শেষের পাতা

আইওএম-এর নির্বাচন স্থগিত

পঞ্চম রাউন্ডে দুই ভোটে এগিয়ে বাংলাদেশ

কূটনৈতিক রিপোর্টার

২৩ জুন ২০১৯, রবিবার, ৯:১৩ পূর্বাহ্ন

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর উপ-মহাপরিচালক পদে ভোটাভুটি মঙ্গলবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে। শুক্রবার দিনভর জেনেভাস্থ আইওএম   হেড কোয়ার্টারে চরম উত্তেজনাপূর্ণ ওই নির্বাচনে পঞ্চম রাউন্ড পর্যন্ত ভোট গ্রহণ হয়। শেষ রাউন্ডে বাংলাদেশের প্রার্থী পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক পান ৭৫ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী সুদানের প্রার্থী পান ৭৩ ভোট। বাংলাদেশ দুই ভোটে এগিয়ে যায়। আইওএম নির্বাচনে সাধারণত দুই প্রার্থীর মধ্যে লড়াইয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে অন্য প্রার্থীরা নিজ থেকেই সরে দাঁড়ান।

এতে সংখ্যাগরিষ্ট প্রার্থীকে হ্যাঁ-না ভোটের সুযোগ দেয়া হয় তার বিজয়ের অন্যতম প্রধান শর্ত দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন আদায়ের জন্য। এটা অনেকটা রেওয়াজ। কিন্তু এবারের নির্বাচনে সুদান তথা আফ্রিকান ইউনিয়ন তা মানেনি। জটিলতা তৈরি হয় পঞ্চম রাউন্ড শেষ হওয়ার পরও হেরে যাওয়া সুদানের সরে না দাঁড়ানোতে। তখর সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত। সুদানের পরাজয় মেনে না নেয়া এবং গো ধরে থাকায় পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে আলোচনায় উদ্যোগী হন আইওএম-এর বর্তমান চেয়ারম্যান ইথিওপিয়ার প্রতিনিধি। রুলস অব বিজনেস এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

সদস্য রাষ্ট্রগুলোকেও এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু কোন ফল আসেনি। অর্থাৎ সুদান হার মারতে রাজী হয়নি। ফলে চেয়ার ভোটাভুটি মঙ্গলবার পর্যন্ত মুলতবি করেন। সুদান ছাড়া এ নির্বাচনে ছিল আরও ৩টি দেশ। দেশগুলো হচ্ছে- ফিলিপাইন, আফগানিস্তান এবং জর্ডান। বাংলাদেশ সময় শুক্রবার দুপুর ২টায় আর জেনেভা সময় সকালে নির্বাচন শুরু হয়। প্রথম রাউন্ডে বাংলাদেশের প্রার্থী  শহীদুল হক ৩৬ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হন। ওই রাউন্ডে সুদান পায় ৫৬ ভোট। আফগাস্তিান ২৪, জর্ডান ৭ আর ফিলিপাইন পায় ২৩ ভোট। দ্বিতীয় রাউন্ড পর্যন্ত এভাবেই চলে। ওই রাউন্ড শেষে জর্ডান তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেয়। তৃতীয় রাউন্ডে  সুদান পায় ৫৮ ভোট। বাংলাদেশ পায় ৪৪, আফগানিন্তান ২৭ আর ফিলিপাইন পায় ১৮ ভোট। ওই রাউন্ড শেষে ফিলিপাইন ভোটাভুটি থেকে সরে দাঁড়ায়। এবার ত্রিদেশীয় লড়াই শুরু হয় চতুর্থ রাউন্ডে।

এদিকে সব রাউন্ডেই বাংলাদেশের প্রার্থীর ভোট ক্রমেই বাড়ছিল। আর বরাবরের মত দ্বিতীয় অবস্থান ধরে রেখেছিলেন। চতুর্থ রাউন্ডে বাংলাদেশ পায় ৫০, সুদান ৬৬ এবং আফগানিস্তান ৩২ ভোট। ওই রাউন্ড শেষে আফগানিস্তান প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেয়। ওই অবস্থায় বাংলাদেশ ও সুদানের মধ্যে পঞ্চম রাউন্ডের ভোটাভুটি হয়। দ্বিপক্ষীয় ওই লড়াইয়ে বাংলাদেশ  ৭৫ ভোট পেয়ে প্রথম হয়। ধারণা করা হয়েছিল অতীতের ধারাবাহিকতায় ওই রাউন্ড শেষে সুদান সরে দাঁড়াবে। ফল মেনে নিয়ে তারা প্রার্থীতা প্রত্যাহার করবে এবং বাংলাদেশকে দুই তৃতীয়াংশ অর্থাৎ ৯৮ ভোট পাওয়ার পথ সুগম করে দেবে। কিন্তু না, তারা তা করেনি। বরং ভোটাভুটি চালিয়ে যাওযার দাবি জানায় জোটবদ্ধভাবে। চেয়ার বিষয়টি ফ্লোরের কাছে ছেড়ে দেন।

চলতে থাকে নেগোসিয়েশনও। কিন্তু কোনো ফল আসেনি। স্থানীয় সময় রাতে ভোটাভুটির স্থগিতাদেশ আসে। উল্লেখ্য, সংখ্যাগরিষ্টতা পাওয়া বাংলাদেশের ওই জয়ে সরকারের নীতি নির্ধারকরা খুশি। তারা বলছেন, নেগোসিয়েশনেও বাংলাদেশের জয় হবে। গোটা দুনিয়া বাংলাদেশের পাশে আছে। আচমকা বাংলাদেশের ভোট বাড়েনি, তা ক্রমান্নয়ে বেড়েছে। ফলে  নৈতিকভাবে বাংলাদেশের জয় হয়েছে। এখন আলোচনায় কী হয় সেটাই দেখার অপেক্ষা। অপেক্ষা জেনেভার আনুষ্ঠানিক ঘোষণার।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status