বাংলারজমিন
মুক্তি পেলো ভারতে পাচার হওয়া ৬ কিশোরী ও নারী
পঞ্চগড় প্রতিনিধি
১৭ জুন ২০১৯, সোমবার, ৮:৫৫ পূর্বাহ্ন
দীর্ঘদিনের যন্ত্রণাদায়ক ও অনিশ্চিত জীবন থেকে মুক্তি পেয়েছে ভারতে পাচার হওয়া বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার ৬ জন কিশোরী ও নারী। গতকাল দুপুরে বিজিবি-বিএসএফের সহযোগিতায় ভারতের ইমপালস এনজিও নেটওয়ার্ক পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের জিরো পয়েন্টে আনুষ্ঠানিকতা শেষে ব্র্যাক কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের হস্তান্তর করে। ব্র্যাকের মানবাধিকার ও আইন সহায়তা কর্মসূচি প্রধান শাহারিয়ার সাদাত ও পরিচালক ব্যারিস্টার জেনেফা জব্বার বলেন, যশোর, খুলনা খাগড়াছড়ি, পটুয়াখালী, নড়াইল ও বাগেরহাট জেলার দরিদ্র পরিবারের ওই ৬ কিশোরী ও নারীর মধ্যে কেউ এক বছর, কেউ ৪ বছর ও কেউ ৭ বছর আগে পাচার হয়েছিল। এর মধ্যে একজন গার্মেন্ট থেকে নিখোঁজ ও একজন অপহরণ হয়। বাকিরা বিভিন্ন প্রলোভনের শিকার। পরিবারের লোকজন তাদের বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে পায়নি। এক বছর আগে ভারতের চেন্নাই থেকে ওই ৬ কিশোরী ও নারীকে উদ্ধার করে পুলিশ চেন্নাইয়ের একটি সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে হস্তান্তর করে। পরে মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ের ইমপালস এনজিও নেটওয়ার্ক কর্তৃপক্ষ ব্র্যাক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ও সহযোগিতায় তাদের নাম-পরিচয় ও ঠিকানা নিশ্চিত করা হয়। এক বছর চিঠি চালাচালি ও খোঁজখবর নেয়ার পর গতকাল তাদের হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। দিনাজপুর ব্র্যাক কার্যালয়ে তাদের মানসিক অবস্থা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বুঝার পর তাদের অভিভাকদের দেয়া হবে। ওদিকে হস্তান্তর কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর তাদের অ্যাম্বুলেন্সে করে আনার সময় কারও কারও বাবা মা আবেগে আপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। কিশোরী ও নারীদের ভারতের ফুলবাড়ি হয়ে বাংলাবান্ধা সীমান্তের জিরো পয়েন্টে হস্তান্তরের সময় বিজিবি ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরে বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশনের প্রয়োজনীয় কাজ শেষে পুলিশ তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর থানার কার্যক্রম শেষে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানা গেছে। নড়াইলের কিশোরীর মা জানান, কতদিন আমার মেয়েকে দেখিনি। ৭ বছর পর মেয়েকে ফেরত পেয়ে আমি যে কত খুশি তা বুঝাতে পারব না। আমার মেয়েকে ১২ বছর বয়সে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে পাচার করা হয়েছিল। আমি চাই পাচার চক্রের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।