বাংলারজমিন

শেরপুরে বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি

১৩ জুন ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৯:১৬ পূর্বাহ্ন

ঈদ শেষে ঢাকায় কর্মস্থলগামী নিম্ন আয়ের মানুষের কাছ থেকে গত ৫ দিনে কৌশলে প্রায় কোটি টাকা অতিরিক্ত বাস-কোচ ভাড়ার নামে চাঁদা আদায় করার অভিযোগ উঠেছে। চাঁদা আদায়ের বিষয়টি থানা পুলিশ ও শেরপুরের কোনো প্রশাসনই জানে না। জানা গেছে, গত ৬ই জুন পবিত্র ঈদুল ফিতরের পরদিন থেকে শেরপুর শহরের প্রধান বাসস্ট্যান্ড, খেজুরতলা ও ধুনট মোড়ে নির্ধারিত বাস-কোচ, মিনিবাস, সিএনজিতে যাত্রীদের কাছ  থেকে অলিখিত ভাবে দ্বিগুণেরও বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। শেরপুরের নামিদামি কোচ কাউন্টারগুলোতে এবং অসংখ্য ভ্রাম্যমাণ কলার বয়রা প্রকাশ্যে মহাসড়কের উপরে ও কাউন্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই কোটি টাকার অবৈধ চাঁদা আদায়ের মিশন চালাচ্ছেন। ঢাকাগামী গাড়িচালকদের বক্তব্য, ঈদ উপলক্ষে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ সামলাতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ১০ হাজার মানুষ ঢাকায় যাচ্ছে। শেরপুর থেকে ঢাকার গাজীপুর, চৌরাস্তা, আব্দুল্ল্যাপুর, মিরপুর, গাবতলী যেতে মুরগির খাঁচার মতো লক্কড়ঝক্কর চলাচল অনুপযোগী মিনিবাসে জনপ্রতি ন্যূনতম ভাড়া ৩০০ টাকার স্থলে ৭০০ টাকা। নরমাল এসি ১২০০ টাকা, নাবিল, হানিফ, শ্যামলী ও হুন্দাই এসিতে সিট ভাড়া ১৫০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। ঢাকার গার্মেন্ট কর্মী শেফালী খাতুন, রেজিয়া বিবি, আরজিনা খাতুন, জরিনা বিবি, আব্দুর রহমান, আলেক মিয়া, জামাল উদ্দিন, শিউলী পারভীন, শহিদুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম সহ অসংখ্য অসহায় যাত্রীরা জানান, দেশে কোনো বিচার ব্যবস্থা নাই। আইন নাই।
পেটের ক্ষুধায় আমাদেরকে যেকোনো উপায়ে ঢাকায় যেতে হবে। স্ট্যান্ডে থাকা থানা পুলিশের গাড়িতে অভিযোগ করে কোনো লাভ হয়নি। বরং ৬ ঘণ্টা রাস্তায় বসিয়ে রেখে বাসে উঠতে দিয়েছে শেরপুরের কলার বয়রা। এর পরেও ওই মহিলার ভাড়া নিয়েছে মাত্র সাড়ে ৫০০ টাকা।  
অপরদিকে শহরের ধুনট মোড়ে একই অবস্থা বিরাজ করছে। বাস ভাড়ার পাশাপাশি ২৫ টাকার সিএনজি ভাড়া ১০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। এসব অভিযোগ নিয়ে শেরপুর থানা পুলিশ সহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্তা ব্যক্তিদের জানিয়ে কোনো সুফল হয়নি। পুলিশের লোকজন সাদা বালুর ভেতরে চোখ-মুখ গুঁজে থাকায় কোনো অনিয়ম দেখতে পায় না তারা। ফলে অভিযোগকারীদের মতামত প্রায় কোটি টাকা অতিরিক্ত ভাড়ার নামে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। সে অনুযায়ী শেরপুর শহরের ৩টি স্ট্যান্ডে চলমান অনিয়ম ও চাঁদা আদায়ের ঘটনা তাদের চোখে পড়ছে না। শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি হুমায়ুন কবীর জানান, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি আমার জানা নেই। এখনই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। শহরের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর শাহআলম জানান, আমি নিজে অনুরোধ করেও মাত্র ৩০০ টাকায় গাজীপুর যাবে- এমন একজন অসহায় মহিলাকে বাসে দিতে পারি নাই। হাইওয়ে ইন্সপেক্টর জাহিদ জানান, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় হলেও আমার করার কিছু নেই। এটা থানার বিষয়। শেরপুর খেজুরতলা বাস-কোচ কাউন্টার কমিটির নেতা ও জেলা মোটর মালিক গ্রুপের শেরপুর প্রতিনিধি সেলিম রেজা জানান, শেরপুরে কোনো গাড়ির সিট বরাদ্দ নাই। তাই অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে হচ্ছে। তবে তার পরিচালিত একতা কাউন্টার থেকে রফিক নামের এক যাত্রী তার আত্মীয়ের জন্য ২টি টিকিট কিনেছেন ৮০০ টাকার স্থলে মাত্র ১৬০০ টাকা দিয়ে। তবে এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত অতিরিক্ত ভাড়ার নামে চাঁদা আদায়ের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি পুলিশ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status