এক্সক্লুসিভ

ছুটির দিনে জমজমাট ঈদের বাজার

হাফিজ মুহাম্মদ

২৫ মে ২০১৯, শনিবার, ৯:২১ পূর্বাহ্ন

ঈদের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই ভিড় বাড়ছে রাজধানীর বিপণি-বিতানগুলোয়। কেনাকাটায় ব্যস্ত নগরবাসী। কেনাকাটা করতে পরিবার নিয়েই এসেছেন অনেকে। রোজার শুরুতে মানুষের আনাগোনা থাকলেও বিক্রি ছিল কম। কিন্তু গতকাল থেকে কেনাবেঁচা শুরু হয়েছে পুরোদমে। শুক্রবার ছুটির দিনে বিপণি-বিতানে ছিল উপচে পড়া ভিড়। ফুটপাথের দোকানেও ছিল রমরমা কেনাবেচা। বিক্রেতাদের হাঁকডাকে মুখরিত ছিল মার্কেট এবং ফুটপাথ। ছুটির দিন হওয়ায় চাকরিজীবীদের ভিড় ছিল বেশি। নিউমার্কেট, চন্দ্রিমা, গাউছিয়া, চাঁদনী চক, আজিজ সুপার মার্কেটে সকাল থেকেই মানুষের আনাগোনা শুরু হয়। দুপুর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রচণ্ড ভিড়। একই অবস্থা দেখা যায় রাজধানীর অভিজাত বিপণি-বিতান বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে। সকাল থেকেই লোকে লোকারণ্য হতে থাকে। জুমার নামাজের পরে এ শপিংমলটিতে প্রবেশ করতে দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। ব্র্যান্ডের দোকানগুলোয় তুলনামূলক ভিড় ছিল বেশি। ঈদের কেনাকাটায় পোশাক, গহণার সঙ্গে স্মার্টফোনও যোগ হওয়ায় ভিড় বেড়েছে প্রতিটি দোকানে। বসুন্ধরা ছাড়াও রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্ক, রাফা প্লাজা, সিটি প্লাজা, সেজান পয়েন্টও ছিল ক্রেতায় মুখরিত। কেউ তার পছন্দের পণ্যটি দেখছেন। আবার কেউ কোনাকাটা সেরে বাসায় ফিরছেন। নিউমার্কেট শপিংমলে ঈদ কেনাকাট করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী নাঈম হাসানের পরিবার। নাঈম বলেন, সপ্তাহের অন্যদিন অফিস থাকায় এখন পর্যন্ত কারো জন্যই কিছু কিনতে পারিনি। তাই ছেলে-মেয়ে এবং স্ত্রীকে নিয়ে তাদের ঈদের কেনাকাটা করতে হাজির হয়েছি। মেয়ে ও ছেলের জন্য কেনাকাটা শেষ হলেও স্ত্রীর জন্য কিছু কিনতে পারিনি। নাঈম হাসানের ছেলে ৮ বছরের মুর্শেদ জানায়, বাবা আমার সব কিনে দিয়েছে। মুর্শেদ ঈদের জন্য কি কি কিনেছো জানতে চাইলে বলে, পাঞ্জাবি, প্যান্ট, খেলনা। চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটে কথা হয় কয়েক বন্ধুর সঙ্গে। তাদের একজন বশির। বশির বলেন, তার এখনো বেতন হয়নি। আগের মাসের জমানো টাকা দিয়ে পরিবারের জন্য কেনাকাটা করতে এসেছেন বন্ধুদের নিয়ে। বন্ধুরা সবাই গামেন্টকর্মী। মা-বাবা ও ভাই বোনকে ঈদে খুশি করতে আগেই কেনাকাটা করে পাঠিয়ে দিতে চাচ্ছেন তিনি। শুক্রবার ছুটি থাকায় তাই আশুলিয়া থেকেই কেনাকাটা করতে এসেছেন। এদিকে বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন মেহজাবিন মাহবুবা। তিনি তার স্বামী ও সন্তানদের জন্য কেনাকাটা করছেন। দু’জনই চাকরিজীবী হওয়ায় শুক্রবার ছাড়া তাদের ফুরসত নেই। এ কারণে শুক্রবারকেই তারা ঈদ শপিংয়ের জন্য বেছে নিয়েছেন। বসুন্ধরা থেকে প্রয়োজনীয় সবই কিনেছেন। বাকিটা সামনের ছুটির দিনে কিনবেন বলে জানান। কি কি কিনেছেন জানতে চাইলে মেহজাবিন বলেন, মেয়ের জন্য থ্রি-পিছ, জিন্সের প্যান্ট আর তার জন্য লং কামিজ, গহনা এবং তার স্বামীর জন্য পাঞ্জাবী। রাজধানীর মনিপুরিপাড়া থেকে বান্ধবীকে নিয়ে এসেছেন মাবরুর হাসান। তারা দু’জনেই মোবাইল ফোন পছন্দ করছেন। ঈদে বান্ধবীকে মোবাইল ফোন কিনে দিবেন বলে স্যামস্যাং গ্যালারিতে বাছাই করছেন।
গাউছিয়া মার্কেটে কথা হয় কাপড়ের দোকানী মাজহারের সঙ্গে। এ বছর কোন পোশাক গুলোর চাহিদা বেশি জানতে চাইলে তিনি বলেন, তরুণীদের কাছে এবার পছন্দের শীর্ষে রয়েছে সামু সিল্ক, হাফ সিল্ক থ্রি-পিস। পাশাপাশি জামার উপরে ডিজাইনের পোশাকের জনপ্রিয়তা বেশি এ বছর। এরপরেই শাড়ি ও থ্রি-পিস বেশি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও গয়না ও প্রসাধনী কিনতে ছুটতে দেখা গেছে ক্রেতাদের। এদিকে বাচ্চাদের পোশাকের দোকানে তুলনামূলক ভিড় বেশি। নিউমার্কেটের বাচ্চাদের পোশাক বিক্রেতা মামুন বলেন, আমার বিক্রি বেশ ভালো। এখন কথা বলার সময় নেই। মানুষের চাপ বেশি।
বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের আড়ং, দর্জিবাড়ি, ফ্রিল্যান্ড, ইনফিনিটি বিতানগুলোয় তিল ধারনের ঠাই নেই। মানুষ পোশাক পছন্দ করতে যেয়ে হিমশিম খাচ্ছে। ক্যাশ কাউন্টারগুলোয়ও দীর্ঘ লাইন পড়ে রয়েছে। যে পোশাক ধরছে সবকিছু ঠিক থাকলে সেটাই নিয়ে নিচ্ছেন। পিছিয়ে নেই জুতার দোকানগুলো। তাদের বেচাকেনা চলছে রমরমা। বাটা, এপেক্স, ক্রিসেন্টসহ ব্রান্ডের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। যে যার পছন্দের জুতা নিচ্ছেন। এছাড়া বাচ্চাদের খেলনার দোকানগুলোয় ছিল ভিড়। ঈদের দিন যতই কাছে আসছে ততই বাড়ছে ভিড়। রাজধানী জুড়ে কেনাকাটার সঙ্গে শুরু হয়েছে উৎসবের। চাঁদ রাতের আগ পর্যন্ত এ ভিড় থাকবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status