তু কেউ সেটার সুযোগ ইংল্যান্ডের মতো দেশে নেবে ভাবতেই পারিনি। আমি আমার পরিবার নিয়ে গিয়েছিলাম আফগানিস্তানের বিপক্ষে ভারতের ম্যাচ দেখতে। আমাকে একজন বলেছিলেন টিকিট তিনি নিয়ে রাখবেন। হাতে নিয়েই টাকা দিতে। আমি যাওয়ার পর পাঁচটা টিকিট আমার হাতে দিয়েছে। বললো যে তার ভাড়াও খরচ হয়েছে আমাকে টিকিট দিতে আসতে তাই আমি তাও দিয়ে দিলাম। আমাদের সঙ্গে খাওয়ালামও। কিন্তু হঠৎ করেই দেখি সে সঙ্গে নেই। যাই হোক আমরা মাঠে গেলাম। শুনলাম আমাদের একটি ছাড়া সব টিকিটই জাল। মনে হল একটি টিকিটকে ওরা পাঁচটি  কালার ফটোকপি করেছে। আর মাঠে কাছে এসে হাতে নেয়ায় প্রতিটি টিকিটে  যে একই নাম্বার তা চোখেই পড়েনি।’  
ইংল্যান্ডের কঠিন আইনের মাঝেও এশিয়া ও আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচের কয়েকটি দেশের প্রতারকরা মিলে ঠকাচ্ছে সাধারণ ক্রিকেট পাগল ভক্তদের। মূলত এতে ঠকানো হচ্ছে এশিয়ার ক্রিকেট ভক্তদেরই।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status