এক্সক্লুসিভ

গ্রাহক এসোসিয়েশন

মোবাইল সেবায় শুল্ক বৃদ্ধি আদালতের রায়ের পরিপন্থি

স্টাফ রিপোর্টার

১৮ জুন ২০১৯, মঙ্গলবার, ৯:০৯ পূর্বাহ্ন

মোবাইল সেবায় নতুন করে কর আরোপ আদালতের রায়ের পরিপন্থি বলে জানিয়েছে মোবাইল ফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন। নতুন করে কর ও শুল্কের প্রস্তাব করায় হতাশা প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। একই সঙ্গে বাজেটে প্রস্তাবিত কর প্রত্যাহার এবং এই খাতের জন্য সুনির্দিষ্ট ও যুক্তিযুক্ত কর নীতিমালা চালু করার অনুরোধ জানিয়েছে। তারা এই খাতে শুল্ক বাড়ানোকে ডিজিটাল সেবার অন্তরায় বলে মনে করছেন সংগঠনের নেতারা। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিগত বছর বাজেটে বৃদ্ধির পরে আগস্ট মাসে পুনরায় ২৫ পয়সা সর্বনিম্ন কলরেটের স্থলে ৪৫ পয়সা সর্বনিম্ন কলরেট নির্ধারণ করা হয়। সংগঠনের পক্ষ থেকে এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করলে মহামান্য হাইকোর্ট কলরেট বৃদ্ধির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। এমতাবস্থায় হাইকোর্টের রায় মেনে নিয়ে নতুন করে করারোপ থেকে বিরত থাকা উচিত ছিল। যদিও প্রভিশনাল কালেকশন অব ট্যাক্সেস অ্যাক্ট ১৯৩১ এর ধারা ৩ অনুযায়ী আমদানি শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর সংক্রান্ত কিছু পরিবর্তন বাজেট ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর হয়ে যায়। কিন্তু মহামান্য হাইকোর্টের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে গ্রাহক সমাজ এই করারোপের কর দিতে বাধ্য নই। আমরা মহামান্য হাইকোর্টের পরবর্তী নির্দেশনার অপেক্ষায় থাকবো। তিনি আরো বলেন, বাজেটে মোবাইল টেলিযোগাযোগ শিল্প সংশ্লিষ্ট খাতে যেসব কর আরোপ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। এমন শুল্কারোপ করলে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন কঠিন হবে।

এই খাতে বিনিয়োগকরীরা উৎসাহ হারাবে। সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি করা হয় কোন পণ্য বা সেবাকে নিরুৎসাহিত করার জন্য। অথচ এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কল্যাণে আজকে দেশে পাঠাও, উবারসহ ইন্টারনেট ব্যবসায় হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। দুঃখের বিষয় বর্তমান সরকার প্রযুক্তির প্রসার করার কথা বললেও এ খাতে সম্পূরক শুল্ক বসিয়ে টেলিকম নীতিমালা-২০১৮ পরিপন্থি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সরকারের প্রতি জনগণের উপর এই অন্যায় করের বোঝা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান তিনি।

মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমানে দেশে ৫-জি চালুর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। একদিকে সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে চায়। অন্যদিকে টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে ব্যয়ও বৃদ্ধি করতে চায়। এ ধরনের দ্বিমুখী নীতির কারণ কি আমরা সরকারের কাছে জানতে চাই? গত পাঁচ বছরে প্রতি বাজেটেই টেলিযোগাযোগ সেবার ধারাবাহিকভাবে বেড়েই চলেছে। হয় সেটা কথা বলায়, ইন্টারনেট ব্যবহারে কিংবা ডিভাইস ক্রয়ে হোক।

বর্তমানে দেশের সকল সেবা সংস্থার মধ্যে রাজস্ব আদায়ে টেলিযোগাযোগ খাত অগ্রগামী। জিডিপি’র প্রায় ৬.৫ ভাগ টেলিকম খাত থেকে আসে। বিটিআরসি শুধু রাজস্ব ভাগাভাগির মাধ্যমে ১০ হাজার কোটি টাকা আদায় করে। তাছাড়া লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও তরঙ্গ বিক্রি বাবদ হাজার হাজার কোটি টাকা আদায় হয়। বর্তমানে এই খাতে গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ১৫ কোটি ৬৫ লাখ।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে ফোন সিম কার্ডের মাধ্যমে প্রদান করা সেবার ওপর সম্পূরক শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া সিমের ওপর কর ১০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ২০০ টাকা করা হয়েছে। সম্পূরক শুল্ক ও সিম করের এই বৃদ্ধি দেশে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়াকে বাধাগ্রস্ত করবে। তাই এটা প্রত্যাহারের দাবি জানাই।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, সিপিবি’র সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স, মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক, কার্যকরী সদস্য সাব্বির আহমেদ প্রমুখ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status