বাংলাদেশ কর্নার

বিশ্বকাপে সেরা তো হয়েই গেছেন!

স্পোর্টস রিপোর্টার

২৬ জুন ২০১৯, বুধবার, ৯:১৬ পূর্বাহ্ন

টুর্নামেন্টে সেরা হতে ব্যাটে-বলে দুই বিভাগেই সমান পারদর্শিতা চাই। চলতি বিশ্বকাপে সে দৌড়ে এক নম্বরে রয়েছেন বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান। গতকাল ব্যাট হাতে ওয়ার্নার ও ফিঞ্চ সাকিবকে পেছনে ফেললেও অলরাউন্ডিং  নৈপুণ্যে তার ধারেকাছে নেই কেউ বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের। বিশ্বকাপে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার দেয়া শুরু হয় ১৯৯২ সংস্করণ থেকে। সেবার ৪৫৬ রান করে সেরা খেলোয়াড় হয়েছিলেন নিউজিল্যান্ডের কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান মার্টিন ক্রো। সেমিফাইনাল থেকে তার দল বিদায় নিলেও টুর্নামেন্ট সেরা হয়েছিলেন তিনি। পরের বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হলো শ্রীলঙ্কা। দলটির ওপেনার সনাথ জয়াসুরিয়া ২২১ রান ও ৭ উইকেট নিয়ে হলেন টুর্নামেন্টসেরা। ১৯৯৯ বিশ্বকাপ তো ল্যান্স ক্লুজনারের। সেমিফাইনাল থেকে বাদ পড়া দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ২৮১ রানের পাশাপাশি ১৭ উইকেট নেন সাবেক এ প্রোটিয়া অলরাউন্ডার। ২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা শচীন টেন্ডুলকার ভারতের হয়ে ৬৭৩ রানের পাশাপাশি ২টি উইকেট নিয়ে হয়েছিলেন টুর্নামেন্ট-সেরা। এরপর ২০০৭ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে একাই ২৬ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্ট সেরা হন গ্লেন ম্যাকগ্রা। পরের বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা ভারতের যুবরাজ সিং ৩৬২ রান করার সঙ্গে তুলে নিয়েছিলেন ১৫ উইকেটও। টুর্নামেন্ট-সেরার পুরস্কারটা তার হাতেই উঠেছিল। আর সবশেষ বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় মিচেল স্টার্ক অস্ট্রেলিয়ার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে ২২ উইকেট নিয়ে দুর্দান্ত অবদান রেখেছিলেন। সাকিব কিন্তু ব্যাটে-বলে এসব পারফরমারদেরও উপরে। চলতি বিশ্বকাপের আগে এত দিন এ টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সেরা অলরাউন্ড নৈপুণ্য হিসেবে দেখা হতো দুজনের অবদানকে। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে ক্লুজনারের ২৮১ রানের পাশাপাশি ১৭ উইকেট এবং ২০১১ বিশ্বকাপে যুবরাজ সিংয়ের ৩৬২ রানের সঙ্গে ১৫ উইকেটশিকার। উইকেটসংখ্যায় সাকিব এখনো তাঁদের ধরতে পারেননি বটে কিন্তু রানসংখ্যায় দুজন অনেকটা পিছিয়ে। কিন্তু অলরাউন্ড  নৈপুণ্যের মাইলফলক হিসেবে ৪০০ রান ও ন্যূনতম ১০ উইকেট ধরলে সাকিবের ধারে-কাছে কেউ নেই। আর এবার বিশ্বকাপে তিনে ব্যাটিংয়ে নেমে সাকিব বলতে গেলে একাই টানছেন দলকে, বোলিংয়েও নতুন বলে বল করার চাপ নিচ্ছেন, রান আটকাচ্ছেন, উইকেট নিচ্ছেন, এবার বিশ্বকাপে আর কোনো ক্রিকেটার ব্যাটে-বলে দলের জন্য নিজেকে এতটা নিংড়ে দিতে পেরেছেন? বিশ্বকাপে তো নেই, এমনকি ওয়ানডে ইতিহাসেই নির্দিষ্ট কোনো সিরিজে ন্যুনতম ৪০০ রানের পাশাপাশি ১০ উইকেট নেয়ার নজির আছে শুধু বেনসন অ্যান্ড হেজেজ ওয়ার্ল্ড সিরিজ কাপে। ১৯৮০ সালে ১৪ ম্যাচে তা করে দেখিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি গ্রেগ চ্যাপেল।
এরপর দুবার মাইলফলকটি ছুঁয়েছেন ক্যারিবীয় কিংবদন্তি ভিভ রিচার্ডস; ১৯৮১ ও ১৯৮৫ সালে বেনসন অ্যান্ড হেজেজ ওয়ার্ল্ড সিরিজ কাপে। যথাক্রমে ১৪ ও ১৩ ম্যাচ খেলে মাইলফলকটির দেখা পেয়েছিলেন ভিভ রিচার্ডস। সাকিব এখানেও অনন্য। এ মাইলফলক ছুঁতে সাকিবের লাগলো মাত্র ৬ ম্যাচ। বাংলাদেশ এ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে এখনো দুটি ম্যাচ খেলবে। অর্থাৎ রান ও উইকেটসংখ্যা আরও বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন সাকিব।
ধরে নেওয়া যাক, বাংলাদেশ সেমিফাইনালে উঠতে পারল না কিন্তু বিশ্বকাপে অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সের মানদণ্ড সাকিব যে উচ্চতায় স্থাপন করলেন, তাতে টুর্নামেন্ট-সেরার পুরস্কারটাতো তারই প্রাপ্য!
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status