বাংলারজমিন

মাগুরায় ধানের বাজার সিন্ডিকেটের দখলে

মাগুরা প্রতিনিধি

২৪ মে ২০১৯, শুক্রবার, ৮:১৬ পূর্বাহ্ন

কেউ ধান কাটছেন, কেউ বা আটি বাঁধছেন। আবার কেউ জমি থেকে সেই ধান বাড়িতে আনছেন। আর বাড়িতে চলছে কৃষাণির ব্যস্ততা। মাড়াইয়ে ব্যস্ত মাগুরা সদরের বিভিন্ন গ্রামের কৃষাণ-কৃষাণিরা। শত পরিশ্রমের পরও কৃষকের মনে হাসি নেই। বাজারে ধানের যে দাম তাতে খরচ পোষাতে পারছে না কৃষক। সদর উপজেলার জাগলা গ্রামের দরিদ্র কৃষক রমজান মোল্যা জানান, এবার পাঁচ একর জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছেন। এ মৌসুমে তার ৩০-৪০ হাজার টাকা লোকসানের আশঙ্কা করছেন। উৎপাদনের শুরু থেকে ধান ওঠা পর্যন্ত ১ একর জমিতে তার খরচ ৩০-৪০ হাজার টাকা। প্রতি একরে ধান হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ মণ। ধানের যে দাম, তাতে এই টাকা উঠিয়ে লাভের মুখ দেখা কঠিন। শালিখার দীর্ঘল গ্রামের ধান চাষি গোলাম বলেন, ৮ বিঘা জমিতে ধান করেছিলেন। যে ধান হয়েছে খরচ মিটিয়ে সংসার চালানো কঠিন। সার-বীজ, শ্রমিকের মজুরিতে সব টাকা শেষ। প্রতিদিন ধান কাটতে শ্রমিক প্রতি ৬০০-৭০০ টাকা খরচ হয়। তাই ধান চাষের বিকল্প চাষ করবো আগামীদিন। মাগুরার নতুন বাজার হাটে ধান মণপ্রতি বাসমতি ৮৩০-৮৪০, মিনিকেট ৭৭০-৭৮০, আটাশ ৬৯০-৭০০ ও মোটা ধান ৬২০-৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলায় ৪ উপজেলায় ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল হেক্টর প্রতি ৬ টন ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক জাহিদুল আমিন বলেন, জেলার সব উপজেলায় প্রায় সব ধান শেষ। এখন পর্যন্ত দেখা গেছে, প্রতি হেক্টরে গড়ে ৬ দশমিক ১ টন ধান উৎপাদিত হয়েছে। সে হিসেবে জেলায় এবার প্রায় ২ লাখ ৪৪ হাজার টন ধান উৎপাদিত হবে বলে আশা রাখি।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মঈন-উল-ইসলাম জানান, সরকার নির্ধারিত ১ হাজার ৪০ টাকা মণ হিসেবে এবার ১ হাজার ২৪৫ টন ধান সংগ্রহ করবেন তারা। বিভিন্ন ইউনিয়নে কৃষকদের তালিকা করে এসব ধান তারা সংগ্রহ করবেন।
অপরদিকে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে মাগুরার শালিখায় ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। তবে এবছর ধানের বাম্পার ফলন হলেও বাজারে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। সরকার চাল ও ধান সংগ্রহ শুরু করলেও ব্যবসায়ী ও মিল মালিকরা সিন্ডিকেট করে কৃষকদের সস্তায় ধান বেচতে বাধ্য করছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কৃষক জানিয়েছেন। বোরো ধান ক্ষেত থেকে ওঠার পর পর সরকার ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু না করায় ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটরা এ সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন বলে অভিযোগ। ফলে ঠকছেন এ অঞ্চলের প্রান্তিক কৃষকরা। চলতি বছরের ২রা মে থেকে ৩১শে আগস্ট পর্যন্ত সরকারিভাবে ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযান চলছে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সকল জেলা-উপজেলাতে ধান ও চাল সংগ্রহ করা হচ্ছে। কিন্তু শালিখা উপজেলাতে ধান ও চাল সংগ্রহের উদ্বোধন না হওয়ায় এখন পর্যন্ত সংগ্রহ অভিযান থেমে রয়েছে বলে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় থেকে জানা যায়।

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status