শেষের পাতা

অনির্বাচিত সরকারকে গ্রহণ করার মূল্য দিচ্ছে জনগণ

স্টাফ রিপোর্টার

২৩ মে ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ১০:২৩ পূর্বাহ্ন

গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, শুধু ধানের ন্যায্য মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রেই নয় সরকার সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ। তিনি বলেছেন, অনির্বাচিত সরকারকে বহন করার কারণে মানুষকে মূল্য দিতে হচ্ছে। তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে গণফোরাম আয়োজিত  সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ড. কামাল বলেন, কৃষক ধান বুনে রেকর্ড ভঙ্গ করে উৎপাদন করেছেন। তার মূল্য পাওয়া তো দূরের কথা, তা না কেনায় বাধ্য হচ্ছেন পোড়াতে। সরকারের কৃষিনীতি না থাকায় এ সংকটগুলো সৃষ্টি হচ্ছে। শুধু কৃষকদের ধান উৎপাদনের ক্ষেত্রে না, সব ক্ষেত্রেই সরকার ব্যর্থ। তিনি বলেন, মানুষের বোঝা দরকার যে একটি অনির্বাচিত সরকারকে এভাবে বহন করায় সব মানুষকে মূল্য দিতে হচ্ছে। দ্রুত নির্বাচন করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সংবিধান লঙ্ঘন করে সরকার চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। দেশের মানুষের ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহিমূলক সরকার না থাকায় মানুষকে মূল্য দিতে হচ্ছে।

ড. কামাল বলেন, সরকার কৃষকের জন্য যা ঘোষণা করেছে তা তারা মানছে না। তারা ধান উৎপাদনের ব্যাপারে বক্তব্য রাখে। কিন্তু ধান উৎপাদন হওয়ার পর কৃষকের উৎপাদন খরচের ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হচ্ছে। এই ব্যর্থতা শুধু কৃষকদের ধান উৎপাদনের ক্ষেত্রে নয়, সকল  ক্ষেত্রেই এই দায়িত্বহীনতা প্রকাশ করছে।
সংবাদ স?ম্মেল?নে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সরকার ১০ লাখ টন চাল, দেড় লাখ টন আতপ চাল ও দেড় লাখ টন ধান ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার প্রতি কেজি চাল ৩৬ টাকা। ধান ২৬ টাকা। সাধারণত বোরো চাষের জমি লিজ, জমি চাষ, মই দেয়া ও জমির চারপাশ কাটানো, ডিএপি ও পটাশ, ইউরিয়া সার ব্যবহার, নিড়ানো, পানি খরচ, কীটনাশক খরচ, জমি থেকে ধান উত্তোলন ও মাড়াই ইত্যাদিতে গড়ে ১ বিঘায় খরচ হয় ১৬ হাজার ৩৬৫ টাকা। প্রতি মণ ধান উৎপাদন খরচ ৭৪৩ টাকা। কিন্তু তা বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। লোকসান কমপক্ষে ১৪৩ টাকা। গণফোরামের অভিযোগ, সরকার এ বছরের মে মাস থেকে ১৩ লাখ টন ধান চাল সংগ্রহের লক্ষ্য ঠিক করেছে। কিন্তু মে মাসের অর্ধেক পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত ১ হাজার ২৬৯ টন চাল সংগ্রহ করেছে। কুষ্টিয়া, দিনাজপুর, রংপুর, জয়পুরহাট, নওগাঁসহ বেশিরভাগ বড় বড় মোকামে ধান চাল কেনা বন্ধ রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিষয়ক সংস্থা ইউএসডি চলতি মাসের পরিস্থিতির ওপর যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, সে অনুযায়ী গত এক বছরে বাংলাদেশের চালের উৎপাদন বেড়েছে ৭.২ শতাংশ আর এ বছর উৎপাদন হয় ৩ কোটি ৫৩ লাখ টন চাল। ধানের বাম্পার ফলন হবে সরকার তা জানতো, সেজন্য গত বছরের চেয়ে চলতি বছরে ১ মাস আগে বোরো সংগ্রহ শুরু হবে বলে আগেই খাদ্য মন্ত্রী জানিয়েছেন। সে কারণে এবার ২৫শে এপ্রিল থেকেই সরকারি নির্দেশ জারি করা হয়। মে মাস থেকে ধান ক্রয় করা হবে। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি কিছুই। সরকার ব্যর্থ হয়েছে। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সরকার ফড়িয়া-মিলমালিক সিন্ডিকেটের সঙ্গে আঁতাত ও  লেনদেন করছে। ধান-চাল ক্রয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতি রয়েছে। এ অবস্থা উত্তরণে ক্রয়কেন্দ্র খুলে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা, শস্য বহুমুখী ও দেশে কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরিতে সহায়তা, শস্যবিমা চালু এবং খাদ্যগুদাম না থাকলে কৃষকের গোলাতেই ধান রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে গণফোরামের পক্ষ থেকে। দলের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন অধ্যাপক আবু সাইয়িদ। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গণ?ফোরা?মের সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া, নির্বাহী সভাপ?তি এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status