শেষের পাতা

দেশে ফিরতে রাজি ভূমধ্যসাগরে আটকা ৬৪ বাংলাদেশি

মিজানুর রহমান

১৮ জুন ২০১৯, মঙ্গলবার, ৯:৩৯ পূর্বাহ্ন

রাষ্ট্রদূতের দু’দিনের চেষ্টায় অবশেষে ভূমধ্যসাগরের তিউনিশিয়া উপকূলে ১৮ দিন ধরে আটকা ৬৪ বাংলাদেশি দেশে ফিরতে রাজি হয়েছেন। তাদের সম্মতি পাওয়ার বিষয়টি এরইমধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছেন ঘটনাস্থলে   থাকা রাষ্ট্রদূত শেখ সিকান্দার আলী। মন্ত্রণালয়ে পাঠানো রিপোর্টে ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করেছেন তিনি। ওই রিপোর্টের উদ্বৃতি দিয়ে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মানবজমিনকে জানিয়েছেন, আইওএম এর মাধ্যমে তাদের দেশে ফেরানো হবে। সেখানে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের বেশীর ভাগের বয়স ১৮ থেকে ২২ বছর। তারা বিভিন্ন দেশ ঘুরে দালালের মাধ্যমে লিবিয়া পৌঁছায়। শুরুতে তারা দেশে ফিরতে রাজি ছিল না, কারণ হিসাবে তারা জানায়, ওই ওই পথ পাড়ি দিতে প্রত্যেকের দালালকে ৮-১০ লাখ করে টাকা দিতে হয়েছে।

কিন্তু রাষ্ট্রদূত তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, তাদের দেশে ফেরা ছাড়া ভিন্ন চিন্তার কোন সুযোগ নেই। না ইউরোপ না তিউনিশিয়া কতৃপক্ষ তাদের গ্রহণ করবে। উপায়ান্তু না দেখেই তারা শেষ পর্যন্ত দেশে ফিরতে রাজি হয়েছে। রাষ্ট্রদূত তার রিপোর্টে মন্ত্রণালয়কে জানান, গত ২৮শে মে ৬৪ বাংলাদেশিসহ ৭৫ অভিবাসন প্রত্যাশী একটি ইঞ্জিন নৌকায় করে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার চেষ্টা করে। তিউনিশিয়া উপকূলে পৌঁছার পর তাদের বহনকারী কাঠের নৌকার ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। ওই অবস্থায় চার দিন তারা সাগরে ভাসতে থাকে। ৩১শে মে মিশরীয় একটি কার্গো জাহাজ দয়াপরবশ হয়ে তাদের উদ্ধার করে নিজেদের জাহাজে তুলে। স্থানীয় জার্জিস উপকূল থেকে ২৫ নটিক্যাল মাইল দূরে ওই জাহাজটিতে তারা ১৫ দিনের বেশি সময় ধরে অবস্থান করছেন। জাহাজটি ঘিরে রেখেছে তিউনিশিয়ান কোস্টগার্ড। জাহাজটিতে আটকা অভিবাসন প্রত্যাশীদের খাবার, পানীয় এবং চিকিৎসা সহায়তা দেয়ার চেষ্টা করে তিউনিশিয়ান রেড ক্রিসেন্ট। কিন্তু বেশিরভাগই এ সহায়তা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। তারা খাবার নয়, ইতালি পর্যন্ত যাওয়ার জন্য জ্বালানির দাবিতে গো ধরে থাকে।

এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমেও খবর হয়। ১৫ই মে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ওই জাহাজ পরিদর্শন করে অভিবাসন প্রত্যাশীদের সঙ্গে আলোচনা করেন। তাদের দেশে ফিরতে রাজি করানোর চেষ্টা করেন। ওই দিনেও বাংলাদেশি ছাড়া অন্য ১১জন নিজ নিজ দেশে ফিরতে রাজি হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, দেশে ফিরতে রাজী হওয়া বাংলাদেশীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের প্রাথমিক পরিচয় নিশ্চিত করেছে রাষ্ট্রদূত এবং তার সঙ্গে থাকা কর্মকর্তারা। ঢাকায় এ নিয়ে তিনি যে রিপোর্ট পাঠিয়েছেন তার সঙ্গে নাগরিকত্ব যাচাই-বাছাই’র তাদের নাম-ঠিকানার একটি তালিকাও পাঠিয়েছেন। ওই তালিকা মতে, ৬৪ বাংলাদেশীর মধ্যে মাদারীপুর জেলার ২৬, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ১৫, সিলেটের ৮, শরীয়তপুরের ৩, মৌলভীবাজারের ৩, নোয়াখালীর ২ জন এবং ঢাকা, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, নরসিংদী, চাঁদপুর, ফরিদপুর ও সুনামগঞ্জের একজন করে আছেন। তাদের নাগরিকত্বের বিষয়ে ঢাকার গ্রিণ সিগন্যাল পাওয়া মাত্রই ত্রিপলীস্থ বাংলাদেশ মিশন যত দ্রুত তাদের ট্রাভেল পারমিট ইস্যু করবে বলে জানায় সেগুনবাগিচা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status