বাংলারজমিন
শতবর্ষী বাছিরনের কপালে বয়স্ক ভাতা জোটেনি
মো. নজরুল ইসলাম, মধুপুর (টাঙ্গাইল) থেকে
২০ জুন ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৯:৩৭ পূর্বাহ্ন
বয়স শত বছরের ঘর ছুঁই ছুঁই করছে। এ বয়সের ভারে ন্যূব্জ। চোখেও তেমন দেখেন না, কানেও ভালোভাবে শোনেন না। স্বামী জহুর আলী মারা গেছেন ৭-৮ বছর আগে। তবু বাছিরনের কপালে এখনও পর্যন্ত বয়স্ক ভাতার কার্ড জোটেনি। বাছিরনের বাড়ি টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার কুড়াগাছা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের কুড়াগাছা গ্রামে। এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাছিরনের কোনো ছেলে নেই। মেয়ে থাকলেও তাদের স্বামীর সংসারেই টানাটানি। ফলে বাছিরনের দেখাশোনা করার কেউ নেই বললেই চলে। এই অভাব-অনটনে কেউ কিছু দিলে বাছিরনের খাওয়া চলে। না জুটলে খালি পেটেই থাকতে হয় অনেক সময়। তার এই দুরবস্থা এতদিনেও কোনো জনপ্রতিনিধির নজরে আসেনি বিধায় সামাজিক নিরাপত্তার বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় রাষ্ট্রীয় সুবিধা বিধবা বা বয়স্ক ভাতা অথবা দরিদ্র হিসেবে কোনো ভাতা বা সুবিধা কখনো পাননি বাছিরন। এলাকার বাসিন্দারা বলেন, বাছিরনের ঘরের যে অবস্থা, তাতে বৃষ্টি এলে সবকিছু ভিজে যায়। ঝড় এলে ওপরওয়ালার নাম নেয়া ছাড়া কিছু করার থাকে না এই বয়োবৃদ্ধার। এ বিষয়ে কুড়াগাছা ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড ও তার পাশের ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) রোমান এবং আবদুল মালেকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানান, তারা বাছিরনের বিষয়টি অবগত। তাদের বক্তব্য, বাছিরনের কার্ড করে দিতে তার জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়েছিলেন নারী মেম্বার সুফিয়া। কিন্তু তিনি সেই পরিচয়পত্রটি হারিয়ে ফেলায় বাছিরনের জন্য কিছু করা যায়নি। এরমধ্যে আবার সুফিয়া মারা যাওয়ায় আরো বিপত্তি ঘটে। কুড়াগাছা ইউনিয়ন পরিষদে বাছিরনের বিষয়টি আলোচনা হয়েছে এবং চলতি জুনের মধ্যেই বা জুন শেষে বাছিরনের জন্য কার্ড করে দেয়া হবে বলে জানান রোমান ও মালেক। যোগাযোগ করলে মধুপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শামীমা নাসরিন সাংবাদিকদের জানান, যে কেউ অফিসে নিয়ে এলে বাছিরনের জন্য বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা করা হবে।