বাংলারজমিন
কালবৈশাখী ঝড়ে লণ্ডভণ্ড
বাগান চাঁপাই নবাবগঞ্জে আম দেড় টাকা কেজি
চাঁপাই নবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
২৪ মে ২০১৯, শুক্রবার, ৮:১৬ পূর্বাহ্ন
চাঁপাই নবাবগঞ্জের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে শিবগঞ্জের অধিকাংশের আম বাগান। এতে মাথায় হাত উঠেছে এখানকার আমচাষিদের। বুধবার সন্ধ্যায় কালবৈশাখী আঘাত হানে। প্রায় ১০ মিনিট চলা ঝড়ে জেলার সদর উপজেলা, গোমস্তাপুর, ভোলাহাট, নাচোল ও শিবগঞ্জে আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়। অধিকাংশ বাগানের আম পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী শিবগঞ্জ উপজেলার প্রায় ১১ হাজার হেক্টর বাগানের আম নষ্ট হয়ে গেছে। সে ঝড়ে পড়া আম বিক্রি হচ্ছে মাত্র দেড় টাকা কেজি দরে। শিবগঞ্জ সেলিমাবাদ এলাকার ৬ বছরের শিশু নিয়ামত জানান, বুধবার রাতের ঝড়ে সে ৩ মণ আম কুড়িয়েছে। দেড় টাকা কেজি করে পাইলিং মোড়ের এক আম ব্যবসায়ীর কাছে সকালে বিক্রি করে। একই কথা জানান, বাঁশ মহল গ্রামের নয়ন ও কালুপুর গ্রামের সাদিকুল ইসলাম। তারাও ঝড়ের মধ্যে বাগানে গিয়ে প্রায় ১০ মণ আম কুড়িয়ে বিক্রি করতে এসেছে। প্রতি কেজি আম মাত্র দেড় টাকায় বিক্রি করেছে। তাদের দাবি উপজেলার অনেক মানুষ ঝড়ে পড়া আম বস্তায় ভরে কুড়িয়েছে। কেউ আমের আচার বানাচ্ছে। আবার কেউ আমসত্ত্বসহ বিভিন্ন খাবার তৈরি করছে। চামার হাট এলাকার আম বাগান মালিক তোহরুল ইসলাম জানান, বুধবার সন্ধ্যার ঝড়ে তার বাগানের আশ্বিনা ফজলিসহ বিভিন্ন জাতের প্রায় সবগুলো আম পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। একই কথা জানান, মোবারকপুর ও শাহবাজপুর এলাকার আমচাষিরা। ধোবড়া এলাকার আমচাষি এখলাসুর রহমান বলেন, গত কয়েক বছরের প্রচুর লোকসানের পর এবার স্বপ্ন ছিল আমের ভালো দাম পাবো। তিনি কাঁদতে কাঁদতে জানান, কালবৈশাখী ঝড়ে তার বাগানের সব আম পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। বাগানটিতে প্রায় ২২-২৫ লাখ টাকার আম ছিল। এখন ২ লাখ টাকা দাম পাবেন কিনা সন্দেহ রয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন এ উপজেলার অনেক আমচাষি। গতকাল ভোরে কথা হয় পাইলিং মোড়ের আম ক্রেতা নাইমুল ও রফিকের সঙ্গে। তারা জানান, ঝড়ে পড়া আম প্রায় প্রতি বাড়ির লোকজন বিক্রি করতে আসছেন। ভোর রাত হতে দেড় টাকা কেজি দরে তারা প্রায় ৫শ’ মণ আম কিনেছেন। তাদের কেনা আমগুলো পাঠানো হবে, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশালসহ দেশের বিভিন্নস্থানে। একই কথা জানান, শফিকুল ইসলাম নামে অপর আম ক্রেতা। তিনি বলেন, সকাল হতে প্রায় ১শ’ মণ কিনেছেন দেড় টাকা কেজি দরে। তার আমগুলো পাঠানো হবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে। শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস এম আমিনুজ্জামান জানান, বুধবারের কালবৈশাখী ঝড়ে এ উপজেলাতে আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শুধু শিবগঞ্জে ১৭ হাজার ৯শ’ হেক্টর জমির আম বাগানের মধ্যে প্রায় ৮ হাজার ৭৪০ হেক্টর বিঘার বাগানের আম ঝড়ে পড়েছে। তার দাবি-কালবৈশাখী ঝড়ে প্রায় কয়েক কোটি টাকার আম নষ্ট হয়ে গেছে।